Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মাইকেল ফ্লিনের পদত্যাগ

রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোপন যোগাযোগের ফল

| প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোপন যোগাযোগবিষয়ক বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। এবার এ পদে সাময়িকভাবে দায়িত্ব পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোসেফ কেইথ কেলগ। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। জোসেফ মার্কিন বাহিনীর হয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তিনি ট্রাম্পের সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ফ্লিনের স্থলে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলাবেন। ফ্লিনের জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ এ পদে কাকে বসানো যায়, সে বিষয়ে প্রেসিডেন্টের জামাতা ও জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জেরার্ড কুশনার কাজ শুরু করেছেন বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় সময় গত সোমবার দিবাগত রাতে ফ্লিন পদত্যাগ করেন বলে জানা গেছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তার পদত্যাগপত্র সাংবাদিকদের ইমেইল করা হয়েছে। এতে তিনি লিখেন, প্রেসিডেন্টের শপথের আগে বেশ কয়েকজন বিদেশি ক‚টনীতিকের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এ বিষয়ে আমি ভাইস প্রেসিডেন্টকে অপূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়েছি। এজন্য আমি প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তারা আমাকে ক্ষমা করেছেন বলেও জানিয়েছেন। ফ্লিন প্রেসিডেন্টকে বিদেশনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে সহায়তা করতেন। তিনি দেশটির ইতিহাসে সবচে কম সময়ের জন্য উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফ্লিনের যোগাযোগের তথ্য প্রকাশ পেলে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মাইকেল ফ্লিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একজন সাবেক পরিচালক। নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে এসেছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার সখ্যতা আছে। ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিন ও ক্রেমলিনের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের সঙ্গে রুশ কর্তৃপক্ষের সংযোগ সম্পর্কে হোয়াইট হাউসকে সতর্ক করেছিল মার্কিন বিচার বিভাগ। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে ওই তথ্য উঠে আসে। এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লিনের সঙ্গে রুশ রাষ্ট্রদূতের ওই সংযোগ সম্পর্কে কয়েক সপ্তাহ আগেই মার্কিন বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউসকে অবগত করা হয়েছিল। তবে সরকার ও ফ্লিনের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ সম্পর্কে কোনো উত্তর দেয়া হয়নি। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্যালি ইয়েটস হোয়াইট হাউসকে জানিয়েছিলেন, তাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করছেন। সেই সঙ্গে ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে বিভ্রান্ত করছেন। গত মাসে ট্রাম্পের আরোপ করা সাত মুসলিম-প্রধান দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধের জেরে ইয়েটসকে পদচ্যুত করা হয়। প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার আগেই ফ্লিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই আলোচনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে ফ্লিনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে মাইকেল ফ্লিনের পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ফ্লিনের রুশ যোগাযোগ নিয়ে হোয়াইট হাউজকে সতর্ক করে দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, ফ্লিন রাশিয়ার বø্যাকমেইলের শিকার হতে পারেন। ডেমোক্রেট নেতারা তখন ফ্লিনের অপসারণ দাবি করলেও ফ্লিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রুশ দূতের সঙ্গে আলোচনার কথা অস্বীকার করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও পরে ফ্লিনের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। সিএনএন, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ