Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শক্ত অবস্থান নেবে বাংলাদেশ : জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইল ওআইসি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কুয়ালালামপুরে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভা আজ

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : মিয়ানমারের আরাকানের (রাখাইন) রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সামরিক জান্তার জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের রক্ষার উপায় নিয়ে আজ থেকে কুয়ালালামপুরে শুরু হচ্ছে ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন। বাংলাদেশের পক্ষে এ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম।
এ সম্মেলনে শক্ত অবস্থান নেবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধসহ এর টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশ একাধিক প্রস্তাব করবে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত প্রস্তাব করাসহ যৌথ বিবৃতিতে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করবে। এ দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নতুন করে সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা টেকসই সমাধান চাই। যেন এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আরও কোনো রোহিঙ্গা পালিয়ে আসতে বাধ্য না হয়। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না থাকাটাই এই সমস্যার প্রধান কারণ। রাখাইনে মুসলমানদের প্রান্তিকীকরণ করা হচ্ছে। যেটি বন্ধ করারও দাবি জানাবে বাংলাদেশ।
জানা গেছে, বাংলাদেশে অবস্থিত সব রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার বিষয়টি জোরালোভাবে ওআইসির সভায় উপস্থাপন করা হবে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের বিষয়টিও জানাবে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা বিষয়ে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ সভা হচ্ছে এবং এ সভার সিদ্ধান্ত মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যে মিয়ানমার পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
ওআইসিভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূতরা অনানুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতর, জেনেভায় জাতিসংঘের আঞ্চলিক দফতর ও ব্রাসেলসে আলোচনা করেছেন। ওই বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, আমরা এসব বৈঠকে অংশ নিয়ে বুঝেছি, রোহিঙ্গা বিষয়ে সব মুসলিম দেশ একই সুরে কথা বলবে। ওআইসির চার্টারে বলা আছে, অমুসলিম দেশে মুসলিমরা যদি সংখ্যালঘু হয়, তবে ওআইসি তাদের রক্ষার জন্য সবসময় চেষ্টা করবে।
এদিকে গত মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিয়ানমার বিষয়ে ওআইসির বিশেষ দূত সাঈদ হামিদ আলবার বলেন, কম্বোডিয়া ও রুয়ান্ডার মতো যেন এখানে আরেকটি গণহত্যা না ঘটে এজন্য আমরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নতুন করে সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছি।
সাঈদ হামিদ বলেন, গত বছরের ৯ অক্টোবর শুরু হওয়া এ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৮৬ জন নিহত হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে ৬৬ হাজার লোক। তাই এখন আর এটি দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। এখন এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মিয়ানমার নিয়ে মালয়েশিয়ার ‘চাঁছাছোলা’ অবস্থানের সমালোচনা করেন সাঈদ। সাঈদ বলেন, দেশটির উচিত ‘উগ্রবাদ ও সহিংসতাকে উসকে না দিয়ে’ নিজেদের রাজনৈতিক সংকটের সমাধানে মন দেয়া।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারে অস্ত্রধারীদের হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। এরপর রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গাদের ওপর শুরু হয় মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর নির্যাতন। মিয়ানমারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করে। কিন্তু  রোহিঙ্গাদের দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার তো করেই না সংখ্যাগুরু বৌদ্ধরা উল্টা এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করে তারা।  



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ