Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪ দশক আগে অণুজীবের উপস্থিতি ছিল মঙ্গলে

| প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্কের যেন শেষ নেই। এরইমধ্যে নতুন দাবি উঠেছে, আরো ৪০ বছর আগেই বিজ্ঞানীরা নাকি মঙ্গলের মাটিতে অণুজীবের উপস্থিতির ইঙ্গিত পেয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল অ্যাস্ট্রোবায়োলজি’র প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোবায়োলজির অধ্যাপক গিলবার্ট লেভিন এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটস অব হেলথের জীববিজ্ঞানী প্যাট্রিসিয়া অ্যান স্ট্র্যাট। তাদের মতে, ১৯৭৬ সালে পৃথিবী থেকে প্রথম যে দুটি রোভার মহাকাশযান ভাইকিং-১ এবং ভাইকিং-২ মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করে সেখান থেকে মাটি তুলে এনেছিল, আর তা পরীক্ষা করে তেমনই প্রমাণ মিলেছিল। অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক গিলবার্ট লেভিন জানান, ভাইকিং-১ এবং ভাইকিং-২ নামের মহাকাশযান দুটি সেই সময় মঙ্গলের মাটি তুলে এনেছিল। তারপর সেই মাটি ল্যাবরেটরিতে পরিশোধিত পানির সঙ্গে প্রচুর জৈব ও অজৈব পুষ্টির সঙ্গে মিশিয়ে রেখে দেয়া হয়। ওই পরীক্ষাটির নাম ছিল ল্যাব্ড রিলিজ (এলআর) এক্সপেরিমেন্ট। এতে দেখার চেষ্টা করা হয়েছিল, মঙ্গলের মাটিতে সত্যি সত্যিই অণুজীব রয়েছে কিনা। অণুজীব থাকলে পানিতে মেশানো পুষ্টি উপাদানগুলো পানি থেকে শুষে নেয়ার কথা লাল গ্রহের মাটির। আর ঠিক সেটাই হয়েছিল। পানিতে মেশানো প্রচুর পুষ্টি উপাদান শুষে নিয়েছিল মঙ্গল থেকে তুলে আনা মাটি। সেগুলোর বিপাক হয়েছিল এবং দ্রবণের রংও পরিবর্তন হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, ওই পুষ্টি উপাদানের বিপাক ক্রিয়ার পর সেই দ্রবণ থেকে তেজষ্ক্রিয় পদার্থের অণু বেরিয়ে আসতেও দেখা যায়। এটাই পরোক্ষভাবে মঙ্গলের মাটিতে অণুজীবের অস্তিত্ব প্রমাণ করে।
এত যুগান্তকারী আবিষ্কার তখন কেন প্রচার করা হয়নিÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ওই দুই বিজ্ঞানী জানান, অন্য দুটি নমুনার মাটি পরীক্ষায় একই ফল পাওয়া যায়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থেকেই গিয়েছিল। এ ব্যাপারে নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরির অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট ক্রিস ম্যাকে জানান, তিনটি পরীক্ষার মধ্যে বাকি দুটি পরীক্ষায় তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো প্রমাণ বা ইঙ্গিত মেলেনি। দ্বিতীয়ত, মঙ্গলের মাটি বা বায়ুম-লে কোনো জৈব পদার্থের সন্ধান মেলেনি তখনো। তাই সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছিল, যদি কোনো জৈব পদার্থের অস্তিত্বই না থাকে মঙ্গলের মাটি বা বায়ুম-লে, তাহলে লাল গ্রহের মাটিতে অণুজীব থাকলে সেগুলো বেঁচে থাকার জন্য বিপাক ক্রিয়া করবে কিভাবে? সেক্ষেত্রে হয়তো কোনো নন-বায়োলজিক্যাল পদ্ধতির মাধ্যমে ওই বিপাক বা মেটাবলিজম ঘটে থাকতে পারে। তবে সেই পুরনো পরীক্ষার ফল নতুন সব তথ্যের আলোকে আবারো বিবেচনায় নেয়া উচিত বলে মনে করেন অধ্যাপক গিলবার্ট লেভিন। তিনি তার গবেষণাপত্রে লিখেছেন, এবার সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে হয়তো ওই পরীক্ষার ফল আবার খতিয়ে দেখা যেতে পারে। লাল গ্রহে পানি ও মিথেনের অস্তিত্ব সাম্প্রতিক অতীতে প্রমাণিত হয়েছে। তাই প্রাণ যে সেখানে পৃথিবীর মতো কোনো পথেই সৃষ্টি হয়েছিল, সেই বিশ্বাস আরো জোরালো হয়েছে আমাদের। তারই আলোকে এবার আমাদের ৪০ বছর আগেকার পরীক্ষাটি আবার খতিয়ে দেখা উচিত। দুজনেরই জোরালো বিশ্বাস, মঙ্গলের মাটিতে এখনো রয়েছে অণুজীবের মতো প্রাণের অস্তিত্ব। অন্তত তাদের গবেষণা তা-ই বলে। ডেইলি মেইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ