Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিশ্বব্যাপী ফুঁসে উঠছে ট্রাম্প-বিরোধী ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ট্রাম্পের বিতর্কিত নিষেধাজ্ঞা সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন
স্থানে হয়রানির শিকার হচ্ছে মুসলিমরা। গণবিস্ফোরণের আশঙ্কা
ইনকিলাব ডেস্ক : ৭ দেশের মুসলিম নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী ট্রাম্পবিরোধী ক্ষোভ বাড়ছে। ট্রাম্পের ঘোষিত মুসলিমবিরোধী নিষেধাজ্ঞার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে হয়রানির শিকার হচ্ছেন মুসলমানরা। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একটি মসজিদে হামলা করা হয়েছে। এমন কী বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কোথাও কোথাও রীতিমতো হেনস্থা করা হচ্ছে মুসলমানদের। এতে বিশ্বব্যাপী ফুঁসে উঠছে ট্রাম্প তথা মার্কিন বিরোধী মনোভাব। যে কোনো সময় এর বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কঠোর সমালোচনা করেছেন এসব দেশের নাগরিকরা। অস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন একজন ইরানি শিল্পী। কঠোর সমালোচনা হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। বিশ্বের বিশিষ্টজনেরাও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন ও বিভক্তিমূলক বলে উল্লেখ করেছে। সবমিলে বিশ্বজুড়ে রোষের মুখেও পড়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর) নামের এক বিখ্যাত আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এই আদেশ সংবিধানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আদেশটিকে একটি ফেডারেল মামলা দায়েরের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্পের এ আদেশের মূল উদ্দেশ্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোর ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭ শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে তিন মাসের জন্য ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশের কয়েক ঘণ্টার মাথায় দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য টেক্সাসের একটি মসজিদে আগুন দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে দুই ইরাকি শরণার্থীকে। ওই দুজনের একজন ১০ বছর ধরে ইরাকে মার্কিন সরকারের হয়ে কাজ করছিলেন। অন্যজন এসেছিলেন টেক্সাসে থাকা স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে দেখা করতে। এরইমধ্যে তাদের মুক্তির দাবিতে নিউইয়র্কের একটি আদালতে মামলা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ইরাক ও ইয়েমেনের কয়েকজন নাগরিককে কায়রো থেকে নিউইয়র্কের ফ্লাইটে উঠতে না দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন আরবরা। বিশেষ করে নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশগুলোর যেসব মানুষ যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনা করছিলেন ক্ষোভে ফুঁসছেন তারা। ঘটনাটি ছিল ইজিপ্টএয়ার-এর একটি ফ্লাইটে। ওই ফ্লাইটটিতে করে কায়রো থেকে নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে আসছিলেন এসব যাত্রী। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য বৈধ ভিসা থাকা এসব যাত্রীকে কায়রো বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়। আটকে দেওয়া যাত্রীদের মধ্যে পাঁচজন ইরাকি এবং একজন ইয়েমেনি ছিলেন। পরে তাদের জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর বিপাকে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনা ছিল এমন আরবরা। তারা বলছেন, এটা অপমানজনক এবং বৈষম্যমূলক। ট্রাম্প প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে পারিবারিক সফর কিংবা দাফতরিক কাজে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে তিন মাসের জন্য ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি শরণার্থী কর্মসূচি চার মাসের জন্য স্থগিত করেন তিনি। তবে সব শরণার্থীর বেলায়, কর্মসূচি স্থগিতের মেয়াদ নির্দিষ্ট ৪ মাস হলেও সিরিয়ার ক্ষেত্রে এই মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের। প্রশাসনের শরণার্থী সীমিতকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন নবনির্বাচিত এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এই আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মুসলিমদের বদলে খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়। যে ৭টি দেশকে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, ইরান তাদের অন্যতম। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির মাধ্যমে তেহরান এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে গোটা ইসলামী বিশ্ব এবং সুনির্দিষ্ট করে ইরানকে অবমাননা করেছে।’ শরণার্থী কর্মসূচি স্থগিত ও মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করতে গিয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও খ্যাতনামা ব্যক্তিরা ট্রাম্পের আদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।  সিএনএন, এবিসি নিউজ, এপি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • jamal ৩০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১০:৪২ এএম says : 0
    trump aktu barabari korse
    Total Reply(0) Reply
  • Anwar ৩০ জানুয়ারি, ২০১৭, ২:২৬ পিএম says : 0
    ছোটবেলায় পড়েছিলাম, "অনভ্যাসের ফাটা কপাল চরচর করে"।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

২৯ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ