Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শেয়ারবাজার আস্থা ফিরেছে ব্যাংক খাতে

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : ব্যাংক খাতের ওপর ভর করে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনে লেনদেনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ দখল করেছে এই খাত। অথচ কিছুদিন আগেও নিষ্প্রভ ছিল শক্তিশালী এই খাতটি। দৈনন্দিন লেনদেনে এই খাতটির অবদান ছিল ৬ থেকে ৭ শতাংশ, যা এখন বেড়ে প্রায় ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগের ভালো পরিবেশে রয়েছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক খাতকে নিরাপদ ভেবেই তাদের বিনিয়োগ করেছে। এতে করে ডিএসইর লেনদেন ব্যাংক খাতের ওপর ভর করে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যাংকের পিও ১৫-১৭ মধ্যে অবস্থান করছে, যা বিনিয়োগের জন্য ভালো অবস্থা। এছাড়া সম্প্রতি বেশিরভাগ ব্যাংক পরিচালনা মুনাফা বেশি দেখিয়েছে। আর ব্যাংকগুলোতে আমানতের বিপরীতে এখন মুনাফা কম। এতে করে বিনিয়োগকারীরা এ খাতে ঝুঁকে পড়েছে। তবে অনেক সময় পরিচালনা মুনাফার হিসাবে ভুল থাকে, তাই বিনিয়োগকারীদের সব জেনেশুনে বিনিয়োগে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
পুঁজিবাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গতকালও ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভর করে ডিএসইর লেনদেন ২ হাজার ১৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাতেই ৫১৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে ২২টি খাতে লেনদেন হলেও ব্যাংক খাতের ২৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ খাতের ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ১টি বাদে বাকি ২৮টিরই দর বেড়েছে, আর অপরিবর্তিত ছিল একটি ব্যাংকের শেয়ারদর। কালকের লেনদেন ছিল গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১০ সালের ১৭ মে ডিএসইতে ২ হাজার ৩০৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেয়ারবাজারের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত ব্যাংক খাতের অবদান ২০১১ সালে মোট লেনদেনের ৩০ শতাংশ ছিল। তবে পুঁজিবাজারে ধস ও কয়েকটি ব্যাংক কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ায় পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে ব্যাংকের লেনদেন। ২০১৪ সালে তা আরো কমে দাঁড়ায় ৯ শতাংশে। ২০১৫ সালেও আরো কমতে থাকে।
ডিএসইর গত বছরের মার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাসটিতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওষুধ খাত। মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশই এ খাতটির দখলে ছিল। প্রকৌশল খাতে মার্চ মাসে মোট লেনদেনে ১৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে থাকা বস্ত্র খাতের মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান দাঁড়ায় ১৩ শতাংশ। চতুর্থ স্থানে থাকা জ্বালানি খাতের লেনদেনে ছিল ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।  গত মার্চে ব্যাংক খাতে মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে আসে। তবে আগস্টে এসে তা সাড়ে ৯ শতাংশের মতো হয়।
তবে বর্তমানে আবার আশা ফিরেছে ব্যাংক খাতে। গতকাল এ খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ট্রানজেকশনের ২৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ ৯ নিয়ে প্রকৌশল খাত। তৃতীয় থাকা জ্বালানি খাতের লেনদেন ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চতুর্থ স্থানে বস্ত্র খাতের মোট লেনদেনে ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১০ ও ২০১১ সালে ব্যাংক যে পরিমাণ মুনাফা বিনিয়োগকারীদের দেয় পরবর্তী সময়ে আর দিতে পারেনি। যে কারণে ব্যাংক খাতের শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে ব্যাংক খাতের প্রায় প্রতিটি কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগের উপযুক্ত বলেও তারা উল্লেখ করেছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যাংক ভালো মানের লভ্যাংশ দিচ্ছে। তাছাড়া দেশের এ খাতের শেয়ার দাম তলানিতে পড়ে আছে। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও একটি ব্যাংকের শেয়ার দাম ১৮০ টাকার মতো ছিল। ওই ব্যাংকের শেয়ারের দাম এখন ১৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। প্রায় সব ব্যাংকের শেয়ার দাম একই অবস্থানে রয়েছে। তাই আমি মনে করি, এই খাতে বিনিয়োগে ভালো পরিবেশ রয়েছে। এ জন্য  লেনদেন বাড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেয়ারবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ