পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720127618](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : ১১ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা। সান্তাহার রেল স্টেশনে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাইকে ঘোষণা ‘ আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুনরুপে চলাচল করবে রংপুর এক্সপ্রেস।’ এই ঘোষণা শোনার পর স্টেশনে অবস্থানরত যাত্রীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেল। কয়েকজন যাত্রী জানালেন, বৃহত্তর রংপুর জেলাসহ উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের ঢাকার ট্রেন ওই একটাই। সেই ট্রেন নতুনরূপে চলবে-এটা খুশির খবর বটে। যাত্রীরা জানান, লালমনি এক্সপ্রেস নামে ঢাকা যাওয়া আসার আরেকটা ট্রেন থাকলেও প্রতিনিয়ত দেরিতে চলার কারণে ওই ট্রেনের উপর যাত্রীদেরে আস্থা কম। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুনরুপে চলবে উত্তরাঞ্চলের মানুষের প্রিয় ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেস। ওই দিন সকালে রেলমন্ত্রী মো: মুজিবুল হক সাদা কোচের ঢাকা-রংপুর রেলপথে রংপুর এক্সপ্রেস ও ঢাকা-চট্টগ্রামের মহানগর এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করবেন।
২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার রংপুরকে নতুন বিভাগ ঘোষণার পর রংপুর-ঢাকা রেলপথে ট্রেনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে রংপুরবাসী। অবশ্য এর আগে থেকেই এই দাবিতে সোচ্চার ছিল তারা। বিভাগ হওয়ার পর সেই আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। প্রায় ২০ বছরের আন্দোলনের ফসল হিসেবে ২০১১ সালের ২১ আগস্ট রংপুরবাসী পায় তাদের স্বপ্নের ‘রংপুর এক্সপ্রেস’। ওই দিন বিকেল ৪টায় ২৯১১ নম্বরের লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) নিয়ে হুইসেল বাজাতে বাজাতে ট্রেনটি যখন রংপুর স্টেশনে পৌঁছায় তখন রংপুরবাসীর আনন্দের সীমা ছিলনা। সেই দিনের স্মৃতিচারণ করে রংপুরের বাসিন্দা রুবেল বলেন, রংপুর এক্সপ্রেস উদ্বোধন করেন তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশের পর আমাদের আনন্দ অনেকটাই শেষ হয়ে যায়। কারণ আমরা জানতাম ট্রেনটিতে নতুন কোচ দেয়া হবে। কিন্তু তার পরিবর্তে ছিল পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে রিপিয়ারিং করা পুরাতন কোচ। এ বিষয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ করি। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী মন্ত্রী আবুল হোসেন আমাদেরকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, শিগগিরি নতুন কোচ লাগানো হবে। একই সাথে ঢাকা-রংপুর রেলপথে আরও একটি ট্রেন চালু করা হবে। যোগাযোগমন্ত্রীর সেই আশ্বাস ৫ বছর পর বর্তমান রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের আমলে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এজন্য আমরা সত্যি আনন্দিত এবং রেলমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
রেল সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে রংপুর এক্সপ্রেসে কোচ ছিল ১১টি। রেলওয়ের ভাষায় লোড ছিল ১১/২২। একটা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন কোচও ছিল এই ট্রেনে। কিন্তু কয়েক দিনের মাথায় সেই কেবিন কোচ খুলে নেয়া হয়। কমিয়ে ৯/১৮ করা হয়। বর্তমানে এই ট্রেনের কোচ মাত্র ৯টি। এর মধ্যে একটি পাওয়ার কার। প্রথম শ্রেণির কোচটি একেবারে নিম্নমানের। ৩১৩ কিলোমিটার পথ দূরত্বে এরকম নিম্নমানের কোচে ভ্রমণ করা কষ্টকর বলে যাত্রীদের অভিমত। পুরাতন কোচ দিয়ে চললেও রংপুর এক্সপ্রেসের ভালো দিক হলো এই ট্রেনের গতিবেগ সুবর্ণর মতো ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে যাত্রাপথে ৩১৩ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমকালে ট্রেনটি থামে ১৩টি এবং ঢাকায় আসার পথে ১৪টি স্টেশনে। অবিরাম চলমানের কারণেও ট্রেনটিতে ভ্রমণ করতে অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু দিন দিন এর যাত্রীসেবার মান কমতে থাকায় যাত্রীরা হতাশ। হয়ে পড়েছিলেন। যাত্রীদের মতে, অনেকটা সময় মেনে চললেও রংপুর এক্সপ্রেসের কোচের মান ছিল একেবারে লোকাল ট্রেনের মতো। বাথরুমগুলো অপরিষ্কার, লাইটগুলো সময়মতো জ্বলে না, ফ্যান ঠিকমতো চলে না, জানালাগুলো একবার খুললে আর লাগানো যায় না। চলন্ত ট্রেনে হকার, ভিক্ষুক, হিজড়াদের উৎপাত লেগেই থাকে। এটেনডেন্টরা বিনা টিকেটের যাত্রী তুলতে ব্যস্ত সময় কাটায়। ট্রেনের যাত্রীদের দিকে তাদের কোনো নজর থাকে না।
পুরাতন কোচ পরিবর্তন করে চীন থেকে আমদানি করা সাদা কোচ দেয়া হচ্ছে এই ট্রেনে। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান জানান, নতুন কোচে এই ট্রেনের লোড হবে ১৮/২৮। থাকবে এসি কেবিন, এসি চেয়ার কোচসহ শোভন চেয়ার কোচ। এসি কোচে এলইডি টেলিভিশনও থাকছে।
এদিকে, উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত রংপুর এক্সপ্রেসের রেক (১৪টা কোচ মিলে একটা রেক) গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ঢাকায় আনা হয়েছে। গত মাসে তূর্ণা ও গোধূলি থেকে কোচগুলো অবমুক্ত করার পর সেগুলো রিপিয়ারিং ও রঙ করার জন্য পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোচগুলোর চেয়ার, চাকা, দরজা, জানালা ও স্প্রিং পরিবর্তন করে নতুন করে রঙ করা হয়েছে। বর্তমানে রেকটি কমলাপুর ওয়াসপিটে রাখা হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি ফুল দিয়ে সাজিয়ে রেকটি কমলাপুর স্টেশনে আনা হবে উদ্বোধনের জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।