Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গফুর হালীর জীবন-দর্শনের মূল কথা প্রেম আর মানবশ্রেষ্ঠত্ব বাংলা একাডেমির সেমিনার

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত ‘আবদুল গফুর হালী : জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ‘চাটগাঁইয়া গানের মহত্তম রূপকার হলেন আবদুল গফুর হালী। হাজার বছরের বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতের রূপ আবদুল গফুর হালীর কাব্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে। গফুর হালীর জীন-দর্শনের মূল কথা হলো প্রেম আর মানবশ্রেষ্ঠত্ব। দুই যুগ ধরে জার্মানি ও আমেরিকার মতো দেশের গবেষকরা গফুর হালীর গান নিয়ে গবেষণা করছেন। বিদেশি গবেষকদের গবেষণাকর্মে গফুর হালীর সঙ্গীত ও জীবন-দর্শন বিশ্ব পরিসরে সমাদৃত হয়েছে। মহান একুশে উপলক্ষে শনিবার বাংলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে ‘আবদুল গফুর হালী : জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাংবাদিক ও গবেষক নাসির উদ্দিন হায়দার। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন ও বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক সাইমন জাকারিয়া। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কিউরেটর শামসুল হোসাইন।
নাসির উদ্দিন হায়দার মূল প্রবন্ধে চাটগাঁইয়া গানের সুদীর্ঘ ইতিহাস পর্যালোচনা করে বলেন, বিগত ৪০০ বছরে সৈয়দ আলী রজা প্রকাশ কানু শাহ, আস্কর আলী পÐিত, রমেশ শীল ও আবদুল গফুর হালীই হলেন চাটগাঁইয়া গানের প্রধানতম রূপকার। আবদুল গফুর হালী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও মাইজভাÐারী গানে নবযুগের ¯্রষ্টা। ’৬০-৯০ এর দশকে গফুর হালীর হাত ধরে এই গানে নবজোয়ার আসে। শেফালী ঘোষ-কল্যাণী ঘোষের মতো শিল্পীর গড়ে উঠায় গফুর হালীর অবদান চিরস্মরণীয়। গফুর হালী ভিন্নধারার ‘মোহছনে আউলিয়ার গানেরও জনক। মুক্তিযুদ্ধের সময় কণ্ঠসৈনিক হিসাবে অসামান্য অবদান রেখেছেন গফুর হালী।’
ড. রাহমান নাসির বলেন, ‘আবদুল গফুর হালী চাটগাঁইয়া গানের বরপুত্র। তিনি প্রায় ২ হাজার গান লিখেছেন। আবদুল গফুর হালী সেই বিরল সংগীতজ্ঞ যার মধ্যে সুফীবাদ ও দেহতত্ত¡ একই সঙ্গে দৃশ্যমান। এক্ষেত্রে তিনি লালনপন্থি। একযুগ আগে তাঁর গান নিয়ে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হান্স হার্দার গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেছে। কিন্তু স্বদেশে তিনি উপেক্ষিতই ছিলেন। মৃত্যুর পর হলেও জাতীয় পর্যায়ে বরেণ্য এই শিল্পীর মূল্যায়ন হচ্ছে এটা খুবই ইতিবাচক। পিএইচপি ফ্যামিলি আবদুল গফুর হালীর সৃষ্টি’র প্রকাশ ও সংরক্ষণে দারুণ ভূমিকার রেখেছে। শিল্পের পরিচর্যা করার জন্য তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। সাইমন জাকারিয়া বলেন, আবদুল গফুর হালীকে আমরা নানা রূপে পাই। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, শিল্পী ও সাধক। একজন শিল্পীর মধ্যে এত গুণ বিরল। চাটগাঁইয়া গানকে তিনি সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন করেছেন। সভাপতির বক্তব্যে ড. শামসুল হোসাইন বলেন, দুই দশক আগে আমি ভিনদেশি গবেষক ড. হান্স হার্দারের মাধ্যমে আবদুল গফুর হালীর অসামান্য সংগীত প্রতিভা সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। হাজার মাইল দূর থেকে একজন গবেষক এসে আমাদের আঙিনার সোনার মানুষ গফুর হালীকে নিয়ে গবেষণা করে গেলেন আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না। এটা খুবই দুঃখজনক। আশা করি বাংলা একাডেমি ভবিষ্যতেও গফুর হালী চর্চা অব্যাহত রাখতে উদ্যোগ নেবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: একাডেমি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ