মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের পুলিশ বাহিনী সমস্ত নিয়মকানুন অগ্রাহ্য করার ফলেই পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ভারতের সরকারি জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পুলিশ হেফাজতে কমপক্ষে ৫৯১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ভারতের পুলিশ বাহিনী কিভাবে প্রায়শই গ্রেপ্তারের পদ্ধতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তাদের হেফাজতে এনে তার উপরে অমানবিক অত্যাচার করে খুন করে সেসব নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি ১২১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেসক্লাবে বাউন্ড বাই ব্রাদারহুডÑ ইন্ডিয়াস ফেইলুর টু এন্ড কিলিংস ইন পুলিশ কাস্টডি শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, ১৭টি পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনার মূল্যায়ন করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিশ্চিত হয়েছে যে, প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশ আধিকারিকরা গ্রেপ্তারের নিয়মকে লঙ্ঘন করে নির্যাতিতকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিকিম হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত, বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সম্পাদক কিরীটি রায় ও পুলিশ হেফাজতে মৃত এক ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী রেবা বিবি। রেবা বিবির হাতে প্রতিবেদনের একটি কপি তুলে দেওয়া হয়। মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, ভারতে পুলিশ হেফাজতে প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে পুলিশ আধিকারিকরা কখনো সেটিকে আত্মহনন, কখনো অসুস্থতার কারণে মৃত্যুর ঘটনা বললেও নির্যাতিতের পরিবার কিন্তু সব সময়ই দাবি করেছে, নির্যাতিতের মৃত্যুর মূল কারণ হল তার উপর পাশবিক অত্যাচার। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতে অভিযোগ নথিভুক্তকরণ, গ্রেপ্তার ও অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুনির্দিষ্ট নিয়ম থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পুলিশ আধিকারিকরা সন্দেহভাজন ব্যক্তির উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। বুটের আঘাত, বেল্টের আঘাত বা হাত বেধে ঝুলিয়ে রাখার মত সব ধরণের অত্যাচার করা হয়। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীন বিভাগীয় তদন্তে প্রায় কোনও সময়েই পুলিশকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় না। সাবেক প্রধান বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত বলেছেন, পুলিশের করণীয় সম্পর্কে ভারতের সংবিধানে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ এবং ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের অসংখ্য নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সেগুলিকে মান্য করা হচ্ছে না। ‘মাসুম’র সম্পাদক কিরীটি রায় জানিয়েছেন, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর সঠিক তথ্য পাওয়াই কঠিন। সরকারিভাবে ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় তাতে সব হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা উঠে আসে না বলে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ হেফাজতে মৃত রাজীব মোল্লার স্ত্রী রেবা বিবি জানিয়েছেন, পুলিশের অকথ্য নির্যাতনের ফলেই তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ পুলিশের কাছে তিনি জানতে চাইলে বলা হয়েছে, গলায় মাফলার জড়িয়ে তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেছে। অথচ তাঁর স্বামীর কাছে কোনও মাফলারই ছিল না। পুলিশের কথা মানতে রাজি না হয়ে রেবা বিবি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু এই অভিযোগ করার পর থেকেই তাঁকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে নেবার জন্য। তিনি তাঁকে হুমকি ও ভয় দেখানোর ঘটনা জানিয়ে সরকারের বিভিন্নœ স্তরে চিঠি লিখে সুরক্ষার আবেদন জানালেও কোনও সাড়া পান নি বলে জানিয়েছেন। পুলিশ আইন না মানার ফলে ২০১৫ সালে ৯৭টি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে ৬৭টির ক্ষেত্রে হয় নির্যাতিত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হয় নি নয়তো নির্যাতিত ব্যক্তির গ্রেপ্তারের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে। তামিলনাডু রাজ্যে একজন বিচারক হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে জানিয়েছেন, ভারতের পুলিশ নিজেদের কার্যবিধি মেনে কাজ করেন, ভারতের ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে কাজ করেন না। অন্যদিকে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন সদস্য সত্যব্রত পাল হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে জানিয়েছেন, পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তের উদ্দেশ্যই হল বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়া। ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।