পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আলজাজিরা : সিরিয়ার ইদলিব অঞ্চলে প্রায় এক ডজন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামপন্থ’ী ও উগ্রপন্থী গ্রুপের মধ্যে নতুন করে লড়াই হচ্ছে এলাকা দখল ও কর্তৃত্বের লড়াই। তবে একই সাথে এর মধ্য দিয়ে উত্তর সিরিয়ার চির পরিবর্তনশীল জটিলতার প্রকাশ ঘটেছে যেভাবে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নটরা তাদের নীতি ও কৌশলের পরিবর্তন করেন। এসব নট ও তাদের লক্ষ্য প্রায় মাসিক ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়, যা গত সপ্তাহে একদিকে সাবেক আল কায়েদার সিরিয়া শাখা জাবহাত ফাতেহ আল-শাম (জেএফএস) এবং অন্যদিকে স্বতন্ত্র ইসলামী আন্দোলন আহরার আল-শাম (এএস) ও আধা ডজন ক্ষুদ্র মিত্রের সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করবে।
জেএফএস আহরার আল শামের ঘনিষ্ঠ জইশ আল-মুজাহেদিনসহ কয়েকটি ক্ষুদ্র ইসলামপন্থ’ী গ্রুপের ওপর হামলা করার পর গত সপ্তাহে তাদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। জেএফএস তাদের বিরুদ্ধে আস্তানায় রাশিয়া-তুরস্ক-ইরান আয়োজিত রাজনৈতিক বৈঠকে যোগদানের মাধ্যম সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিপ্লব বিক্রির অভিযোগ আনে। তারা বিদেশী পক্ষের কাছে জেএফএসের অবস্থানের খবর পাচার ও তাদের সহযোগিতা করার জন্যও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে অভিযুক্ত করে যারা সম্প্রতি জেএফএসের অবস্থানে বোমাবর্ষণ করে।
কয়েকটি ক্ষুদ্র ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গ্রুপ অনেক বেশি শক্তিশালী জেএফএসের হাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দ্রুত এএসের সাথে জোট বাঁধে। বিনিময়ে এএস তাদের জেএফএসের হামলা থেকে রক্ষার অঙ্গীকার করে। এই আন্তঃইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার আংশিক কারণ হচ্ছে আলেপ্পো ও অন্যান্য শহরে তাদের পরাজয় ও অপসারণ। এটা তাদেরকে ইদলিব অঞ্চলে ঠেলে দিয়েছে।
এ পরিস্থিতি কয়েক ডজন ছোট ও ক্রমবর্ধমানভাবে দুর্বল হয়ে পড়া বিদ্রোহী গ্রুপকে, তারা ধর্মনিরপেক্ষ বা ইসলামপন্থী যাই হোক, তাদেরকে যে অনিবার্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্মুখীন করে তা হচ্ছে : বাশার সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার পাশাপাশি তারা কি কট্টরপন্থী জেএফএসের পক্ষ নেবে ও একটি মিনি-ইসলামী রাষ্ট্র বা আমিরাত প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করবে নাকি তারা ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি জোটের অংশ হিসেবে থাকবে ও শক্তিশালী ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গ্রুপ এএসের ঘনিষ্ঠ হবে যারা নিজেদের বাস্তববাদী বলে প্রদর্শন করে ও জেএফএসের চেয়ে যাদের স্থানীয় অবস্থান শক্ত।
আলেপ্পো উত্তর উভয় সঙ্কট
বিদ্রোহী গ্রুপগুলো এখন এ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এ কারণে যে রাশিয়া, ইরান ও হেজবুল্লাহর সফল সহায়তায় বাশার আল আসাদের আলেপ্পো পুনর্দখলের পর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়রা উত্তর সিরিয়ায় তাদের সমগ্র রাজনৈতিক ও সামরিক সমীকরণের পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
তুরস্ক ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও তুরস্ক সীমান্তে অধিকতর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী কুর্দি গ্রুপগুলোর সাথে যুগপৎ লড়াইয়ের পাশাপশি উত্তর সিরিয়ায় স্থানীয় মিত্রদের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র জেএফএসসহ কিছু সশস্ত্র গ্রুপের বিরুদ্ধে তাদের হামলা জোরদার করেছে। অন্যদিকে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরান একটি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে গোটা সিরিয়ার যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে একটি নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে। রাশিয়া-তুরস্কের মধ্যস্থতায় আলেপ্পো লড়াই ও অবরোধের সাফল্যজনক অবসানের পর এ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এসব ঘটনা জেএফএস ও এএসকে কোণঠাসা করে ফেলেছে যারা নিজেদেরকে সিরিয়া সরকার এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও বিশ^শক্তির বিমান ও স্থল হামলার পরবর্তী প্রধান লক্ষ্য হিসেবে দেখছে। এ দু’টি গ্রুপ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একসাথে কাজ করেছে এবং প্রধানত সিরিয়া সরকার বা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তারা ২০১৫ সালের গোড়ার দিকে এক বৃহৎ জোট গঠন করে ও ইদলিব জয় করে।
আস্তানা বৈঠকে তাদের কেউই যোগ দেয়নি। এর ফলে তারা তুরস্ক, রাশিয়া, ইরান বা আমেরিকার বোমাবর্ষণের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
ধর্মনিরপেক্ষ, ইসলামপন্থী বা উগ্রপন্থী নির্বিশেষে সকল ক্ষুদ্র সিরীয় বিদ্রোহী গ্রুপ এখন একই উভয় সঙ্কটের সম্মুখীন : তারা যদি যুদ্ধবিরতি ও তার ফলে রাজনৈতিক সমঝোতার পরিণতিতে একটি নয়া সংবিধান প্রণয়নের আলোচনায় যোগ দেয় তাহলে জেএফএস ও অন্যান্য কট্টরপন্থী গ্রুপগুলোর হামলার সম্মুখীন হবে। আর তারা যদি রাজনৈতিক আলোচনায় অংশ না নেয় তাহলে সিরীয় সরকার ও অন্যান্য বিদেশী শক্তির সামরিক হামলার শিকার হবে। এক্ষেত্রে তারা এমন মারাত্মক সামরিক সমীকরণের সম্মুখীন হবে যার পরিণতি হবে গুরুতর।
তুরস্কের সংশ্লিষ্টতা
এ সমীকরণেেক জটিল করে তুরস্ক সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে আইএস ও উত্তর সিরিয়ায় স্বায়ত্তশাসন লাভে ইচ্ছুক কুর্দি গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ে যোগদানের জন্য প্রলুব্ধ করছে। এর বিনিময়ে তারা এক বিকেন্দ্রীকৃত নতুন সিরিয়ায় তাদের প্রতি তুরস্কের সমর্থন ও ভবিষ্যতে সম্ভাব্য সুরক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেবে।
এটা সে সমস্যাকেই তুলে ধরেছে সিরিয়ার শত শত বিদ্রোহী গ্রুপ ২০১২ সাল থেকে যাতে আক্রান্ত। যতক্ষণ না তারা ঐক্যবদ্ধ হবে ও সকলে মিলে একসাথে কাজ না করবে, ততদিন তারা তাদের চেয়ে অনেক বেশি গুণে উন্নত শত্রুর সহজ শিকার হতে থাকবে তা সে সিরিয়া সরকার, তাদের বিদেশী সমর্থকরা, তুরস্ক বা যুক্তরাষ্ট্র যেই হোক।
এই বাস্তবতাই বলে যে, জেএফএস ও এএস কেন ছোট ছোট গ্রুপগুলোকে তাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে নইলে তাদের ধ্বংস করে দিতে চাইছে।
গত সপ্তাহে বিশেষ করে জইশ আল-মুজাহিদীনের ওপর হামলা সম্ভবত নিজের শক্তি বলয় সংহত করতে জেএফএসের দীর্ঘ অভিযানের শুরু মাত্র। এএস এর বিপরীতে জেএফএসের হামলা বা হুমকির সম্মুখীন জইশ আল মুজাহিদীন, সুকুর আল শাম, ফায়লাক আল শাম ও অন্য ছোট ছোট গ্রুপকে রক্ষা করে তার পক্ষপুটে নিয়ে আসছে।
তারা যেই শক্তিশালী হয়ে আবির্ভূত হোক না কেন আইএস, সিরিয়া সরকার ও বৈদেশিক শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে অনিবার্যভাবে তাকে লড়াই করতে হবে। কোনো কোনো গ্রুপ বর্তমান পরিস্থিতিতে সাড়া দিয়ে ধীরে ধীরে সামরিক পন্থা থেকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের দিকে অগ্রসর হতে পারে এ আশায় যাতে আগামী দিনে পুনর্গঠিত সিরিয়ার নতুন প্রেক্ষাপটে তারা টিকে থাকার একটি জায়গা করে নিতে পারে। কী ঘটবে, তা আগামী মাসগুলোতে জানা যাবে যখন নতুন পরিস্থিতি, নট, কৌশলের নিশ্চিত আবির্ভাব ঘটবে যেমনটি দেখা গেছে গত কয়েক সপ্তাহে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।