নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : ফরাসি সাংবাদিকদের কাছ থেকে মাঠের পারফর্ম্যান্সে দশের মধ্যে দুই পেলেন লিওনেল মেসি! এও কি সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব! পরশু রাত জেগে যারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম ম্যাচের সাক্ষী হয়েছেন তাদের কাছে এটা আলবৎ সম্ভব। আর যারা দেখেননি তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে একটি পরিসংখ্যানই যথেষ্টÑ গোল তো দূরের কথা প্রতিপক্ষের ডি বক্সে একবারও বলে পা-ই লাগাতে পারেননি মেসি!
এমন ম্যাচ বার্সেলোনার ভাগ্যে কি ঘটেছে তা ভক্তদের জন্য অনুমানের চেয়েও বেশি বড় হতাশার। প্যারিসে নকআউট পর্বের প্রথম লেগের ম্যাচে পিএসজির কাছে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হেরে কার্যতঃ ‘লাইফ সাপের্টে’ চলে গেছে বার্সেলোনা। ইতিহাস বলছে নকআউট পর্বে চার গোলের ঘাটতি পূরণ করে কোনো দলই এ পর্যন্ত পরের রাউন্ডে যেতে পারেনি। এ অসাধ্য সাধন করতে ক্যাম্প ন্যুয়ে কমপক্ষে ৪ গোল করতে হবে কাতালানদের। আর যদি কোনোভাবে একটা গোল খেয়ে যায় তাহলে ৫-১ ব্যবধানেও পার পাবে না! সেই হিসাবে কার্যতঃ এখানেই আসরের ইতি বার্সার।
মেসির জাতীয় দলের সতীর্থ অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াই যেন এদিন হয়ে ওঠেন পিএসজির মেসি। নিজের জন্মদিনটা তিনি সাজিয়েছেন জোড়া গোল দিয়ে। নিজের ও দলের প্রথম গোলটি যেন মেসিকে দেখিয়েই বললেন, ‘দেখ বন্ধু আমিও পারি তোমার মতো’। সাথে জুলিয়ান ড্রক্সলার ও এডিনসন কাভানির গোলে ৫ বারের চ্যাম্পিয়নদের মনে হয়েছে পুচকে কোনো দল।
গত চার বছরে পিএসজিকে তিনবার হারিয়ে ফেভারিট তকমা নিয়েই মাঠে নেমেছিল বার্সা। কিন্তু মাঠের পারফর্ম্যান্স ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণে বার্সার রক্ষণকে তটস্থ করে রাখেন ডি মারিয়া-কাভানিরা। তারই ধারাবাহীকতায় অষ্টাদশ মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রিকিকে দলকে এগিয়ে নেন ডি মারিয়া। বিরতির আগে ব্যবধান দ্বিগুন করেন জুলিয়ান ড্রক্সলার। বার্সা গোলরক্ষক দুর্দান্ত কিছু সেভ না দিলে প্রথমার্ধেই ব্যবধান ৪-০ হওয়াটা মোটেও অসম্ভব ছিল না। এসময় স্বাগতিকরা নয় বারের আক্রমণে সাতবারই পোস্টে শট নেয়। একই সময়ে খোলসাবৃত মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা প্রতিপক্ষের পোস্টে শট নেয়ার সুযোগ পায় মাত্র একবার! বার্সার মাঝমাঠ যেন ধু ধু মরুভূমি। মেসি আক্রমণে খেলবেন নাকি মাঝমাঠ সামলাবেন কিছুই যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না।
দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা ঘুরে দাঁড়াবে কি উল্টো ডি মারিয়ার দ্বিতীয় গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই নিয়ে নেয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। পরে ৭১তম মিনিটে ম্যাচর তো বটেই শেষ ষোলয় বার্সার ভাগ্যও একপ্রকার নির্ধারণ হয়ে যায় কাভানির গোলে। গত ছয় বছরে দল গোছাতে ৭০০ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি খরচ করার ফল এবারই মনে হয় পেতে যাচ্ছে প্যারিসের দলটি। যেভাবে তারা খেলল তাতে করে অনেকে তাদের হাতেই আসরের শিরোপা দেখতে শুরু করেছেন।
প্রতিপক্ষের চেয়ে শারীরিক ও কৌশলগতভাবে পিছিয়ে থাকাতেই দলের এই দশা বলে মনে করেন সার্জিও বুসকেট। কোচ লুইস এনরিকেও একথা স্বীকার করে সব দায় নিয়েছেন নিজের কাঁধে, ‘ম্যাচের ফলই সব বলে দিচ্ছে। এটা এমন রোমাঞ্চকর একটা খেলা যেখানে সব সময়ই জটিলতা থাকে। এ হারের দায় আমার। আপনাদের যদি কোনো দোষ খুঁজতে হয় তাহলে সেটা আমি। খেলোয়াড়রা তারাই আছে যারা অন্য দিনগুলোতে জিতছে।’ অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও সতীর্থদের আগলে রেখে পরের রাউন্ডে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘সব দিক দিয়ে আমাদের বাজে একটা দিন গেছে। ফিরতি লেগে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। যদিও সেটা কঠিন কিন্তু আমরা সবটুকু দিয়েই চেষ্টা করব।’
বিশ্বসেরা দলকে এভাবে নাকানিচুবানি খাওয়ানোর বিশেষ কৃতিত্ব কোচ উনাই এমেরির। এর আগে ২৩ বারের সাক্ষাতে মাত্র একবার হারাতে পেরেছিলেন বার্সাকে। সেভিয়াকে টানা তিন ইউরোপা লিগ জিতিয়ে মোটা অঙ্কে প্যারিসে এসে দেখিয়ে দিলেন অর্থটা বিফলে যাচ্ছে না কতৃপক্ষের। কার্যতঃ তার কৌশলেই তো ঘরের মাঠেই পিএসজি লিখে ফেলল পরের রাউন্ডের ভাগ্য। ভদ্রতার কারণেই হয়ত তিনি বললেন, ‘আমাদের সতর্ক থাকতে হবে কারণ ৯০ মিনিটের খেলা এখনো বাকি। পরের ম্যাচ নিয়ে তাই আমি সাবধান। এই ধারাটা আমাদের বজায় রাখতে হবে।’ সাবধান তো থাকতেই হবে ইমেরিকেÑ কারণ তিনি ভালোই জানেন প্রতিপক্ষের নাম বার্সা। ঘুরে দাঁড়ানোর মত যথেষ্ট সক্ষমতা তাদের আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।