মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের চূড়ান্ত চুক্তিতে পার্লামেন্টে ভোট আয়োজনের দাবি নাকচ করে দিতে পারেন। ব্রিটিশ সরকারের একটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যম জানায়। এদিকে স্কটল্যান্ডের এমপিরা ইইউর সঙ্গে এডিনবরার তথা স্কটল্যান্ডের পৃথক অভিবাসন চুক্তির পক্ষে মত দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার বিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তিন দিনের বিতর্ক গত সোমবার শুরু হয়েছে। খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র কনজারভেটিভ পার্টি থেকেই দাবি উঠেছে যাতে ব্রাসেলসের সঙ্গে ব্রিটেনের চূড়ান্ত সমঝোতার খসড়াটি পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। ব্রিটেন-ইইউ চুক্তির খসড়া নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে লন্ডনের এমপিরা তাতে মত জানাতে চান। ব্রাসেলসের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না হলে সে বিষয়েও পার্লামেন্টের মত প্রকাশের সুযোগ চান তারা। ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, এমপিদের এমন চাওয়া বাস্তবানুগ নয়। সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে রক্ষণশীল এমপিদের দাবি মানতে আগ্রহী। কিন্তু এ ব্যাপারে এগোতে গেলে ২৭ জাতি ইইউর সঙ্গে আলোচনায় ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমতা হ্রাস পাবে। এমপিদের দাবি মতো এগোতে গেলে ব্রাসেলসের সঙ্গে উপনীত সমঝোতা বারবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এভাবে ব্রিটিশ সরকার এক ধরনের ব্রেক্সিট গহ্বরে পতিত হতে পারে। ব্রেক্সিট চুক্তির বিষয়ে পার্লামেন্টে ভোট গ্রহণের দাবি ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের ভেতরেই নতুন সমর্থন পেতে শুরু করেছে। দলের এক ডজনের বেশি এমপি এ ইস্যুতে চলতি বিতর্কে লেবার পার্টি ও অন্যান্য বিরোধী দলের অবস্থানকে সমর্থন করবেন বলে খবর বেরিয়েছে। গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে প্রবীণ রক্ষণশীল এমপি কেন ক্লার্ক ইইউ থেকে বিদায় নেয়ার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। ইইউতে থাকার পক্ষে আবেগঘন বক্তৃতা রাখেন কেন ক্লার্ক। ইইউ ছাড়ার বিষয়টিকে তিনি ঐতিহাসিক বিপর্যয় বলে অভিহিত করেন। কনজারভেটিভ পার্টির আরো যেসব এমপি ব্রেক্সিটের বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যানা সোব্রি ও নিকি মরগান। তারা চান এমন কিছু না হোক যাতে ব্রিটেনকে ইইউ থেকে ছিটকে বেরিয়ে ডব্লিউটিওর আইনের অধীনস্থ না হতে হয়। রক্ষণশীল দলের এমপি নেইল কারমাইকেল ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ইইউর সঙ্গে ভবিষ্যৎ চুক্তি অথবা সম্পর্কের বিষয়ে শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্টের সঙ্গে গঠনমূলক পরামর্শ চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে ব্রেক্সিট ইস্যুকে ঘিরে স্কটল্যান্ডের অধিকতর স্বায়ত্তশাসনের দাবি জোরালো হচ্ছে। স্কটল্যান্ডের ইউরোপ কমিটি ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াসম্পন্ন হওয়ার পর ইউরোপের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের পৃথক অভিবাসন চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। স্কটিশ পার্লামেন্টের সবক’টি দলের সদস্যকে নিয়ে গঠিত এ কমিটি বলেছে, স্কটল্যান্ডে বসবাসকারী ইইউ অভিবাসীদের জন্য প্রকট ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য পৃথক বন্দোবস্ত হওয়া প্রয়োজন। ব্রিটেনের পার্লামেন্টে উপস্থিত স্কটিশ দলগুলোর এমপিরাও একই রকম আহ্বান জানিয়েছেন।
স্কটিশ পার্লামেন্টের সংস্কৃতি, পর্যটন, ইউরোপ ও বৈদেশিক সম্পর্ক-বিষয়ক কমিটি বলেছে, স্কটল্যান্ডে বসবাসকারী ১ লাখ ৮১ হাজার ইউরোপীয় অভিবাসীর জন্য ব্রেক্সিট বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে। একই কারণে ইউরোপে বসবাসকারী স্কটিশ নাগরিকরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন। কমিটি বলেছে, ইউরোপীয় শ্রমিক না পেলে স্কটল্যান্ডের অর্থনীতিকে ভুগতে হবে। এসব শ্রমিক স্কটিশ শ্রমবাজারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কমিটির আহ্বায়ক ও স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির সদস্য জোয়ান ম্যাকআল্পাইন বলেছেন, ইইউ থেকে অভিবাসন স্কটিশ জনসংখ্যায় ধস ঠেকিয়েছে। বিশেষত কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ ইইউ থেকে এসেছেন। যেকোনো ধরনের হার্ড ব্রেক্সিট গুরুত্বপূর্ণ এ ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীকে স্কটল্যান্ডের বাইরে ঠেলে দেবে। জোয়ান ম্যাকআল্পাইন বলেন, ইইউর নাগরিকরা আমাদের অনেক এলাকায় বাড়ি করেছেন, ব্যবসা গড়েছেন। অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতে তারা অবদান রেখেছেন। আমরা তাই ব্রিটিশ ও স্কটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যাতে ব্রেক্সিটের পর যত তাড়াতাড়ি স্কটল্যান্ডের অভিবাসননীতির একটি ভিন্নতর সমাধানের পথ বের করা যায়। কমিটির উপ-আহ্বায়ক ও স্কটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি লুইস ম্যাকডোনাল্ড বলেছেন, ইইউ নাগরিকরা যে খাতগুলোয় গুরুত্বপূর্ণ শ্রমের জোগান দিচ্ছেন, সেখানে অব্যাহত প্রবেশাধিকার না থাকলে আমাদের অর্থনীতির কয়েকটি খাত কীভাবে ঝুঁকিতে পড়বে, প্রতিবেদনে তার জোরালো প্রমাণ উঠে এসেছে। কমিটির রক্ষণশীলদলীয় দুই সদস্য অবশ্য প্রতিবেদনের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করে বলেছেন, আমরা অভিবাসন ইস্যুতে ভৌগোলিক নয়, খাতভিত্তিক ব্যবস্থাপনার পক্ষে। গত জুনে ব্রেক্সিট গণভোটের আগে ইইউ ছাড়ার পক্ষে প্রচারাভিযানে নেতৃত্বদানকারী রাজনীতিকরা অভিবাসন ইস্যুতে স্কটল্যান্ডকে অধিকতর এখতিয়ার দেয়ার আভাস দেন। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ব্রিটিশ সরকারের শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, ব্রাসেলস থেকে প্রত্যাহূত ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। কৃষি, পরিবেশ ও পরিবহন খাতকে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের সম্ভাব্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখিয়ে শ্বেতপত্রে বলা হয়, এসব খাতে বিধিবিধান প্রণয়নের এখতিয়ার যখন ইইউ থেকে ব্রিটেনে ফিরে আসবে, আমরা তখন এসব ইস্যুতে নতুন আইন ও নীতি প্রণয়নের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকব। আমরা নিশ্চিত করব যাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ব্রিটিশ জনগণের বেশি কাছাকাছি থাকে। যুক্তরাজ্য সরকার বিকেন্দ্রীকরণের প্রতি অঙ্গীকার অব্যাহত রাখবে বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে এটাও বলা হয়, চূড়ান্ত বন্দোবস্ত সেটাই, যা সম্পূর্ণ যুক্তরাজ্যের জন্য প্রযোজ্য হবে। দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।