Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেশে এই প্রথম গুম খুনের অপরাধে সাবেক সিওসহ ২৫ র‌্যাব সদস্যের সাজা

| প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : হত্যা, গুম ও অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে দেশে এই প্রথম একই মামলায় ২৫ জন র‌্যাব সদস্যকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয়েছে। গতকাল নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলায় র‌্যাবে সাবেক সিওসহ ২৫ জনকে এ সাজা দেয়া হয়। ফৌজদারী অপরাধে একসঙ্গে এত র‌্যাব সদস্যের সাজার ঘটনা এটাই প্রথম। র‌্যাবের তিন কর্মকর্তাসহ মোট ৩৫ জনকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে র‌্যাবের সদস্যই ২৫ জন। সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ  সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত ২৬ জনকে ফাঁসির দন্ড দেয়া হয়েছে। বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে। দন্ড পাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ২৫ জনই র‌্যাব-১১ এর সাবেক সদস্য। তাদের মধ্যে র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, মেজর অব. আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানাসহ ১৬ জন র‌্যাব সদস্যের ফাঁসির দন্ড হয়েছে। বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।
র‌্যাবের অধিনায়ক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে এর আগে চট্টগ্রামের র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক জুলফিকার আলী মজুমদারের বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তার মামলাটি চট্টগ্রাম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের তালসারা দরবার শরিফের প্রায় দুই কোটি টাকা লুটের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাহিনী থেকে জুলফিকারকে চাকরি হারাতে হয়। গ্রেফতারও করা হয় তাকে।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলা ছাড়া এক মামলায় একসঙ্গে ২৬ জনকে ফাঁসি দেয়ার ঘটনাও নিকট অতীতে নেই বলে জানিয়েছেন নিম্ন ও উচ্চ আদালতের কয়েকজন আইনজীবী। বিডিআর বিদ্রোহের সময় সংঘটিত হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বিডিআরের তিন শতাধিক সদস্যকে ফাঁসির দন্ড দেয়া হয়। এ ছাড়া নাটোরের আওয়ামী লীগ নেতা গামা হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ২১ জনকে ফাঁসির দন্ড দেন।
নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার সাজাপ্রাপ্ত র‌্যাব সদস্যদের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে আছেন। তারা হলেন- চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। আর পলাতক আটজন হলেন- করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন ও কনস্টেবল হাবিবুর রহমান।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেনÑ নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। পরে দু’টি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ।



 

Show all comments
  • shamsulhoques ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ৯:৫৪ এএম says : 0
    comilla je meie ti ke rape kore hotta kora hoiecilo tahader bichar ki bangladeshe hobe?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ