পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মো: আইঊব আলী বসুনিয়া, লালমনিরহাট থেকে : লালমনিরহাট বাফার সার গোডাউনে ১০ হাজার মেট্রিকটন নিম্নমানের চায়না ইউরিয়া সার ব্যবহারের অযোগ্য। নিম্নমানের সার না নিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছে বিসিআইসির ডিলাররা। কৃষকরাও নিচ্ছে না এ নষ্ট সার। নিম্নমানের সার আমদানি করায় ১৪ কোটি টাকা লোকসানের মুখে সরকার। বাফার গোডাউনে ইনচার্জ হানিফ মিয়ার সাথে কিছু ডিলার সিন্ডিকেটের কারণে সরকার পড়েছে ক্ষতির মুখে। আমদানিকারকরা গোডাউন ইনচার্জ সাথে টাকার বিনিময়ে যোগসাজসে রাতের আঁধারে নিম্নমানের ইউরিয়া গোডাউনে ঢোকার কারণে সৃষ্টি হয়েছে এ সমস্যার।
সরেজমিন বিসিআইসি সরকারি সার গোডাউনে গিয়ে দেখা গেছে নিম্নœমানের সারের চিত্র। গোডাউনের চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে সরকারের ভুতর্কি দিয়ে আমদানি করা সার বস্তা। চলছে গোডাউন ইনচার্জের সাথে কিছু বিসিআইসির ডিলারের সিন্ডিকেট ব্যবসা। বোরো মৌসুমে কৃষকের বাম্পারফলনে সরকার প্রতি বছর ভর্তুকি দিয়ে চায়না, মিশর থেকে ইউরিয়া সার আমদানি করে। ভর্তুকি দিয়ে চায়না থেকে সার আমদানি করলেও সারগুলো ছিল নিম্নœমানের ইউরিয়া। ব্যবহারের অযোগ্য হওয়ায় এ সার পড়ে থাকে গোডাউনে। নতুন করে সার আসলেই পড়ে সিন্ডিকেটের হাতে। কিছু কিছু বিসিআইসির ডিলার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গোডাউন ইনচার্জ হানিফের সাথে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নতুন করে আসা ইউরিয়া সার গুলো দ্রæত ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। ফলে পুরাতন সারগুলে পড়ে থেকে হয়ে পড়ে ব্যবহার অযোগ্য। বাকি ডিলাররা পাচ্ছেন না ভালো সার। গোডাউনে নতুন করে সার সিন্ডিকেট নেয়ায় পড়ে থাকা সারগুলো ব্যবহারের আরো অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ওই সার বিতরণ না করায় সরকার পড়ছে লোকসানের মুখে। কৃষকরা নিচ্ছে না সেই সার। কৃষকরা সার না নেয়ায় পচা-জমাটবাঁধা সার নিয়ে বিপাকে পড়েছে ডিলাররা। বাফার সার গোডাউনে পড়ে রয়েছে চায়না থেকে আমদানি করা হাজার হাজার বস্তা নষ্ট সারের স্ত‚প। বিসিআইসির সার ডিলার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাহের ট্রেডার্সের আবু তাহের জানান, গোডাউন ইনচার্জকে ম্যানেজ করে সিডিকেটের মাধ্যমে নতুন সারগুলো বিতরণ করায় পুরাতন সার ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এর কারণে চায়না থেকে আনা ইঊরিয়া সার জমাটবাঁধা হয়ে গেছে। বিসিআইসির সার ডিলার কাজী শাহাজাহান জানান, জমাটবাঁধা সার পরিবর্তন করে ভালো সার না দিলে সার সঙ্কটে পড়বে বোরো চাষাবাদে কৃষকরা। চায়না থেকে আমদানি করা ১০ হাজারের বেশি মেট্রিকটন ইঊরিয়া সার জমাটবেঁধে রয়েছে, এ সার ডিলার ও কৃষক নিচ্ছে না । দ্রæত এ সার পরিবর্তন করে নতুন ভালো সার সংগ্রহ করা প্রয়োজন। জেলায় বোরো মৌসুমে ৬ হাজার ৩১মেট্রিকটন ইউরিয়া সারের চাহিদা থাকলেও রয়েছে ২৬হাজার মেট্রিকটন সার। তার মধ্যে ১০ হাজার মেট্রিকটন শক্ত ও জমাটবাঁধা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সরকারিভাবে বিসিআইসির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে বিদেশ থেকে ইউরিয়া সার আমদানি করে। বিসিআইসির কর্মকতার্দের ম্যানেজ করে আমদানিকারকরা চায়না থেকে নিম্নমানের সার আমদানি করে চাপিয়ে দিচ্ছে বাফার গোডাউনে। ইনচার্জদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোডাউনে নিম্নমানের সার প্রবেশ করায় সৃষ্টি হচ্ছে সমস্যার। লালমনিরহাট বাফার গোডাউনে ইনচার্জ আব্দুল হানিফ ওই আমদানিকারকদের সাথে যোগসূত্র করে নিম্নমানের সার নেয়ায় গোডাউনে অনেক সার পচে গেছে আবার অনেক সার শক্ত জমাটবাঁধা হওয়ায় সার নিয়ে বিপাকে পড়েছে বাফার ৫১জন বিসিআইসির ডিলার। সার কৃষকরা না নেয়ায় ডিলাররা এ নিম্নমানের সার নিয়ে পড়েছে বিপাকে। মহেন্দ্রনগর বাফার’ গোডাউনে ১০ হাজার মেট্রিকটন ইউরিয়া সার নিম্নমানের হাওয়ার কারণে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। কৃষকরা এ নিম্নমানের সার না কেনায় ডিলাররাও তুলছে না। পড়ে রয়েছে গোডাউনের ২নম্বর গোডাউনের ১-২ নং গলিতে। এতে করে সরকারের ১৪ কোটি টাকা লোকসানের মুখে। নষ্ট সার গুলো পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। সারপুকুর এলাকার কৃষক নছিমুদ্দিন হোসেন জানান, ওই ইউরিয়া সার দলা,জমাট বাঁধা শক্ত ও লালশে হওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়। এ ছাড়াও জমাটবাঁধা সার যে স্থানে পড়ে সেই স্থানের ফসল নষ্ট হয়ে পড়ে । বোরো চাষি রহমত আলী জানান, জমাটবাঁধা ও পচন ধরায় এ নিম্নমানের ইউরিয়া সার ক্ষেতে দিলে লোকসান হয় এ জন্য নষ্ট চায়না সার জমিতে দেই না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিআইসির কয়েকজন ডিলার অভিযোগ করেন গোডাউন ইনচার্জ আব্দুল হানিফের সাথে যোগসাজোস করে গোডাউনে নিম্নমানের সার আনায় ডিলাররা এ সার নিয়ে বিপাকে পড়েছে। লালমনিরহাট মহেন্দ্রনগর বাফার গোডাউন ইনচার্জ হানিফ মিয়া জানান, কয়েক হাজার মেট্রিকটন সার জমাটবেঁধে নষ্ট হয়। এ সার উপর মহলের নির্দেশে গোডাউনে নেয়া হয়েছে। সার নষ্ট বিষয়ে বাফার ঊর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়েছে। আমার কোনো দোষ নেই। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষণ রায় জানান, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।