Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাটকাঠির ছাইয়ে আসছে বৈদেশিক মুদ্রা

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ও মহম্মদপুর উপজেলার রুইজানি এলাকায় দুটি কারখানায় পাটকাঠি পোড়ানো ছাই থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চীনসহ কয়েকটি দেশে পাটকাঠির ছাই থেকে কার্বন পেপার, কম্পিউটার ও ফটোস্টেট মেশিনের কালি, আতশবাজি ও ফেসওয়াশের উপকরণ, মোবাইলের ব্যাটারি, কসমেটিক, দাঁতের মাজন এবং কৃষিকাজের সার তৈরি হচ্ছে বলে কারখানা সূত্রে জানা গেছে। এর থেকে উপার্জিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। সরেজমিন জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল কারখানায় গিয়ে জানা গেছে, এ ছাইয়ের প্রধান আমদানিকারক দেশ হচ্ছে চীন। চার বছর আগে পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে তা রফতানির পথ দেখান ওয়াং ফেই নামের চীনের এক নাগরিক। তাইওয়ান, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশে পাঠকাঠির এ উপকরণ  রফতানি হচ্ছে। আয় হচ্ছে এক হাজার ৫০ কোটি টাকা। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও বাজার ধরে রাখতে পারলে এ খাত থেকে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সহজেই আয় হওয়া সম্ভব বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। মৌসুমে প্রতি মণ পাটকাঠি কিনতে হয় একশ’ ২শ’ টাকা দরে। যখন মৌসুম থাকে না, তখন দাম পড়ে ২শ’ ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা। জুন-জুলাই দুই মাস ছাড়া সারা বছর মিল চালু থাকে। দেশে বর্ষাকাল ও চীনে এই দুই মাস গরমে কারখানা বন্ধ থাকে। একটি কারখানায় মাসে একশ’ থেকে একশ’ ৫০ মেট্রিক টন ছাই উৎপাদন করা হয়। প্রতি টন ছাই বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, চুল্লির মাধ্যমে পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই করা হচ্ছে। পোড়ানোর পর প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্বনগুলো ধরে রেখে প্যাকেট করা হচ্ছে। মাগুরা দেশের অন্যতম পাট উৎপাদকারী জেলা। জেলার মানুষের রান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া, পানের বরজের ছাউনি তৈরিতে ব্যবহার হয় এ পাটকাঠি। এখন ছাই তৈরির মিলে ব্যবহৃত হওয়ায় পাটকাঠির চাহিদা বেড়ে গেছে। ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আনুমানিক ৮১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন পাটকাঠি উৎপাদন হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্লান্টে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। শ্রীপুর উপজেলার নাকোল গ্রামের কৃষক আজিবর রহমান জানান, এখানে এ কারখানা হওয়াতে নিজেদের পাঠকাঠি নিজেরাই বিক্রি করে একবারে অনেক টাকার মুখ দেখছেন। এর আগে পাটকাঠি বিক্রি করে তারা এত টাকা কোনোদিনও পায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাটকাঠির
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ