পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের দৃশ্য খোদ পুলিশ সদস্যের ধারণকৃত ভিডিওতে সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কিছুটা হলেও টনক নড়েছে দেশটির সরকারের। নির্যাতনের ভিডিও আমলে নিয়ে দেশটির চার পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল দেশটির নেতা অং সান সু চি-র কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে চার পুলিশকে আটক করার কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, যাদেরকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা গেছে তাদের আটক করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের নির্যাতনে আরও যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাওয়া হবে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো এক পুলিশ সদস্যের ধারণকরা ভিডিওর ঘটনাটি ঘটেছে নভেম্বর মাসে। আটককৃতদের মধ্যে ভিডিওতে ধূমপান করতে দেখা যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা জা মিও তাইক রয়েছেন। এর আগে প্রথমবারের মতো সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নিপীড়নের এক ভিডিও আমলে নেয়ার কথা জানিয়ে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছিল মিয়ানমার। রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত নিপীড়নের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে আসা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পুলিশি নির্যাতনের সেই ভিডিওটি তদন্তের আওতায় নেয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছিল, যেসব কর্মকর্তা পুলিশ বাহিনীর আইন লঙ্ঘন করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সাংবাদিক ও তদন্তকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ায় স্বাধীনভাবে নিপীড়নের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা যাবে কিনা, তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ ছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পুলিশি নির্যাতনের ভিডিওতে দেখা গেছে, একটা বিশাল সংখ্যক গ্রামবাসী পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন। আরও দেখা গেছে, এক পুলিশ কর্মকর্তা এক ব্যক্তিকে মারধর করছেন, আর আরেকজন তার মুখে লাথি দিচ্ছেন। এরপর অন্য লোকদেরও লাথি দিতে থাকেন তারা। যে পুলিশ কর্মকর্তা ভিডিওটি ধারণ করেছেন, তিনি তা কবে কীভাবে করেছেন তা জানাতে পারেনি কোনো সংবাদমাধ্যম। ভিডিওটি ধারণ করে তিনি রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের রোষাণলে পড়েছেন কিনা, তাও জানা যায়নি।
গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের মংদোর সীমান্ত চৌকিতে সশস্ত্রদের হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে দেশটির সরকার। শুরু থেকেই নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো ক্ষমতার প্রতিনিধি অং সান সু চির সরকার ও সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ এবং জাতিগত নির্মুল প্রক্রিয়া পরিচালনার অভিযোগ তুললেও ক্ষমতাসীন সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। সু চির দাবি, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা নিয়ে অতিরঞ্জন হচ্ছে। মিয়ানমার সরকার দাবি করছিল, রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী আইন মেনেই কাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী কর্মকা-ের রাখাইন রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন। এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। মিয়ানমারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করে। কিন্তু, সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা তাদেরকে দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার তো করেই না বরং এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করে থাকে। রাখাইন রাজ্যে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরেও চলমান দমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে দায় এড়াতে চাইছে দেশটির সরকার। রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে বলেও দাবি করছে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেই চেনে। জাতিসংঘের অবস্থানও আলাদা নয়। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।