পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গুলশান হামলার পর অনিশ্চয়তা কাটিয়ে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে গতি
বিশেষ সংবাদদাতা : অনিশ্চয়তা কাটিয়ে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প গতি ফিরে এসেছে। গুলশানের হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার পর এই প্রকল্পের গতি থেমে গিয়েছিল। সরকারের আশ্বাস ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রটির নির্মাণ প্রক্রিয়ায় আবারও ফিরে আসলো জাপানের দুই বড় কোম্পানি।
বিদু্যুৎ বিভাগ জানায়, নির্ধারিত সময়ের ছয় মাস পর কেন্দ্রটি নির্মাণে দর প্রস্তাব জমা দিয়েছে জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন ও মারুবিনি করপোরেশন। এর ফলে চলতি বছরই দেশের অন্যতম বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ (সিপিজিসিবিএল) সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা দিবে ২৯ হাজার কোটি টাকা। আর সরকারি তহবিল থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দেয়া হবে। অবশিষ্ট দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা কেন্দ্রটির মালিক ও বাস্তবায়নকারী কোম্পানি সিপিজিসিবিএল দিবে।
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নির্মিতব্য এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সিপিজিসিবিএল। গত বছরের ২৬ জুলাই ছিল কেন্দ্রটি নির্মাণে রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি) জমা দেয়ার শেষ দিন। কিন্তু ১ জুলাই গুলশানে সন্ত্রাসী হামলায় জাপানি নাগরিক নিহত হওয়ার পর বিভিন্ন জাপানি কোম্পানি ও প্রকৌশলীরা এ দেশে আসার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত আপত্তি জানায়। প্রকল্পটি থেকে জাপানি সংস্থা ও বিদেশী কোম্পানির মুখ ফিরিয়ে নেয়ার সংবাদটি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে আলোড়ন তোলে।
এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয় এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর মাধ্যমেও নিরাপত্তা দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সরকারের এমন পদক্ষেপের কারণে জাপানি প্রতিষ্ঠাণ মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আরএফপি জমা দেয়ার সময়সীমা কয়েক দফায় বাড়িয়ে নেয়। এটি জমা দেয়ার সময়সীমা দুই দফায় ৫ মাস বাড়িয়ে গত বছরের ২৪ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওইসময় জাপানের মারুবিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে আরএফপি দিতে রাজি হলেও সুমিতমো আরো সময় বৃদ্ধির অনুরোধ করে। এরপর সরকার আরেক দফায় সময় বাড়ানোর পর পৃথকভাবে দরপ্রস্তাব জমা দেয় সুমিতমো করপোরেশন ও মারুবিনি করপোরেশন।
এ প্রসঙ্গে সিপিজিসিবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কাশেম বলেন, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প। কিন্তু গুলশান হামলার পর প্রকল্পটি এগিয়ে নেয়ার কাজ বেশ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি সুমিতোমো এবং মারুবিনি পৃথকভাবে দরপত্র জমা দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রকল্পটির কাজ এগিয়ে নেয়ার বিষয়টি অনেকটা এগিয়ে গেল। আগামী মে মাসের মধ্যেই এ দুইটির মধ্যে যে কোনো একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।
জানা যায়, মাতারবাড়িতে আমদানিকৃত কয়লা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় সরকার। জাইকার সহযোগিতায় ওই দেশেরই টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার সার্ভিস কোম্পানি ও টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি ২০১৪ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে। এরপর কেন্দ্রটি নির্মাণে আগ্রহপত্র জমা দেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মারুবিনি ও সুমিতমোকে বেছে নিয়ে ছোট তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু দুই কোম্পানিই গুলশান হামলার পর পিছিয়ে গেলে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
প্রকল্পটির আওতায় ১৫ হাজার একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৫৪ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারিগরি কাজ, পূর্ত কর্ম, কেন্দ্র এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ, স্থায়ী টাউনশিপ নির্মাণ, ফ্লু গ্যাস ডি-সালফারাইজেশন ইউনিট স্থাপন করা হবে।
এছাড়াও কয়লা পরিবহন ব্যবস্থা, কয়লা খালাসের জন্য পৃথক জেটি নির্মাণ, কয়লা মজুতের জন্য সংরক্ষণাগার নির্মাণের কথা রয়েছে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া অন্য কাজগুলোতে এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি নেই।
উল্লেখ্য, সরকার বর্তমানে ২৩টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে কাজ করছে। এর মধ্যে সাতটি সরকারি, আটটি বেসরকারি ও আটটি বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গৃহীত প্রকল্প। এই নির্মিতব্য কেন্দ্রগুলোর মোট উৎ্পাদনক্ষমতা ২০ হাজার ৬২২ মেগাওয়াট।
এগুলোর মধ্যে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দ্রুততম সময়ে নির্মাণ সম্পন্ন করার আশা করছিলেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু নির্মাণ ঠিকাদার বাছাই প্রক্রিয়াতে অপ্রত্যাশিতভাবে বেশি সময় ব্যয় হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি শেষ করা যাবে না বলে মনে করছেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।