Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রেসিডেন্ট ও বিচার বিভাগের মুখোমুখি অবস্থান মার্কিন ইতিহাসে বিরল

মুসলিম অভিবাসন নীতি, আপিল আদালতে ১৫ পৃষ্ঠার সুপারিশ

| প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন জানিয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা বহাল করতে আপিল আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেছে তাঁরা। সানফ্রান্সিসকো আপিল আদালতে উপস্থাপন করা ১৫ পৃষ্ঠার ওই আপিলের সুপারিশে বলা হয়, এটি প্রেসিডেন্টের আইনসম্মত পদক্ষেপ ছিল। মুসলিমদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা নয়। বিচার বিভাগ গত সোমবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন আদালতে নিষেধাজ্ঞা বহালের পক্ষে বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেছে। এগুলো হলো : প্রেসিডেন্ট জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুসলিমদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি সঠিক নয়। বরং সন্ত্রাসীদের থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দূরে রাখতে সাত দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নির্বাহী আদেশ নিরপেক্ষ। সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সম্প্রতি ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে মুসলিমপ্রধান সাত দেশের শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত শুক্রবার ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের ফেডারেল আদালত ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে দেশজুড়ে সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন। বিচারক জেমস রবার্ট ওই নিষেধাজ্ঞাকে অসাংবিধানিক ও ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন। গত শনিবার ওয়াশিংটন ফেডারেল আদালতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। আপিলে তাৎক্ষণিকভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার আবেদন জানানো হয়। সানফ্রান্সিসকো আপিল আদালত বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সময় গতকাল হোয়াইট হাউস ও বিচার বিভাগকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করার সুযোগ দেন। বিবিসি, রয়টার্স। এদিকে, আদালতের নির্দেশে মুসলিমবিরোধী অভিবাসন নীতি সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ সাময়িক স্থগিত হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে আপিল করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার এ আপিলের পক্ষে আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেছে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। নির্বাহী আদেশকে আইনসঙ্গত বলে দাবি করা হয়েছে। আপিলের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের পরে স্থানীয় সময় চূড়ান্ত রায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়ে গত শুক্রবার রায় ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল আদালত। নিম্ন আদালতের এ রায়ের বিপরীতে জরুরি ভিত্তিতে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের এ আপিলও খারিজ হয়। এর প্রেক্ষিতে মার্কিন বিচার বিভাগ ও বিচারকদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি টুইট করেন ট্রাম্প। বিচার বিভাগ ও প্রেসিডেন্টের এমন মুখোমুখি অবস্থান দেশটির ইতিহাসে বিরল। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যুক্তি উপস্থাপনের পরে, এখন শুধু চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষা।
জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ১৫ পাতার যুক্তিতে বলা হয়, এটা প্রেসিডেন্টের আইনগত উদ্যোগ। আইন মেনেই তিনি এ আদেশ জারি করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা তিনি। দাবি করা হয়, এটা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নয়। প্রেসিডেন্টের আদেশকে এভাবে চিহ্নিত করলে, তা ভুল হবে। যেসব দেশের নাগরিকদের মাধ্যমে মার্কিন মুলুকে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনা রয়েছে, শুধুমাত্র সেসব দেশের মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কোনো সম্প্রদায়ের মানুষকে আঘাত করা হয়নি। এখন সানফ্রান্সিকোভিত্তিক নাইনথ সার্কিট কোর্ট অব আপিলসের তিন বিচারকের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন মার্কিনিরাসহ পুরো বিশ্ববাসী। এ তিন বিচারকের মধ্যে উইলিয়াম সি. ক্যানবি জুনিয়রকে নিয়োগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। বিবিসি, সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ