পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বেনাপোল অফিস : ভারত সরকার বাংলাদেশি পাট জাতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ হারে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করার এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বেনাপোল বন্দরে। সোমবার সকাল থেকে এ বন্দর দিয়ে মাত্র ৭ ট্রাক পাট জাতীয় পণ্য রফতানি হয়েছে ভারতে। বেনাপোল বন্দরে এ পর্যন্ত ৩৮ ট্রাক পাট জাতীয় পণ্য আটকা পড়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শামসুল হক জানান, এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন একশ’ থেকে দেড়শ’ ট্রাক পাট জাতীয় পণ্য ভারতে রফতানি হতো, নতুন করে শুল্ক আরোপ করে গেজেট প্রকাশের পর বৃহস্পতি ও সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৬ ট্রাক পাট জাতীয় পণ্য রফতানি হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৯১ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য বাংলাদেশ থেকে রফতানি হযেছে বিভিন্ন দেশে ,এর ২০ শতাংশ রফতানি হয়েছে ভারতে।
পাট জাতীয় পণ্য রফতানিকারক’র প্রতিনিধি তৌহিদুর রহমান জানান, বাংলাদেশ থেকে যে সব পাট জাতীয় পণ্য ভারতে রফতানি হয় তার সিংহ ভাগ খোলাবাজারে বিক্রি হওয়াকে এন্টি ডাম্পিং বলা হয়। বাংলাদেশি উৎপাদকরা পাট রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা পাওয়ায় ভারতীয় পাট মার খাচ্ছে এমন অভিযোগ জানিয়ে দেশটির অ্যান্টি-ডাম্পিং অ্যান্ড অ্যালাইড ডিউটিজ (ডিজিএডি) অধিদপ্তর গত অক্টোবরে বাংলাদেশে পাটজাত পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সুপারিশ করে। সুপারিশের পর গত বৃহস্পতিবার ভারতের রাজস্ব বিভাগ এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান ভারতে পাট’র সুতা, চট ও বস্তা রফতানি করতে চাইলে প্রতি মেট্রিক টনে ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
ভারতের এই জাতীয় সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পাট জাতীয় পণ্যের রফতানি কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। খুলনার মুন ইন্টারন্যাশনাল জুট মিলস ও প্রবাল শিপিং লাইন্সসহ অন্তত চারটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান পূর্বের খোলা ঋণপত্র অনুযায়ী মাল রফতানি করেছে ভারতে। তাদের তাদের ৩৮টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে আটকে রেখেছে। প্রবাল শিপিং লাইনস-এর প্রতিনিধি তৌহিদুর রহমান জানান বর্তমানে আরোপ করা শুল্ক দিয়ে আগের দরে মাল পাঠালে ৬০ টন পাটসুতায় তাদের লোকসান হবে ২০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশের অনেক পাটকল ভারতে রফতানির ওপর নির্ভর করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। উচ্চ হারে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের ফলে সেগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বেনাপোল বন্দর কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বাংলাদেশের পাট ও পাট জাতীয় পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার ভারত। সেই বাজারে পাঁচ বছরের জন্য এই শুল্ক আরোপ করা হল। প্রতিবছর ভারতে প্রায় দুই লাখ টন পাটসুতা, বস্তা ও চট রফতানি করে আসছে বাংলাদেশ, যার মধ্যে পাট সুতার পরিমাণ দেড় লাখ টন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন হারে পাট জাতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করায় ভারতের বাজারে প্রতিযোগিতায় টেকা সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।