পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলে এই বছর ব্যাপক ভুট্টার আবাদ হয়েছে। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকায় কৃষকের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে। এ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন নদী বিধ্বস্ত। এই ৬টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে লোকজন তাদের জমা-জমিতে বিভিন্ন প্রকার রবি ফসলের চাষাবাদ করেছেন। আবাদের লক্ষণ মোটামুটি ভাল। রবি ফসলকে ঘিরে নদী গর্ভে নিঃস্ব হওয়া হাজার হাজার মানুষের মুখে এখন সুখের হাসি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছরে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর। সরিষা ৪২০ হেক্টর, ডাল জাতীয় ১৩০, মরিচ ১১০, রসুন ৭৫, আলু ১ হাজার ২৫০, ধনিয়া ২০, তিল ১০, তিসি ২০, ভুট্টা ১ হাজার ২৫০, মিষ্টি আলু ৬৫, পিঁয়াজ ৩৫০, চিনা ২০, কাউন ২৫, চিনা বাদাম ৬০, মৌরি ৬, কালো জিরা ১০, ক্ষিরা ১২, আখ ৪০, শাক-সবজি ৫৬০, মাসকালাই ৬৫ হেক্টর। তিস্তা নদীর করাল গ্রাসে হাজার হাজার পরিবার আবাদী জমি, বসতবাড়ী হারিয়ে নিঃস্ব হয়। এই নিঃস্ব পরিবার গুলো বাঁচার তাগিদে তাদের বংশীয় ঐতিহ্য ত্যাগ করে রিকসা, ভ্যান চালাকসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শ্রম বিক্রি করছিল। কিন্তু নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় জেগে উঠে ছোট ছোট অসংখ্য বালু চর। এই চরে রবি ফসল চাষ করা যায় নির্ভয়ে। তাই রবি মৌসুমে কৃষকরা ব্যাপক চাষাবাদে মাঠে নেমেছে কোমড় বেঁধে। নদীর ধু-ধু বালু চরে যেখানে যে ফসল প্রযোজ্য তাই চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। আবাদের ফলন খুব ভাল হওয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এই বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩ হাজার ৭০০ কৃষকের প্রত্যেককে এক বিঘা জমি চাষের কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। উপকরণের মধ্যে রয়েছে সার ও বীজ। পুণর্বাসনের মধ্যে ৯০০ জন কৃষককে সরিষা, ১ হাজার ৪০ জন কৃষককে গম, ১ হাজার কৃষককে ভুট্টা, ৪৬৫ কৃষককে মাসকালাই, ২১০ কৃষককে শাক-সবজি ও ২০ জন কৃষককে মুগ ডালের বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। গত বন্যায় আমন ক্ষেতের বীজতলা নষ্ট হওয়ায় যে সমস্ত জমি পতিত পড়েছিল সে গুলোতে আগাম করে রবি ফসল চাষ করেছে কৃষকরা। তাদের আসা আমনের লোকশান যেন রবিতে উঠে আসে। বিশেষ করে কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছে ভুট্টা চাষের উপর। কারণ ভুট্টা চাষে অধিক লাভ হয়। এই বছর এনকে-৪০, প্যাসিফিক-৯৮৪, হাইব্রিড সুপার-৭০২ ও ডন-১১২ জাতের ভুট্টার আবাদ হয়েছে বেশি। পূর্ণবাসনের পাশাপাশি রাজস্ব অর্থায়নে ৫০টি ভুট্টার পরিদর্শনী করা হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ মণ করে ভুট্টার ফলন হয়। তালুক বেলকা চরের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, এই বছর এক বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। কম খরচে অধিক ফলন পাওয়া যায় এবং লাভজনক ফসল হওয়ায় ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুঁকছি। ভুট্টার পর একই জমিতে সঠিক সময়ে তোষা পাট লাগানো যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, রবি ফসলের ৭০ ভাগই চরাঞ্চলে চাষাবাদ হয়। কৃষকের হাতে উপযুক্ত সময়ে কৃষি উপকরণ ও পরামর্শ পাওয়ার কারণে লাভজনক আবাদ ভুট্টার চাষ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। কৃষকের আশা-ভরসার শেষ সম্বল এ চর যেন আর ভাসিয়ে না নেয় সর্বনাশা তিস্তা নদী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।