পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাম চূড়ান্তে বৈঠক আজ
স্টাফ রিপোর্টার : আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করবে আগামীতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ওপর। তাই সাহসী, প্রজ্ঞাবান, দলনিরপেক্ষ, বিবেকবান, পরিশ্রমী ও সমযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করার মত দিয়েছেন চারজন বিশিষ্ট নাগরিক। তাদের মতে, দেশের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের ওপর সংবিধান যে দায়িত্ব দিয়েছে, এই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করার জন্য এমন ধরনের যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা দরকার। তারা আরো বলেন, অনুসন্ধান কমিটি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যে মতবিনিময় করেছেন, এটা খুবই শুভ পদক্ষেপ। এটা ভবিষ্যতে চালু রাখা উচিত বলে বিশিষ্ট নাগরিকেরা মনে করেন। একই সঙ্গে অতীতের মতো অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ করা নাম ও প্রস্তাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে বলেও আশা করেছেন তারা। এ ছাড়াও প্রেসিডেন্ট সুপারিশের বাইরে যাবেন না, এমন প্রত্যাশা করেন।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নির্বাচন কমিশনের জন্য গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে চারজন বিশিষ্ট নাগরিকের মতবিনিময় শেষে এসব মতামত দেন তারা।
বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে সার্চ কমিটির দ্বিতীয় দফায় এ বৈঠক ছিল। বেলা ১১টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনায় অংশ নেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির সবাই উপস্থিত ছিলেন। নাম চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার ৪টায় তারা আবার বসবেন বলেও জানা যায়।
পরে মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, তারা পরামর্শ দিয়েছেন, এমন লোকদের নির্বাচন করতে যাদের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই, যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে, সমাজের সবাই যাকে ভালো হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাদের প্রশাসনিক যোগ্যতা রয়েছে, কাজের দায়িত্ব পালনের জন্য শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা রয়েছে এবং তারা যেন কোনো চাপের কাছে মাথানত না করেন। এমন ব্যক্তিদের সুপারিশ করার জন্য তারা পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নাম থেকে ২০ জনের যে সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য আজ বিকেলে আবার বসবেন সার্চ কমিটির সদস্যরা। যাচাই-বাছাই শেষে সার্চ কমিটি ১০ জনকে চূড়ান্ত করে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রেসিডেন্ট কাছে তাদের নাম সুপারিশ করবেন। এরপর প্রেসিডেন্ট একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যূন পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেবেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মোহাম্মদ আবু হেনা, সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।
পরে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মোহাম্মদ আবু হেনা বলেন, আমরা চারজনই একমত যেÑ নির্বাচন কমিশনার যারা হবেন, তাদের দলনিরপেক্ষ, বিবেকবান, প্রজ্ঞাবান ও পরিশ্রমী হওয়া দরকার। দেশের স্বার্থের জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর সংবিধান যে দায়িত্ব দিয়েছে, এই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করার জন্য এমন ধরনের যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা দরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে আবু হেনা বলেন, আবারো প্রধান নির্বাচন কমিশনার হওয়ার প্রস্তাব পেলে তিনি তাতে সাড়া দেবেন না। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি বিশিষ্টজনদের মতামত গ্রহণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ইতিবাচক একটি সিদ্ধান্ত এবং এটিই কন্টিনিউ করা উচিত।
আবু হেনা বলেন, অনুসন্ধান কমিটি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যে মতবিনিময় করেছে, এটা খুবই শুভ পদক্ষেপ। এটা ভবিষ্যতে চালু রাখা উচিত।
গোলাম সারওয়ার বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই সার্চ কমিটি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। আমি বলেছি, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যার সামান্যতম বিরোধ আছে, তাকে করা যাবে না। আমরা মনে করি, প্রেসিডেন্ট যোগ্য সার্চ কমিটি গঠন করেছেন। আমরা এ-ও মনে করি, সার্চ কমিটি যে নামগুলো প্রস্তাব করবে, প্রেসিডেন্ট সেখান থেকেই পাঁচটি নাম চূড়ান্ত করবেন। প্রেসিডেন্ট প্রতি আমাদের আস্থা আছে।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের প্রতীক। তিনি নরম হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন জিরো হয়ে গেল। আমরা ভারতের দৃষ্টান্তের কথা বলেছি। সেখানে অনেক সময় নির্বাচন কমিশন কারো কথা মানে না। সুতরাং যিনি নির্বাচন কমিশনার হবেন, তার মেরুদ- শক্ত থাকতে হবে। কোনো হুমকিসহ কোনো কিছুকেই তারা পরোয়া করবেন না। তাদের বয়স অবশ্যই সত্তরের নিচে থাকতে হবে।
মাহ্ফুজ আনাম বলেন, আমরা মনে করি, ঐতিহাসিকভাবে এই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব অনেক বড়। যেহেতু আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করবে আগামীতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ওপর। সেখানে আমি বলেছি, সুপারিশের সঙ্গে সঙ্গে তাদের একটা ভিশন থাকা উচিত; এই সার্চ কমিটি ওনাদের প্রজ্ঞার ভিত্তিতে কিছু পরামর্শ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে দেবেন।
আমরা আশা করব, সার্চ কমিটির সুপারিশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গতবারের মতো এবারো প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা কতগুলো হিউম্যান ক্রাইটেরিয়া ও প্রফেশনাল ক্রাইটেরিয়ার কথা বলেছি যে, ওনাদের সৎ হতে হবে, নিরপেক্ষ হতে হবে, সাহসী হবেন, মাথা নত করবেন না। এসবের ভিত্তিতে ওনাদের মনোনীত করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা ব্যক্তির ব্যাপার। উনি নির্বাচিত হওয়ার পর নিরাশ করলে, সার্চ কমিটির অতটা দায় থাকে না।
ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগামীতে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, সেখানে রাজনৈতিক সরকার থাকবে। এখানে চ্যালেঞ্জ থাকবে। হয়তো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে, যেটা আমরা জানি না। থাকলে সেটাকে তাদের অতিক্রম করা, পাশ কাটিয়ে যাওয়া এবং গুরুত্বে না নেয়ার চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, যেভাবে ওনারা নির্বাচন কমিশন গঠন করছেন, আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে সরকার এখানে হস্তক্ষেপ করবে না। পূর্ণ আস্থা আছে, সার্চ কমিটি যে নাম দেবে, সরকার সেখান থেকেই নির্বাচন কমিশন গঠন করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।