Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষমতায় বসার আগেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে গত ৪০ বছরের ইতিহাসে সব চেয়ে কম জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামীকাল শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৬০ শতাংশ মার্কিন নাগরিকের অপছন্দ নিয়ে হোয়াইট হাউসে এবার ক্ষমতার পালাবদল ঘটছে। জর্জ ডব্লিউ বুশের কাছ থেকে ক্ষমতা নেওয়ার সময় বারাক ওবামার জনপ্রিয়তা ছিল ৮০ শতাংশ। এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্টের জনমত জরিপের ফলাফলে এ তথ্য জানানো হয়। অপর এক খবরে বলা হয়, ক্ষমতায় বসার আগেই নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা দায়ের করেছেন এক মার্কিন নারী। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্প কিংবা তার দলের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ওদিকে, ব্রিটিশ অনলাইন পত্রিকা ইন্ডিপেন্ডেন্টের খবরে বলা হয়, এর আগেও বেশ কয়েকজন নারী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। তবে এমন অভিযোগে মামলা দায়েরের ঘটনা এই প্রথম। ট্রাম্প অবশ্য বরাবরই এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন। এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদীর নাম জানা যায়নি।
এদিকে, জনমত জরিপে মাত্র ৪০ শতাংশ জনগণ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তার প্রশাসনের জন্য পছন্দের যে তালিকা করেছেন, তা পছন্দ করেছে। ওবামার ক্ষেত্রে পছন্দের এই হার ছিল ৭৯ শতাংশ। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার প্রাক্কালে জনপ্রিয়তায় এমন ভাটা থাকলেও ট্রাম্পকে নিয়ে জনগণের মধ্যে একধরনের উচ্চাশা রয়েছে। ৬০ শতাংশ আমেরিকান মনে করে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প খুব ভালো করবেন বা ভালো করবেন। জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ জনগণের প্রত্যাশা, জঙ্গিবাদ দমনে ট্রাম্প ভালো করবেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ের হার অনেক বেশি। জরিপে দেখা গেছে, জনগণের ৬১ শতাংশ ট্রাম্পের নানা সিদ্ধান্তে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান। ওবামা যখন প্রথম দফা ক্ষমতায় আসেন, তখন ৬১ শতাংশ জনগণ তার ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত দেশের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিল। এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে দেখা গেছে, ট্রাম্প ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম পরস্পরের প্রতি বিরূপ বলে মনে করে অধিকাংশ জনগণ। ৫৭ শতাংশ লোক মনে করে, ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমের প্রতি ভালো আচরণ করেন না। অপরদিকে, ৩৮ শতাংশ লোক মনে করে, সংবাদমাধ্যমই ট্রাম্পের সঙ্গে সঠিক আচরণ করছে না।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে অক্টোবর মাসে অ্যাকসেস হলিউড নামের একটি অনুষ্ঠানের ভিডিও প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্প অনুষ্ঠানের উপস্থাপক বিলি বুশকে বলছেন, তিনি নারীদের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলেও নিজে তারকা বলে পার পেয়ে যাবেন। ওই ভিডিও প্রকাশের পর কেবল ট্রাম্পের বিরোধীপক্ষ ডেমোক্রেটই নয়, নিজের রিপাবলিকান শিবিরেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। ওই অনুষ্ঠানে তার করা মন্তব্যের কারণে ক্ষমাও চাইতে হয় তাকে।
অক্টোবর মাসে ওই ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার দিন ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি যা বলেছি এবং যা করেছি তার জন্য অনুতপ্ত। এক দশক আগের যে ভিডিও আজ প্রকাশিত হয়েছে, তা আমার ওই ধরনের আচরণেরই একটি। ট্রাম্প আরও বলেন, আমাকে যারা চেনেন, তারা জানেন, এই কথাগুলো আমার প্রতিনিধিত্ব করে না। তবে যা বলেছিলাম, তা ছিল ভুল এবং তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ওই ঘটনার পর অ্যাকসেস হলিউড অনুষ্ঠানের উপস্থাপক চাকরিচ্যুত হন। রিপাবলিকান নেতা ও হাউজ স্পিকার পল রায়ান ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বয়ে যায় নিন্দার ঝড়। অনেক নারীই তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলতে থাকেন। তবে ট্রাম্প এসব অভিযোগকে তারকাখ্যাতি পাওয়ার উপায় হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং অভিযোগকারীদের মিথ্যাবাদীও বলেন। কোনও নারীকে যৌন হয়রানি করেননি বলেও দাবি করেন। ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো উড়িয়ে দেন। ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পও জোর দিয়ে বলেন, তার বাবা এমন কাজ করার মতো মানুষ নন। ট্রাম্প, তার পরিবার ও নির্বাচনী শিবিরের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও ১০ জনেরও বেশি নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের কথা তুলে ধরেছেন সাংবাদিকদের কাছে। তারা বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প কীভাবে তাদের যৌন হয়রানি করেছেন। তবে তাদের কেউই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেননি। আইনজীবী গ্লোরিয়া অলরেডের মক্কেল সেই কাজটিই করেছেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের তিন দিন আগে। এবিসি, বিবিসি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

২৯ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ