নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ভারত : ৬৮৭/৬ ডি.ও ১৫৯/৪ ডি.
বাংলাদেশ : ৩৮৮ ও ১০৩/৩
(চতুর্থ দিন শেষে)
শামীম চৌধুরী, হায়দারাবাদ (ভারত) থেকে : প্রথম ইনিংসে ৬৮৭/৬ স্কোরে ইনিংস ঘোষণার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করবে ভারত, এমনটা কি ভেবেছে কেউ? অথচ, হায়দারাবাদ টেস্টে সেই ভারতকেই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে হয়েছে! বাংলাদেশ ফলো অন এড়াতে পারেনি, তারপরও অশ্বিন-যাদেজার মতো সময়ের সেরা স্পিন জুটির ভয়ংকর ছোবল সামাল দিয়ে, ভারতের পেস অ্যাটাকের জবাব দিয়ে মুশফিকুরের সেঞ্চুরিতে (১২৭) ভারতের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর (৩৮৮), ৫৩৫ মিনিট ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে দেয়া কি কম গর্বের? চতুর্থ দিনে শেষ ৪ পার্টনারশিপের ৬৬ এবং ১০৮ মিনিট কাটিয়ে দেয়ায়ও যে গর্বে বুক ফুলে যাবার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট ভক্তদের। ঝটপট রান তোলার মন্ত্রে চতুর্থ ইনিংস ১৫৯/৪ স্কোর তুলে বাংলাদেশকে ৪৫৯ রানের চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছে কোহলীরা, চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে কিন্তু সে আশার প্রতিফলন দেখতে পারেনি ভারত। বরং চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে তামীম, সৌম্য, মুমিনুলকে হারিয়েও প্রতিরোধ যুদ্ধে টিকে আছে বাংলাদেশ দল। চতুর্থ ইনিংসে ৪১৮’র বেশি চেজ করে জেতার অতীত নেই বলে এতোটা দুঃসাহস দেখানোর কথা নয় বাংলাদেশ দলের। তবে অবশিষ্ট ৭টি পার্টনারশিপের কাছে শেষ দিনটি কাটিয়ে দেয়ার দাবিটা খুব কি বড়?
চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে ১২৫ ওভারের চ্যালেঞ্জ দিয়েছে ভারত। চতুর্থ ইনিংসে এরচেয়েও বেশি ওভার কাটানোর অতীত আছে বাংলাদেশের। ২০০৫ সালে ১৪২ ওভার পাড়ি দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট বাঁচানোর সেই অতীত থেকে টনিক পেতে পারে বাংলাদেশ দল। তবে ভারতের মাটিতে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসের পরীক্ষায় ১৩৫ ওভার ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর অতীত শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডের,১৯৯৯ সালে মোহালীতে। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে জাদেজা অশ্বিন যেভাবে পেয়েছেন টার্ন, সৌম্য (৪২) এবং মুমিনুল (২৭) সিøপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন, তাতে ৫ম দিনের উইকেটে না জানি বল কতোটা ঘোরে ? এটাই ভয়।
৮১ রানে ব্যাটিংয়ে থেকে তৃতীয় দিন শেষ করেও সেঞ্চুরির পথটা সহজ মনে হয়নি মুশফিকুরের। চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারে ভুবনেশ্বরের সুইং ডেলিভারিতে মিরাজ বোল্ড আউটে (৫১) ফিরে এলে ক্যারিয়ারের ৫ম টেস্ট সেঞ্চুরির লক্ষ্য পূরনে একটু ঝুঁকিই নিতে হয়েছে মুশফিকুরকে। ৪৩ মিনিট সঙ্গ দিয়ে তাইজুল ফিরে আসায় নিয়ে অনোন্যপায় হয়ে ইশান্তকে ফাইন লেগের উপর দিয়ে ছক্কায় ৮৭ থেকে পৌছে গেছেন ৯৩এ। সেঞ্চুরির শটটি সেখানে বাউন্ডারিÑউমেষকে দর্শনীয় ফ্লিক শটে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৫ম সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে লেগেছে তার ৩৪৩ মিনিট, ২৩৫ বলে ১৩ চার ১ ছক্কায় ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি থেমেছে ১২৭এ। অশ্বিনের লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচিং ডেলিভারিকে সুইপ করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ মুশফিকুর রহিম। টেস্টের তৃতীয় দিনে ৩ হাজারী ক্লবের মাইলস্টোনে দিয়েছেন পা মুশফিক, তাকে ফিরে টেস্টে দ্রুততম আড়াইশ’ ক্লাবের সদস্যপদ পেলেন অশ্বিন। ৫২তম টেস্টে এসে ৩ হাজারী ক্লাবের মাইলস্টোনে দিয়েছেন পা, করেছেন ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিÑ ওয়েলিংটনে ১৫৯’র পর হায়দারাবাদে ১২৭। ৫টি সেঞ্চুরির মধ্যে ৪টিই আবার দেশের বাইরে মুশফিকুরের। ২০১৩ সালে গল টেস্টে ২০০, ২০১৪ সালে জ্যামাইকা টেস্টে ১১৬, ২০১৭ সালে ওয়েলিংটন টেস্টে ১৫৯’র পর হায়দারাবাদে ১২৭।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট রেকর্ডটা মুশফিকুরের দারুণ। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি উদযাপনে নিয়েছিলেন তিনি ভারতকে বেছে। তাও আবার প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরি। উদযাপন করেছিলেন তা ১৭তম টেস্টে এসে। ৫২ টেস্টে ইনিংসে গড় তার যেখানে ৩৪.৬৪, সেখানে ভারতের বিপক্ষে ৪ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরিতে ৩১৪ রানে গড়টা ৬২.৮০। রঙ ছড়ানো চতুর্থ দিনে তাসকিন (২/৪৩), সাকিব (২/৫০) নামতা গুনে ২টি করে শিকার করেছেন। দ্রুত রান তোলার প্রবনতায় তৃতীয় ইনিংসে ভারত টপ অর্ডার পুজারার হার না মানা ফিফটি (৫৪) ছিল উল্লেখযোগ্য।
পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ দল তাকিয়ে মাহামুদুল্লাহ (৯), সাকিবের (২১) অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপের দিকে। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুরকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ। ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট আতিথ্যে যেভাবে এই চারটি দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশ, তাতে শেষ দিনকেও স্মরণীয় করে রাখার প্রত্যয় বাংলাদেশ দলের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।