নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে চূড়ান্তপর্বে ৪৮টি দেশ খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। ৯ জানুয়ারী সুইজারল্যান্ডের জুরিপে এক সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ব ফুটবলের কর্তা সংস্থাটি। ফিফার এই সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নতুন এই নিয়মের একদিকে আফ্রিকা বা এশিয়ার অনুন্নত ফুটবলে যেমন লাগতে পারে উন্নতির হাওয়া তেমনি ব্যবসায়ীক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বিশ্বের শীর্ষ লিগগুলো।
এবার ফিফার এই সিদ্ধান্তে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ফুটবল লিগ ‘স্প্যানিশ লা লিগা’ কর্তৃপক্ষ। এমনকি ফিফার বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামারও ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। তারা মনে করে, এর ফলে ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই, এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ইউরোপের শীর্ষ লিগ কর্মকর্তাদের সাথে ফিফার আলোচনা করা উচিত ছিল বলে মনে করে তারা।
লা লিগা প্রধান হাভিয়ের তেবাস বলেন, ‘ফিফার এই সিদ্ধান্ত ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই সিদ্ধান্তটি ফিফা ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেয়নি। আমরা এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিযোগিতা বিষয়ক কমিশনার অথবা সুইজারল্যান্ডের প্রতিযোগিতা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে একটি উপস্থাপনা পেশ করব।’
তোবাস বলেন, ‘আমি মনে করি লিগ কর্তৃপক্ষের মতামত তাদের শোনা উচিত কারন বিশ্বকাপের ৭৫ শতাংশ খেলোয়াড়ই বিশাল এই ইউরোপিয়ান লিগে খেলে। দ্বিতীয়ত, ফিফা হল একটা প্রতিষ্ঠান যারা রাজনৈতিক ও খেলাধুলা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু এখন তারা টিভি স্বত্ব থেকে ব্যবসায়ীক বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে যা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই আমি বিশ্বকাপে দল বাড়ানোর পক্ষে নই।’ ফিফা এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক চাপে নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তাবেস।
শুরু থেকেই বিশ্বকাপে দল বাড়ানোর বিপক্ষে ছিল ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন (ইসিএ)। আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বিবৃতি দিয়ে এর বিপক্ষে প্রতিবাদও জানায়। তাদের উদ্বেগের প্রধান কারণ হল তাদের লিগগুলো। এমনিতেই বছরজুড়ে ঠাসা ফুটবল সূচীর কারণে ফুটবলাররা দম ফেলারও ফুসরত পান না, এরপর ফিফার এমন সিদ্ধান্ত তাদের কাছে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে। তারা মনে করে ৩২ দলের বিশ্বকাপই সবচেয়ে উপযুক্ত ফর্মুলা।
একইভাবে ফিফার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে নর্থ এন্ড সেন্ট্রাল আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান কনফেডারেশন (কনকাকাফ)। সমর্থন জানিয়েছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ইএফএ) ও ইউরোপিয়ন ফুটবল গভার্নিং বডি উয়েফা। তবে দুই ইউরোপিয়ান সংস্থার সম্মতির ধরন ছিল একটু অন্ন রকম। উয়েফা তাদের বিবৃতিতে বলে, ‘এটা পরিষ্কার যে বাকি সকল কনফেডারেশন ২০১৬ ফিফা বিশ্বকাপে দল বাড়িয়ে ৪৮ করার পক্ষে। তাই উয়েফাও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন এই ফর্মুলাকে সমর্থন জানানোর।
ইএফএ তাদের বিবৃতিতে জানায়, ‘ফিফার সিদ্ধান্ত আমরা জেনেছি, এখন উয়েফা, ফিফা ও অন্যান্য ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সাথে আমরা আলোচনা করব কিভাবে এটা কাজ করবে।’ জার্মানির পক্ষ থেকেও ফিফার নতুন এই নিয়মকে সরাসরি সমর্থন জানানো হয়নি।
আবার অনেকে মনে করেন টুর্নামেন্ট থেকে আয় বাড়ানোই ফিফার প্রধান লক্ষ্য। ফিফার রিপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এএফপি জানায়, ৪৮ দলের টুর্নামেন্ট হলে ফিফার আয় হবে ৬৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আসন্ন ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে অর্জিত আয় থেকে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি।
তবে, ফিফার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফুটবল ফেডারেশন অস্ট্রেলিয়া (এফএফএ)। সংস্থাটির চিপ এক্সিকিউটিভ ডেভিড গ্যালোপ বিশ্বাস করেন বিশ্বকাপে দল বাড়ানোর ফলে বিশ্বব্যাপি আরো ফুটবলের জাগরণ হবে, বিশেষ করে এশিয়ায়। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া এশিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (এএফসি) অংশ যেখানে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি ঘটছে এবং আমরা আশা করি এই ধারা সামনের বছরগুলোতেও বিশ্বকাপ সম্প্রসারণ পর্যন্ত অব্যহত থাকবে।’ গ্যালোপ বলেন, ‘যেহেতু এশিয়ায় ফুটবল উন্নতির পথে সেহেতু এএফসির সদস্যরা যথার্থভাবেই ফিফা বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ফিফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিশ্বকাপে দল বাড়ানো নিয়ে নিজের মত ব্যক্ত করে আসছিলেন জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। এবার সেটি রূপ নিয়েছে বাস্তবে। এই নিয়মে ৩টি দল করে মোট ১৬টি গ্রুপে প্রথমে অংশ নেবে দলগুলো। এরপর শীর্ষ ৩২ দল নিয় হবে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী নকআউট পর্ব। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলায় বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেন ফিফা প্রেসিডেন্ট। ইউরোপিয়ান ক্লাব কর্তৃপক্ষের এমন মত তাই বাড়াবাড়িই মনে হতে পারে। কারণ বিশ্বকাপে দল বাড়লেও ম্যাচ সংখ্যা ও মোট দিনের দৈর্ঘ অপরিবর্তিতই থাকছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।