Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলপুরে সাবেক এমপির বিরুদ্ধে কোটি টাকা মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোঃ শামসুল আলম খান : ময়মনসিংহের ৫নং ফুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মাদিউর রহমান মাহাদি। তিনি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেত্রী রুবিনার ছেলে। গত ঈদুল আজহায় তিনি ভিজিএফ কার্ডে সরকারদলীয় বর্তমান এমপি শরীফ আহমেদের ছবি দিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেন।
অথচ এখানে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনবারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান খোকা। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপিও তাকে দলটির একক প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেছিল। কিন্তু দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার তাকে বাদ দিয়ে মাহাদিকে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছেন। এতে করে দলটির তৃণমূলে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অন্তঃকোন্দল।
মনোনয়নবঞ্চিত মোস্তাফিজুর রহমান খোকা অভিযোগ করেন, ‘প্রকাশ্যে নিলামে তুলে সারোয়ার আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছেলের কাছে বিএনপির মনোনয়ন বিক্রি করেছেন। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে যে বেশি টাকা দিয়েছেন তাকেই তিনি দলের মনোনয়ন দিয়েছেন।’ অবশ্য দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মাহাদী নিজেকে তারেক পরিষদের সাবেক আহবায়ক দাবি করেন। ২নং রামভদ্রপুর ইউনিয়নে বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো: রোকনুজ্জামান রোকন। দলের ইউনিয়নে কিংবা উপজেলায় তার প্রাথমিক সদস্যপদও নেই। এ নির্বাচনে স্থানীয় খালেদ মোশাররফ সোহাগকে মনোনয়ন না দেয়ায় দলটির ১২৩ জন নেতা-কর্মী ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি তারা আওয়ামীলীগে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির পদত্যাগী সভাপতি বাবুল মাস্টার। তিনি ও মনোনয়ন বঞ্চিত খালেদ মোশাররফ সোহাগ অভিন্ন সুরে অভিযোগ করেন, প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার বহু অপকর্মের হোতা রোকনকে ধানের শীষ প্রতীক পাইয়ে দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন নিলামে তুলে বিক্রি করেছেন।
উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মোশাররফ সোহাগ আরো বলেন, নির্বাচনের আগেই সারোয়ার বলেছিলেন ১০ টি ইউনিয়নে মনোনয়নপ্রাপ্তদের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে তুলে কেন্দ্রে খরচা বাবদ দিতে হবে।
প্রথম ধাপে আগামী ২২ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ময়মনসিংহের ফুলপুরের ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সংসদের বাইরে থাকা সাবেক প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র মনোনয়ন বাণিজ্যের এসব খানিক নমুনা। দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, এসব ইউনিয়ন পরিষদে নিজের পছন্দমতো, বিতর্কিত ও ভিন্নমতের লোকদের মনোনয়ন দিয়ে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার। আর এ বাণিজ্যের ভাগ গেছে দলটির কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতাদের পকেটেও। ফলে প্রার্থী বাছাইয়ে পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছে তৃণমূলের মতামত।
৮নং রূপসী ইউনিয়নেও মনোনয়ন নিয়ে বিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে দলটির নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতারা সাইফুল ইসলাম শাজাহানকে সমর্থন দিলেও সাবেক সংসদ সদস্য সারোয়ার মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছেন তার মামা আবুল কালাম আজাদকে। ৬ নং পয়ারী ইউনিয়নে বিএনপি’র মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন গত ইউপি নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করা মফিদুল ইসলাম।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ও তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় মনোনয়ন বিক্রি করে সাবেক সংসদ সদস্য সারোয়ার কোটি কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। তার এ বাণিজ্যের প্রতিবাদে একটি ইউনিয়নে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা গণপদত্যাগ করে আ’লীগে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
এসব বিষয়ে ফুলপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুলপুরে সাবেক এমপির বিরুদ্ধে কোটি টাকা মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ