Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির শেষ পর্যায়ে পিয়ংইয়ং

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। সর্বাধুনিক অস্ত্রের উপাদান নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আইসিবিএম রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। বরাবরের মতোই তার এ ভাষণ ছিল আত্মম্ভরিতা, আড়ম্বরপূর্ণ প্রচারণা এবং পশ্চিমা বিরোধিতায় পূর্ণ। কিম জং-উন বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও সামরিক শক্তির কারণে ভয়ঙ্কর শত্রুরা এখানে হস্তক্ষেপের দুঃসাহস করবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার বাহিনী যদি আমাদের নাকের ডগায় পরমাণু হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল এবং যুদ্ধের মহড়া বন্ধ না করে তাহলে উত্তর কোরিয়া তার সামরিক সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা অব্যাহত রাখবে। পারমাণবিক শক্তির সাহায্যে আত্মরক্ষার সক্ষমতা অর্জন করা হবে। উত্তর কোরিয়া ২০১৬ সালে বেশকটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। আগের পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় গতবছর দেশটির এমন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানার মতো পারমাণবিক ওয়ারহেড যুক্ত আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পর্যায় থেকে এখনও কয়েক বছর পিছিয়ে আছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন গতবছর ক্ষুদে পরমাণু বোমার আরও পরীক্ষা চালানোর জন্য দেশটির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিশাল যৌথ সামরিক মহড়া এ নির্দেশ দেয়া হয়। গত মার্চে একটি পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনকালে কিম জং-উন ক্ষুদে পরমাণু বোমা তৈরির দাবি করেন। এ জাতীয় বোমা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে বসানো যায়। তখন কিমের বক্তব্যের সমর্থনে বেশকিছু ছবিও প্রকাশ করে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। তবে এসব ছবি থেকে এ দাবির সত্যতা নিরূপণ করা সম্ভব নয়। বিবিসি বলছে, পিয়ংইয়ং-এর ক্ষুদে পরমাণু বোমা  তৈরির দাবি যদি সত্য হয়, তাহলে তা দক্ষিণ কোরিয়া ও তাদের মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। যদিও পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা দেশটির এ ধরনের প্রযুক্তি সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। পিয়ংইয়ং-এর সরকারি সংবাদমাধ্যমে অবশ্য এর আগেও একই ধরনের দাবি করা হয়েছে। তবে কিম জং-উনের মুখ থেকে এ ধরনের ঘোষণা এটাই প্রথম।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। এ জন্য আলোচনা থেকে শুরু করে অবরোধ আরোপ পর্যন্ত নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে নিভৃতকামী কমিউনিস্ট দেশটির অবস্থানের বিশেষ পরিবর্তন নেই। তারা পরমাণু অস্ত্রের সম্ভার বাড়িয়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া চাইছে, উত্তর কোরিয়া নিজে থেকে শর্তহীনভাবে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ত্যাগ করবে। কিন্তু পিয়ংইয়ং বারবার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পরিত্যাগ করার কোনও ইচ্ছা তার নেই। উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক পারমাণবিক পরীক্ষা ও দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণকে কেন্দ্র করে দেশটির সঙ্গে প্রতিবেশী ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরমধ্যেই ২০১৬ সালের ৭ মার্চ শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ সামরিক মহড়া। এ মহড়াকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক হামলার হুমকি দেয় উত্তর কোরিয়া। কোরিয়ান পিপলস আর্মির সুপ্রিম কমান্ডের পক্ষ থেকে তখন এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি এ মহড়া বন্ধ করা না হয়, তাহলে ওই দুই পরস্পর মিত্র দেশে উপর্যুপরি পারমাণবিক হামলা চালানো হবে। উত্তর কোরিয়ার ন্যাশনাল ডিফেন্স কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শত্রুদের যৌথ সামরিক মহড়াকে স্পষ্টতই পরমাণু যুদ্ধের অনুশীলন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সূত্র: সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স।       



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ