মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে জারিকৃত অভিবাসননীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিশ্বাসঘাতকের আখ্যা পেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বিশ্বাসঘাতকতা করায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করেছেন। গত শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে তিন মাসের জন্য ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি শরণার্থী কর্মসূচি চার মাসের জন্য স্থগিত করেন তিনি। প্রশাসনের শরণার্থী সীমিতকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন নবনির্বাচিত এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এই আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মুসলিমদের বদলে খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেয়ার কথা বলা হয়।
ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্যালি ইয়েটসকে বারাক ওবামার সময়কালে নিয়োগ করা হয়েছিল। অভিবাসন-সংক্রান্ত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বলবৎ না করতে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের আদেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেজন্য তাকে বরখাস্ত করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল তার দপ্তরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এর আগে এক চিঠিতে ইয়েটস বলেছিলেন, অভিবাসন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে আদেশ জারী করেছিলেন সেটি আইনসঙ্গত নয়। তিনি বলেছিলেন, যতক্ষণ ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আছি, ততক্ষণ পর্যন্ত জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের পক্ষে কোন যুক্তি তুলে ধরবে না। হোয়াইট হাউজ বলছে, এ ধরনের অবস্থানের মাধ্যমে মিস ইয়েটস তার অফিসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। নির্বাহী আদেশের প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হয় মুসলমানরা। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। সংস্কৃতি কর্মীরা এর প্রতিবাদ জানান। নোবেল বিজয়ী শিক্ষা অধিকারকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ট্রাম্পের এ নিষেধাজ্ঞাকে মুসলিমবিরোধী নিষেধাজ্ঞা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করছেন। সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির যে নির্বাহী আদেশে তিনি স্বাক্ষর করেছেন, সেই আদেশের কারণেই তিনি এই মামলা দায়ের করতে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার কাল (৩১ জানুয়ারি) এ খবর দিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি। খবরে বলা হয়, গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এই মামলার ঘোষণা দিয়েছেন ওয়াশিংটনের অ্যাটনি জেনারেল ফার্গুসন। ট্রাম্পের কোনও প্রশাসনিক নীতির কারণে তার বিরুদ্ধে তিনিই কোনও অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে মামলা ঠুকছেন। গত শুক্রবার সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। এই আদেশ ৯০ দিনের জন্য প্রযোজ্য হবে বলে বলা হয়েছে ওই আদেশে। ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত এই নির্বাহী আদেশকে অ-আমেরিকানসুলভ ও বেআইনি অভিহিত করে রবিবার দেশটির ১৬ জন অ্যাটর্নি জেনারেল একটি যৌথ বিবৃতি দেন। ওই ১৬ জন অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে ফার্গুসন একজন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার এই আদেশের প্রতিবাদে গোটা আমেরিকা মুখর হয়েছে। যদিও ট্রাম্প বারবার বলছেন, আমেরিকান জনগণ ও মার্কিন স্বার্থের বিরোধী উগ্রপন্থিদের হাত থেকে আমেরিকাকে সুরক্ষিত রাখতেই তিনি এই আদেশে সই করেছেন। ফার্গুসন জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই মামলাটি তিনি দায়ের করবেন মার্কিন স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরের পর (বাংলাদেশ সময় সোমবার দিবাগত মধ্যরাত)। সিয়াটলের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা হবে এই মামলা। ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের মূল বক্তব্যকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার দাবি করা হবে মামলায়। এই আদেশ কার্যকর সাময়িকভাবে স্থগিত করার দাবিও জানানো হবে মামলায়। এক সংবাদ সম্মেলনে ফার্গুসন বলেন, এটা (মুসলিম নিষেধাজ্ঞার আদেশ) অ-আমেরিকানসুলভ, এটা ঠিক নয় এবং এই আদেশ টিকবেও না। নিউইয়র্ক টাইমস, এপি, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।