সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির ক্ষতি ১ দশমিক ৬ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল
এ স আ র শা নু খা ন : সকালবেলা নন্তু ও নন্তুর ছোট ভাই কেবলা ছাগল নিয়ে মাঠে চরাতে গেলো। মাঠে ছাগলগুলোকে ঘাসে বেঁধে দণন ভাই একটা গাছের নিচে গিয়ে বসলো। নন্তুর ছোট ভাই কেবলা বলছে, ভাই আমরা রোজ যে মাঠে এসে ছাগল বেঁধে ঘাস খাওয়াই আর গ্রামের অন্য সবাই তো স্কুলে যায়। তা আমরা যাই না কেন ভাই। কবে যাবো আমরা?
নন্তু বলে, আরে পাগলা আমাগো কি স্কুলে নেবো নাকি? ওহানে পড়ে বড়লোকের পোলাপানেরা।
-ভাই ওরা বড়লোকের পোলাপাইন। বুঝলাম তা আমরা কারা ভাই?
আমরা হলাম গরীব বাপের গরিব পোলাপাইন। আমাদের চোখে ও স্বপ্ন মানায় না খালি খালি। আমাদের স্বপ্ন হতে হবে কিভাবে রোজ ছাগলের পেট ভরা যায়।
-আচ্ছা ভাই ওগোর আব্বা বড় লোক হলো আর আমাগো আব্বা গরীব হলো ক্যান?
ভাইরে আমাগো আব্বার আব্বার আব্বা ছিল দুধওয়ালী। গ্রামের মাইসের গাভির দুধ দোহাতো আর তারা একটু একটু করে দুধ দিতো তাই বাজাওে বেচে আমাগো আব্বারে বড় করেছে।
-ভাই একটা কথা কই! চলো একদিন আমরা স্কুলের পিছনে গিয়ে দাঁড়ায় দাঁড়ায় দেখি যে, স্কুলে কি করে সব্বাই। খুব আনন্দ করে মনে হয়! তাই না ভাই?
আমিতো কোন দিন যায়নি তবে একদিন স্কুল মাঠে বিকালবেলা বল খেলতে গিয়ে ছিলাম। তা স্কুল মাঠে বারান্দা দিয়ে দেখি শুধু দামী দামী চকলেচের আর বিস্কুটের খোসা পড়ে আছে। মনে হয় সবাইরে স্কুল থেকে ওগুলো খেতে দেয়।
এভাবে অনেকদিন ছোট ভাইর আবদারকে পুরণ করতে না পেরে একদিন সকাল বেলা মাঠে ছাগল বেধে দুই ভাই স্কুলের দিকে গুঁঁড়ি গুঁড়ি পায় এগাতে লাগলো। ছোট ভাই কেবলার মুখে আনন্দের ছোঁয়া দেখতে পায় নন্তু। নিজের ভিতরের ভয়কে লুকিয়ে রেখে এগাতে থাকে। মনে মনে ভাবছে নন্তু কি যে হবে। শুনেছি স্যারেরা নাকি খুব মারধোর ও করে। না জানি কি হয়। মাঝে মাঝে ভাবে কোন একটা বুঝ দিতে পারলে কেবলা আর যেতে চাইতো। কেবলার কোন চিন্তা নেই কেননা বড় ভাই তার সাথেই আছে।
চুপি চুপি গিয়ে পৌঁছালো স্কুলের পিছনের রয়না বাগানে। নন্তুর ভিতর কিসের যেন ভয় কাজ করছে।
কেবলা - ভাই ওই যে সবাইরে দেহা যাচ্ছে। সবাই খেলা করছে স্কুল মাঠে।
নন্তু - আস্তে কথা বল। দেখতে পারলে আবার ডেকে নিয়ে মারতে পারে।
বুদ্ধি করে একটি বড় রয়না গাছে উঠে বসে থাকে দুই ভাই। আর দেখে স্কুলের ছেলে মেয়েদের মজার মজার খেলা। মাঝে মাঝে নন্তু কেবলার মুখের দিকে চেয়ে দেখে কেবলা ওদের থেকে খেলা দেখেই মজা পাচ্ছে বেশি। হঠাৎ একসময় ঘণ্টা বেজে উঠলো সঙ্গে সঙ্গে সগোলে দৌড়ে স্কুল ঘরে ঢুকে পড়লো। এবার দুই ভাই গাছ থেকে নেমে আবার মাঠে ছাগলের কাছে গেলো। এভাবে প্রায়ই কেবলা বলে ভাই চলো আর একদিন যায় রয়না গাছে। নন্তু এটা ওটা বলে কাটিয়ে দেয়।কেবলা মাঝে মাঝে মনে মনে ভাবে একা একা যাবে। কিন্তু একা সাহস পায় না।
কেবলা সব সময় কেমন যেন ভাবুকের মত থাকে। নন্তু জানতে চাই কি হয়েছে। কিন্তু কেবলা বলে না।
কেবলা মনে মনে ভাবে কি মজাই না পায় ওরা সবাই। বিকাল বেলা পাড়ার ছেলেদের সাথে বসে বসে তাদের স্কুলের নানান মজার গল্প শোনে এবং খুব মজা পায়। কেবলা রাতে স্বপ্ন দেখে সে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। সবার সাথে খেলছে। খুব মজা করছে। কিন্তু নিষ্ঠুর ঘুম নিমিষে চলে গিয়ে সব মজা গুলোকে স্বপ্ন বানিয়ে দিয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।