দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
এ, কে, এম, ফজলুর রহমান
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আম্বিয়া কিরাম (আ.)-এর হায়াত :
আম্বিয়া কিরাম (আ.)-এর হায়াতকে শুধু কেবল ‘হায়াতুদ্ দুনইয়া’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করলেই চলবে না, বরং তাদের বরযখী হায়াতকেও একই পরিসরে চিন্তা করতে হবে। আকায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এবং অন্যান্য নবী রাসূলগণ (আ.) পার্থিব জীবনের পরিসমাপ্তিতে কবরদেশে জীবিত আছেন। তাঁদের এ জীবন বারযাখী, হিসসী ও দৈহিক জীবন বটে’ এই বিষয়টিকে মহান রাব্বুল আলামিন কোরআনুল কারীমে সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। যথা :
(ক) আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেনÑ ‘যারা আল্লাহর পথে মরণ বরণ করেন তাদেরকে সাধারণ মৃত বল না। বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা তা পুরোপুরি অনুধাবন করতে পার না।’ (সূরা বাকারা : ১৪৫) (খ) ‘আল্লাহর পথে শাহাদাতবরণকারীদের তোমরা মৃত ভেব না। বরং তারা রবের সান্নিধ্যে জীবিত, রিজিকপ্রাপ্ত।’ (সূরা আল ইমরান : ১৬৯) (গ) ‘যখন তারা নিজেদের ওপর জুলুম করে আপনার নিকট আগমন করে অনন্তর আল্লাহর দরবারে ইস্তিগফার করে এবং রাসূল (সা.) ও তাদের জন্য আল্লাহর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তবে তারা অবশ্যই আল্লাহপাককে তওবাকবুলকারী ও অতীব দয়ালু পাবে।’ (সূরা নিসা : ৬৪)
উপরোক্ত তিনটি আয়াতে কারীমায় ঘোষণা করা হয়েছে যে, শহীদগণ করবে জীবিত আছেন। তাদেরকে সাধারণ মৃতদের মতো কল্পনা করা যাবে না। অনুরূপভাবে সাইয়্যেদুল মুরসালিন, খাতামুন নাবিয়্যিন রাহমাতুল্লিল আলামিন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মৃত্যুও শহীদের মৃত্যু ছিল। তিনি জামে শাহাদাত পান করেই রফীকে আ’লায় সান্নিধ্যে হাজির হয়েছিলেন। হাদিস শরিফে এসেছে, (ক) খায়বর যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বিষ প্রদান করা হয়। সালাম ইবন মাশকাম নামক ইয়াহুদির স্ত্রী জয়নব বিনতে হারিছ বিষমিশ্রিত একটি ভুনা বকরি তোহফা হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে পেশ করে। সে প্রথমেই জিজ্ঞেস করে, বকরির কোন অংশ তার বেশি প্রিয়? তিনি বলেছিলেন, রান। এতে সে রানের অংশে বেশি করে বিষ মিশিয়েছিল। তিনি যখন রানের থেকে কিছু অংশ ভেঙে খেতে শুরু করেন তখন ওই গোশতের টুকরোই তাকে অবহিত করে যে, এতে বিষ মিশ্রিত রয়েছে। তিনি তৎক্ষণাৎ তা উগরে ফেলে দেন।
(খ) এরপর তিনি ইয়াহুদিদের সমবেত করে তাদেরকে বলেন : আমি যদি তোমাদেরকে কিছু জিজ্ঞেস করি তোমরা কি তার ঠিক জওয়াব দেবে? তারা বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন : তোমরা কি এই বকরিতে বিষ মিশিয়েছিলে? তারা স্বীকার করল যে, হ্যাঁ, তারা বিষ মিশিয়েছে। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন : কিসে তোমাদেরকে এতে প্ররোচিত করেছিল? উত্তরে তারা জানায়; আমরা ভেবেছিলাম, আপনি যদি (না’উযুবিল্লাহ) মিথ্যাবাদী হন, তাহলে আমরা আপনার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাব। আর আপনি যদি সত্যি সত্যি নবী হন তাহলে বিষ আপনার ওপর কোনো ক্রিয়াই করবে না। এরপর ওই মহিলাকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে হাজির করা হলো। সেও তার অপরাধ স্বীকার করল এবং বলল : আমি আপনাকে জানে মারার ইচ্ছা করেছিলাম। তিনি বললেন : আল্লাহতায়ালা তোমাকে আমার ওপর জয়ী হতে দিতে পারেন না। অতঃপর সাহাবায়ে কিরাম (রা.) অনুমতি চাইলেন মহিলাটিকে তার এই ঘৃণ্য অপরাধের দরুন হত্যা করতে কিন্তু তিনি বললেন : না, তা হয় না। এ সময় তিনি এ ব্যাপারে মহিলাটিকে আর কিছু বলেননি এবং তাকে কোনো প্রকার শাস্তিও দেননি, হত্যা করার অনুমতি তো দূরে থাক। কিন্তু পরে যখন তার বিষমিশ্রিত খাবার গ্রহণের ফলে বিশর ইবনু’ল-বারাআ ইবন মা’রূর (রা.) নামক সাহাবির ইনতিকাল হলো তখন কিসাস হিসেবে মহিলাটিকে হত্যা করা হয়। (নবীয়ে রহমত : ৩২৭-২৮)
(গ) ১১ হিজরির সফর মাসের শেষ দিকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। এর প্রাথমিক আলামত এভাবে প্রকাশ পায় যে, তিনি রাত্রির মাঝামাঝি জান্নাতুল-বাকীতে গমন করেন এবং কবরবাসীদের জন্য আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত কামনা করেন। এরপর তিনি ঘরে ফিরে আসেন। ভোর হলো এবং সেদিন থেকেই রোগের আলামত শুরু হয়। (ইবনে হিসাম, ইয়াখ : ৬৪২)
উম্মুল-মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) জান্নাতুল-বাকী থেকে ফিরে আমাকে শিরঃপীড়ায় আক্রান্ত দেখতে পেলেন। আমি তখন (ব্যথায় কাতরাচ্ছিলাম আর) বলছিলাম, আমার মাথায় কি যন্ত্রণা! তিনি বললেন : না, আমার মাথায় কত যন্ত্রণা! আয়েশা! আমার মাথায় কত কষ্ট! এরপর রোগ যন্ত্রণা বৃদ্ধি পেতে লাগল। সে সময় তিনি মায়মূনা (রা.)-র ঘরে ছিলেন। তিনি এ ঘরেই তার সমস্ত স্ত্রীদের ডেকে পাঠালেন এবং তাদের কাছে রোগতাড়িত অবস্থায় আয়েশা (রা.)-র ঘরে থাকার অনুমতি চাইলেন। তারা সবাই সন্তুষ্ট চিত্তে অনুমতি দিলেন। তিনি পরিবারস্থ দুজন যাদের একজন ছিলেন হযরত ফযল ইবন আব্বাস (রা.) ও অপরজন হযরত আলী (রা.)-এর সাহায্যে সেখান থেকে নিষ্ক্রান্ত হলেন। রাসূল (সা.)-এর মাথায় তখন পট্টি বাঁধা ছিল। তিনি পা হেঁচড়ে চলছিলেন এবং এমতাবস্থায় হযরত আয়েশা (রা.)-এর ঘরে গমন করেন। (ইবনে কাসির, ৪র্থ খ: ৪৪৯, সহীহহ বুখারী : মরযে নবী অধ্যায়)
হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন যেই রোগে তিনি ইনতিকাল করেন সেই রোগে আক্রান্ত থাকা অবস্থায় এ কথা বলতেন : আয়েশা! সেই খাবারের কষ্ট এখন অনুভব করছি যা আমি খায়বারে খেয়েছিলাম। সেই বিষক্রিয়া এখন আমার শিরা (আবহুর) কেটে টুকরো টুকরো করে দিচ্ছে। (ইবনে হিশাম্ ২য় খ : ৬৩৪) আবহুর সেই শিরাকে বলা হয় যা পৃষ্ঠদেশ হতে বহির্গত হয়ে হৃৎপি-ে গিয়ে মিলিত হয়। এটি ছিড়ে কিংবা কেটে গেলে মানুষ মারা যায়। (নবীয়ে রহমত : ৪১৯)। এতে বোঝা যায় যে, রাসূলে মুকাররাম (সা.)-এর স্বাভাবিক মৃত্যুর পাশাপাশি জয়নব বিনতে হারিছ প্রদত্ত বিষ মিশ্রিত খাদ্যের বিষক্রিয়ার ফলে শাহাদাতের মৃত্যুর গৌরবও লাভ করেছিলেন। হাবিবে কিবরিয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) কবরদেশে জীবিত আছেন বিষয়টি হাফেজে হাদিস মুহাদ্দেসগণ, আয়েম্মায়ে মুজতাহেদীনগণ একযোগে স্বীকার করে নিয়েছেন। এতদ সংক্রান্ত আরও কিছু তথা ও উপাত্ত আগ্রহী পাঠক ও পাঠিকাদের খেদমতে উপস্থাপন করা হলো।
(গ) হাদিসে হযরত আনাস বিন মালিক (রা.) হতে বর্ণিত আছেÑ রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেনÑ নবীগণ তাদের কবরে জীবিত, নামাজ আদায় করেন। (মুসনাদে আবু ইয়া’লা-৩/২১৬) (ঙ) আমি বলব, নবীদের হায়াতের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই। কেননা নবীগণ শহীদগণ হতে শ্রেষ্ঠ। আর শহীদগণ তো তাদের রবের নিকট জিন্দা। সুতরাং নবীগণ তো প্রশ্নাতীতভাবেই জিন্দা থাকবেন। (উমদাতুল কারী-১১/৪০২) (চ) শহীদগণ যেহেতু নকলী দলিলের ভিত্তিতে জীবিত প্রমাণিত, কোরআনে তার সুস্পষ্ট বর্ণনা আছে সুতরাং নবীগণ জীবিত থাকবেন। কারণ তারা শহীদগণ হতে উত্তম। (ফাতহুল বারী-৬/২৮৮) (ছ) নবীগণ কবরে জীবিত ও নামাজে রত এ হাদিস সম্পূর্ণ সহীহ। (মিরকাত-২/২৬১) (জ) হাদিসে প্রমাণিত যে, নবীগণ করবে জীবিত আছেন। ইমাম বায়হাকী ও মুনযিরী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। (নাইলুল আউতার-৩/২৬১) (ঝ) নিঃসন্দেহে নবী করীম (সা.) ওফাতের পর কবরে জীবিত আছেন। অনুরূপভাবে অন্য নবী-রাসূলগণও শহীদদের চেয়ে পূর্ণ হায়াতে জীবিত। যাদের সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা তার পবিত্র কিতাবে সংবাদ দিয়েছেন। (ওয়াফাউল ওফাফা-২/৪০৫) (ঞ) নবীদের কবরদেশে জীবিত থাকার প্রমাণাদি দাবি করে যে, তারা দুনিয়ার পার্থিব জীবনের মতোই দৈহিকভাবে জীবিত। তবে তারা পানাহারের মুখাপেক্ষী নন। (প্রাগুক্ত ২/৪০৮)
আকায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত গ্রন্থে আরও বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে, হুজুর আকরাম (সা.) এবং অন্যান্য নবী-রাসূলগণ কবরে যে জীবন লাভ করেছেন তা এত শক্তিশালী ও পার্থিব হায়াতের সমতুল্য যে, অনেক জাগতিক হুকুমও তাদের ওফাতের পর কবর দেশে থাকাকালীন তাদের উপর প্রযোজ্য হয়। যেমনÑ নবী-পতœীদের বিবাহ অবৈধ হওয়া, নবীর সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন না হওয়া, সালাম প্রদানকারীদের সালাম শ্রবণ করা ইত্যাদি। মহান রাব্বুল আলামীন কোরআনুল কারীমে এ সকল বিষয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। (ক) আল্লাহ তা’য়ালা ঘোষণা করেছেন : আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া, তাঁর ইন্তিকালের পর তাঁর সহধর্মিনীদের বিবাহ করা তোমাদের জন্য আদৌ বৈধ নয়। নিশ্চয়ই তোমাদের উক্ত রূপ কাজ করা আল্লাহর নিকট বড় অপরাধ। (সূরা আল আহযাব-৩) (খ) নবী-পতœীদের বিবাহ নবীর ইন্তিকালের পরও সঠিক ও অক্ষুণœ থাকে। (শরহে যুরকানী আলাল মাওয়াহিব-৫/৩৩৪) (গ) নবী-পতœীদের জন্য কোন ইদ্দত নেই। কেননা নবী কবরে জীবিত। অনুরূপ সকল আম্বিয়া কিরাম। (মিরকাত-১১/২৫৬) (ঘ) এখানে বাধা হলো অর্থাৎ নবীদের ইন্তিকালের পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টিত না হওয়ার কারণ হলো হয়তো শর্তের অনুপস্থিতি অর্থাৎ উত্তরাধিকারীর মধ্যে উত্তরাধিকারীত্বের গুণ-বৈশিষ্ট্য না থাকা অথবা মুরিছের মৃত্যু না হওয়া। আর এটার ভিত্তি হলো, “নবীগণ কবরে জীবিত”। হাদীসে অনুরূপই বর্ণিত হয়েছে। (রাসাইলে ইবনে আবেদীন-২/২০২) (ঙ) নির্ভর ও গ্রহণযোগ্য ই’তিকাদ হলো, নবীগণ তাদের কবরে জীবিত। যেমনÑ সকল নবী তাঁদের রবের সমীপে জীবিত। তাঁদের রুহসমূহ ঊর্ধ্ব জগতের সাথেও সম্পর্ক রাখে, নি¤œজগতের সাথেও সম্পর্ক রাখে, যেমন পৃথিবীতে অবস্থানকালে উভয় জগতের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। সুতরাং তাঁরা কলবের দিক হতে ঊর্ধ্ব জগতের, আর কালিব বা বাহিরাবরণের দিক হতে নি¤œ জগতের অন্তর্গত। (আশশিফা-মোল্লা আলী কারী-৩/৪৯৯) (চ) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন : আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যার কুদরতি হাতে আবুল কাসিম (সা.)-এর জীবন, অবশ্যই ঈসা বিন মারইয়াম (আ.) (কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে) অবতরণ করবেন। তিনি যদি আমার কবর পার্শ্বে দাঁড়িয়ে ডাকেন, হে মুহাম্মদ (সা.)! অবশ্য অবশ্যই আমি তার ডাকে সাড়া দিব। (মুসনাদে আবু ইয়া’লা-৫/৪৯৭) ঈসা (আ.) আকাশ থেকে অবতরণের পর আমাদের নবী (সা.) থেকে সরাসরি আহকাম শিক্ষা করবেন, অথচ তখন তিনি তার কবরে থাকবেন। আবু ইয়া’লা বর্ণিত উক্ত হাদীস দ্বারা উপরোক্ত মতের সমর্থনে দলিল পেশ করেন। হাদীসটির অনুবাদ এই : রাসূল (সা.) বলেন : যার কুদরতি হাতে আমার জীবন, অবশ্য অবশ্যই ঈসা বিন মারইয়াম অবতরণ করবেন। অতঃপর তিনি যদি আমার কবর পার্শ্বে দাঁড়িয়ে ডাকেন, হে মুহাম্মদ (সা.)! আমি অবশ্যই তাঁর ডাকে সাড়া দিব। (রুহুল মা’আনী-২২/৩৫) আম্বিয়া কিরাম (আ.) আপন আপন কবরে বিভিন্ন প্রকার ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত আছেন। তবে তাদের এ ইবাদত পার্থিব জগতের ইবাদতের ন্যায় শরীয়ত কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব হিসেবে নয় বরং শুধুমাত্র আত্মিক প্রশান্তি ও পরিতৃপ্তির জন্যই ইবাদত করে থাকেন। এ প্রসঙ্গে (ক) হজরত সুলাইমান তাইমী বলেন, আমি হজরত আনাস (রা.)-কে বলতে শুনেছি, রাসূল (সা.) বলেছেন যে, আমি হজরত মুসা (আ.)-এর নিকট দিয়া গমন করলাম, তিনি কবরে সালাতে নিমগ্ন ছিলেন। অন্য বর্ণনায় ঘটনাটি মি’রাজ রাত্রের ঘটনা বলে উল্লেখ আছে। (সহীহ মুসলিম-২/২৬৮) (খ) ওফাতের পর নবীগণের সালাত বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। কোরআন হাদীসে এর বিবরণ বিদ্যমান। এর দ্বারাই নবীদের মরণোত্তর জীবন প্রমাণিত হয়। (ফাতহুল বারী-১/১৩০) (গ) ইমাম কুরতুবী বলেন : নবীগণের নিকট ইবাদত বড় প্রিয়। তাই তারা নিজের আত্মিক আহ্বানেই ইবাদতে মশগুল থাকেন। তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে ফরজ/ওয়াজিব মনে করে ইবাদত করেন না।
(ঘ) মুসা (আ.)-এর কবরে নামাজ আদায়, মি’রাজ রজনীতে বাইতুল মুকাদ্দাসে রাসূল (সা.)-এর ইমামতিতে নবীগণের সালাত আদায়, জান্নাতবাসীদের তাসবীহ পাঠ ইত্যাদি দ্বারা তাঁরা পরিতৃপ্তি লাভ করেন। আনন্দের সাথে সময় অতিবাহিত করেন। এগুলোর কোনটিই তাকলীফ বা বাধ্যতামূলক করণীয় কাজের অন্তর্ভুক্ত নয় যা দ্বারা আল্লাহ বান্দাদের পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকেন। (ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়্যাহ-১/৩৫৪) (ঙ) আমাদের ও আমাদের মাশাইখগণের মতে, হজরত রাসূল (সা.) কবরে জীবিত। তাঁর কবরের হায়াতও পার্থিব হায়াতের মতোই; কিন্তু পার্থিব জীবনের মতো মুকাল্লাফ নন। অর্থাৎ শরীয়তের আদেশ-নিষেধ তার উপর কবরে প্রয়োগ হবে না। এ ধরনের হায়াত কেবলমাত্র রাসূল (সা.) ও নবীগণের জন্য নির্ধারিত। (আল মুহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ-৩৭-৩৮) (অসমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।