Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জ্যোতিষিদের দৃষ্টিতে ২০১৭ ইং

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

১ জানুয়ারি ২০১৭-এর গ্রহাবস্থান
গ্রহাবস্থ’ান অনুযায়ী ১ জানুয়ারি ২০১৭ ইং ১৮ পৌষ ১৪২৩ বাংলা রোজ রবিবার। মকর রাশিতে চন্দ্র। রাহু, সিংহে, বৃশ্চিকে শনি। ধনুতে-রবি, বুধ, প্লুটো। কুম্ভে নেপচুন, মঙ্গল, কেতু, শুক্র, কন্যায় বৃহস্পতি এবং মীনে ইউরেনাস অবস্থান করছে।

বিশ্ব পরিস্থিতি
ইংরেজি নববর্ষ শুরু রবিবার। রবির সংখ্যা ১ অপরদিকে ২০১৭ এর সংখ্যা হলো ১। তাও রবির সংখ্যা। এই ১+১=২ সংখ্যা হলো চন্দ্রের। সে হিসেবে এ বছর দুই রবির প্রতিষ্ঠা যশ সম্মানের সাথে ধন ঐশ্বর্যের প্রতীক অপরদিকে চন্দ্র হচ্ছে প্রসার ও বিস্তারের প্রতীক।
এ বছর সমগ্র বিশ্বে প্রকাশ পাবে পরিবর্তনের জোয়ার ভাটা, মাহাত্ম্য ও গৌরব। তেমনি চন্দ্রের প্রভাবে নিভে গিয়ে আকস্মিক পরিবর্তন তা লক্ষ করা যাবে। এ বছর সময়ে সময়ে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সংকটের সাথে দ্রব্যমূল্যের লাগাহীন ঊর্ধ্বগতির আগুন যেমন জ্বলবে বিপরীতে আইএসসহ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী দমনে গোটা বিশ্ব এককাতারে মিলিত হয়েও সামান্য হাতেগোনা কয়েক হাজার জঙ্গি গোষ্ঠী দমনে হিমশিম খেতে হবে। মাঝখান থেকে অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। লোকক্ষয়ের মাত্রা শুধু পরিবর্তন ও সুস্থির বর্ষের আশায় দেশ-বিদেশ দিগি¦দিক ছুটবে লাখ মানুষের ঢল। গোটা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাবে, অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের অভাবে মৃতের হার বেশ কয়েক বছরের সীমা ছাড়িয়ে যাবে। বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক সংঘর্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সত্য-মিথ্যা, ধর্ম-অধর্মের যুদ্ধ, বেশ কিছু ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের নেতৃবর্গের অদূরদর্শিতা, হটকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধর্মান্ধ ও নাস্তিকবাদের দৌরাত্ম্য, নারী শিশু নির্যাতন, গুম, হত্যা, লুণ্ঠন, শিরোñেদ, লাশ নিয়ে উল্লাস, মানুষের মাংস বিক্রয়, মুক্তিপণের আশায় আটক ও হত্যা, চোরাকারবারির দৌরাত্ম্য, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদের আমদানি-রপ্তানী ও অপব্যবহার, দেশি-বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ, মাদকদ্রব্যের রমরমা বাণিজ্য, খাদ্যদ্রব্য ও প্রাণদায়ী ঔষধাদিতে ভেজাল। বেশ কয়েকটি দেশে সীমান্ত সংক্রান্ত বিরোধ সংঘর্ষ যুদ্ধবিগ্রহের সাথে সাথে স্বর্ণ, হীরা, প্রতœতত্ত্ব সামগ্রী চুরি, পুরাতন নিদর্শনীয় স্থাপত্য ধ্বংস, চুরি-ডাকাতি, খুন-জখম এমনকি বিভিন্ন দেশ-বিদেশ থেকে জড়ো হওয়া প্রশ্রয়প্রাপ্তদের আচমকা আক্রমণে লোকক্ষয় হবে প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। মারণ ঘাতক ব্যাধিপীড়াসহ নিত্যনতুন অজ্ঞাত দুরারোগ্য ব্যাধির প্রকোপ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনায় বারংবার নাশকতা, গোলাবারুদের পসরা, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, জলস্থল ও আকাশযানে নাশকতা, দুর্ঘটনা বন্যা, ভূমিকম্পন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, পাহাড়ি ঢল প্রভৃতিতে লোকক্ষয়ের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাবে। অবশ্য চন্দ্রের মায়ার প্রভাবে কাটা ঘায়ে প্রলেপ দেবার মতো ক্ষণস্থায়ী শান্ত হবার সম্ভাবনাও অমূলক নয়। এ বছর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, রাশিয়া, জাপান, ভারত, সউদি আরব, কানাডাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক মন্দাভাব দূর হবে। অবশ্য পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরান, মিসর, লেবানন, থাইল্যান্ড, রোমানিয়া, ওমান প্রভৃতি রাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা ভাব ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে। বেকার যুবক-যুবতীরা কর্মের আশায় হন্যে হয়ে ছুটে বেড়াবে। সেই সঙ্গে প্রাণ ও সম্পদহানির মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাবে। ৯ সেপ্টেম্বর রাহুর কর্কটে সঞ্চার ও বৃহস্পতির শুভ প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অশান্তির অনল নিভে যাবে এবং শান্তি বর্ষিত হবে। দেশ বিভাজনের আন্দোলন জোরদার হবে, সেই সঙ্গে আন্দোলনকর্মীরা জয়ী হওয়ায় বিশ্বের বুকে নতুন দু-তিনটি দেশের নাম অন্তর্ভুক্ত হবে। নরওয়ে, ডেনমার্ক, ইতালি, জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, রোম, পর্তুগাল প্রভৃতি রাষ্ট্রের বহুল উন্নতি সাধিত হবে। বাকি প্রায় সিংহভাগ দেশেই কমবেশি অঘটনের ঘটন তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সূচক নিচের দিকে নামতে থাকবে, যার ফলে বিশ্বব্যাংকসহ দাতা দেশগুলো তাদের উদার মনোভাব পাল্টে ফেলবে এবং ওইসব মন্দাক্রান্ত দেশকে উস্কানি দিয়ে ও কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ বাধিয়ে তাদের মহাসর্বনাশ করে ছাড়বে। ফলে ওইসব দেশে খাদ্যাভাবের মাত্রা স্মরণকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু, ব্রাজিল আর্জেন্টিনা, কলাম্বিয়া, বলিভিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে, এঙ্গেলা, ইথিওপিয়া, কেনিয়া বাদে বাকি দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলো যে তিমিরে আছে সেই তিমিরেই থাকবে। এমনকি জাতিগত দাঙ্গা-হাঙ্গামা, নিত্যনতুন ও অজ্ঞাত ব্যাধির প্রকোপে প্রচুর প্রাণহানি শুধু নয় ক্রমশ জীর্ণতার দিকে ধাবিত হবে। ২ মার্চ মঙ্গলের মেষ রাশিতে সঞ্চার অবৈধ অগ্নেয়াস্ত্র গোলাবারুদ ও জাল নোটের রমরমা বাণিজ্য ঠেকাতে বিশ্ব হিমশিম খাবে। আমেরিকা, চীন, জাপান, রাশিয়া, ইসরাইল, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি শক্তিশালী দেশ তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে অটল থেকে বেশ কয়েকটি দেশকে উস্কানি দিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ বাধিয়ে অস্ত্র, গোলাবারুদ, যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ও জাহাজ বিক্রয়ের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে সক্ষম হবে। চীন, ভারত, লিবিয়া, তুরস্ক, মিসর, আইভরিকোস্ট, নামিবিয়া, মাদাগাসকার ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ওমান, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সিংহভাগ দেশে প্রাণদায়ী ঔষধের সংকট দেখা  দিতে পারে  এবং এর ফলে শিশুসহ অগণিত প্রাণহানি ঘটবে।  চীন, জাপান, রাশিয়া ভেনিজুয়েলা, ডেনমার্ক, লন্ডন, জার্মান, বেলারুশ, আয়ারল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, কিউবা প্রভৃতি রাষ্ট্রের জন প্রবৃদ্ধি কমে আসবে। তথাপিও বিশ্বে বহুল উন্নতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ
জ্যোতির শাস্ত্র মতে রবির অবস্থান সাপেক্ষে বাংলাদেশের রাশি ধনু। ১ জানুয়ারি যেহেতু ধনুতে রবি, বুধ, প্লুটো অবস্থান করছে। তাই এ বছর শিক্ষা, গবেষণামূলক কাজ এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বাংলাদেশ প্রভূত উন্নতি করবে। এ দেশের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে প্রচুর সুনাম ও সম্মান অর্জন করবে। মকরে চন্দ্র অবস্থান করায় আর্থিক উন্নতি এবং নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে এ-দেশের নারীরা বিশেষ সম্মানজনক পদ অলংকৃত করবেন। এমনকি দুঃসাহসিক কাজেও নারীদের ভূমিকা প্রশংসিত হবে। দেশের সম্পদ বৃদ্ধি ও আর্থিক উন্নয়ন ঘটবে। কুম্ভে নেপচুন, মঙ্গল, কেতু, শুক্র এবং মীনে ইউরেনাস অবস্থান করায় বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি গুপ্ত শত্রুতামূলক ক্ষতি বা দেশবিরোধী ও গণতন্ত্র-বিরোধী কোনো কার্যকলাপ বাড়তে পারে। ৯ মে থেকে রাহু সিংহে অবস্থান করায় কিছু উচ্চাভিলাষী প্রভাবশালী ব্যক্তি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক কাজে লিপ্ত হতে পরে। এ বছরটি ক্ষতিকর কার্যকলাপ এবং অশুভ শক্তির তৎপরতা বৃদ্ধির ইঙ্গিতবহ। কন্যায় বৃহস্পতি অবস্থান করায় দেশের উন্নতি অব্যাহত থাকবে। আবার বৃশ্চিকে শনির অবস্থান ধর্মীয় উন্মদনা বৃদ্ধি ও দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়। এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশের শুভ সূচনা ঘটবে। গবেষণামূলক কাজ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষিজ ও শিল্প উন্নতির কারণ। বছরের শুরু থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকবে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- অব্যাহত থাকবে। দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে যাবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এমনকি নেতৃস্থানীয় কারো জীবনাশংকা দেখা দিতে পারে। ২২ ফেব্রুয়ারিতে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে পারে। বিরোধীদলীয় আন্দোলন জোরালো হতে পারে। ১৫ মার্চের পর সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। খেলাধুলা, সাহিত্য, সঙ্গীত, শিল্পকলা ও গবেষণামূলক কাজে দেশ প্রভূত উন্নতি করবে। এ বছর ৭ এপ্রিলের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ দেশের কৃতী সন্তানদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হবে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় খেলাধুলা, বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পকর্ম মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এ দেশের প্রভূত উন্নতি হবে। ১৩ জুলাইর পর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তথাপি অর্থনৈতিক উন্নতি ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- অব্যাহত থাকবে। এ বছর সার্কের কার্যক্রম জোরদার হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের ভূমিকা প্রশংসিত হবে। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সুযোগসন্ধানী কোনো মহলের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সরকারবিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দিতে পারে। তবে সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকবে এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। ৫ অক্টোবর কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে। এ বছরের বাকি সময়টা সার্বিক ভালো যাবে। খেলাধুলা সাহিত্য ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেশ বেশ উন্নতির দিকে যাবে। বিভিন্ন দেশে কর্মরত এ দেশের কৃতী সন্তানদের সম্মানজনক প্রাপ্তি হবে। দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে। শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। জনশক্তি রপ্তানি এবং বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হবে। আমদানি-রপ্তানী বাণিজ্যে সফলতা এবং গবেষণামূলক কাজ, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ বাড়বে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেশ ভালো যাবে তথা প্রচুর উন্নতি সাধিত হবে। অবশ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্পন বন্যা, বজ্রপাত প্রভৃতিতে ফসলহানির সাথে সাথে লোকক্ষয়ের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাবে। এ বছর বেশ কয়েকজন দেশবরেণ্য নেতৃবর্গ লেখক, সাংবাদিক, আইনজীবী, ব্লগার ও প্রথম সারির ব্যবসায়ীর জীবনাবসান ঘটতে পারে। দ্রব্যমূল্যের বাজার আকাশচুম্বী হয়ে উঠলেও তা নিয়ে তেমন একটা আন্দোলন হবে না। উপরন্তু মানুষের আয় উপার্জনের পথ খুলে যাবে। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দৃঢ়তা, র‌্যাব, সেনা, পুলিশ, বিজিবি, নৌ, বিমান বাহিনীতে জনবল বৃদ্ধি তথা তাদের দৃঢ়তা ও কুশলতার সাথে দেশপ্রেম জনসাধারণের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে। এ বছর শ্রম জনশক্তি রপ্তানি অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। সেই সঙ্গে পাঠ, বস্ত্র, গার্মেন্ট সামগ্রী, চিংড়ি, কাঁকড়া, চামড়া, রপ্তানিতেও অভাবনীয় সাফল্য আসবে। উচ্চ শিক্ষা ও যোগ্য কর্ম লাভের আশায় বিদেশ যাত্রা বাড়বে। বেকারত্ব দূরীকরণে সরকারি চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও বেকারত্বের হার খুব একটা কমবে না বরং নিয়োগ বাণিজ্য দুর্নীতিতে ছেয়ে থাকবে। বিশ্বব্যাংকের সাথে চীন, জাপান, ভারত, আমেরিকাসহ বেশ কিছু দাতা গোষ্ঠী বাংলাদেশের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন, গ্যাস উত্তোলন, সামুদ্রিক বন্দর প্রতিস্থাপন, সুন্দরবন রক্ষা,  রেললাইনের প্রসার, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মেট্রো রেল প্রকল্প, শিল্প-কলকারখানা চাঙ্গা ও বিমানবন্দর নির্মাণের চেষ্টা অনেকাংশে সফল হবে। যার ফলে দেশে বহু কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

ভারত
বছরের শুরুটা ভারতের জন্য শুভ। এ বছর রাশিয়া ও চীনের সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন হবে। সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে দেশে শান্তি-শৃংখলাও ফিরে আসবে। ৩ মার্চের পরে কিছুটা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম বাড়তে পারে। তবে সরকারের কঠোর পদক্ষেপে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। সার্কভুক্ত দেশসমূহের সাথে সম্পর্কের উন্নতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাড়বে গুরুত্ব। মহাকাশ গবেষণা, খেলাধুলা, আইটি, মেধাবী জনশক্তি রপ্তানী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থান পাবে ভারত। ১১ জুন থেকে দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মাথাচাড়া দিতে পারে। বিশেষ করে মাওবাদী আন্দোলনসহ আসাম, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও বিহারে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বাড়তে পারে। ১৫ আগস্ট থেকে প্রাকৃতিক গোলযোগ, ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। এত কিছু সত্ত্বেও দেশটি উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাবে। এ বছর অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় থাকবে। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং গবেষণামূলক কাজ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশ্বে ভারতের অবস্থান আরো উজ্জ্বল হবে।
দেশের সেনা নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর অফুরন্ত স্বদেশ প্রেম বীরত্ব ও রণকুশলতার সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রতিরক্ষা খাতের প্রচুর উন্নতি বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দেবে। যুদ্ধবিমান, জাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ, প্রাণদায়ী ঔষধ আবিষ্কার, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অসাধারণ উন্নতি, বিভিন্ন পন্থায় গ্রামীণ উন্নয়ন প্রভৃতিতে ভারত অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করবে। সেই সঙ্গে শত্রু ভাবাপন্ন রাষ্ট্রগুলো সংযত আচরণ করতে বাধ্য হবে। বাইরের কোনো শক্তি পাকিস্তানকে মদদ দিয়ে যুদ্ধ বাধিয়ে দেবার চেষ্টা চালাবে। অবশ্য তাতে পাকিস্তানেরই ক্ষতি হবে। দ্রবমূল্যে স্থিরতা, কৃষিজাত দ্রব্যের বাম্পার ফলন, তৈল গ্যাস, রতœ পাথরসহ নিত্যনতুন খনিজ দ্রব্যের সন্ধান, বহুবিধ শিল্পে উন্নতি প্রসার, বৈদেশিক নীতিতে সফলতা, দেশ ও সমাজসেবায় নিয়োজিত, বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে মৈত্রী স্থাপনের প্রচেষ্টা, স্বদেশে উৎপাদিত বহু পণ্য বিদেশে রপ্তানি, দেশের শিল্প কলকারখানার বহু উন্নতি হবে। রপ্তানি বাণিজ্যে চীনের পিছু অনুসরণ, অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের স্বয়ম্ভরতা, প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, রিজার্ভ মানি বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস, বেকারত্ব দূরীকরণে এ বছর বিশ্ব দরবারে ভারতের মর্যাদা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমেরিকা জাপান, জার্মান, ইসরাইল, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন ভারতের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। বিপরীতে চীন-পাকিস্তানের সাথে দূরত্ব বাড়তে পারে। এ বছর বহিঃদেশীয় সন্ত্রাসবাদেরা দেশিও জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে হাত মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপসনালয়ে হামলা করেও খ্যান্ত হবে না, ট্রেন ও প্রশাসনিক স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে। রাহু মঙ্গল শনির কু-প্রভাবে বেশ কয়েকজন বরেণ্য শিল্পী, অভিনেতা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, কলামিস্ট, সাহিত্যিক, গবেষকের জীবন  অবসান ঘটতে পারে।
এ বছর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা, হরতাল অবরোধজনিত কারণে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মেঘালয়, সিকিম, নাগাল্যান্ড, গুজরাট, রাজস্থান প্রভৃতি রাজ্যে প্রাণহানি ও সম্পদ নষ্টের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাবে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে ভারত মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

পাকিস্তান
বছরের শুরুতে পাকিস্তানে সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম বাড়তে পারে। সরকারবিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দেবে, ১৭ ফেব্রুয়ারির পর নেওয়াজ শরিফের সরকার বেশ চাপের মধ্যে পড়বে। এমনকি সেনাবাহিনীর আধিপত্য বাড়তে পারে। এপ্রিলে সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসবে। সার্কভুক্ত দেশেগুলোর সাথে সম্পর্কের উন্নতি এবং বিভিন্ন পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সম্মান অর্জিত হবে। বিশেষ করে খেলাধুলা, মহাকাশ গবেষণা, শিল্প ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশ্বে পাকিস্তানের ভূমিকা উজ্জ্বল হবে। আগস্টে উগ্র জঙ্গিবাদের তৎপরতা এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর কারণে দেশে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বন্যা, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। তবে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে অনেক বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশ রক্ষা পাবে। চীন, ভারত, বাংলাদেশ, আমেরিকা ও ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্কের উন্নতি হবে। একদিকে দেশদ্রোহী জঙ্গি, আইএস ধর্মান্ধ মৌলবাদী চরিত্রের উথান, অপরদিকে প্রশাসনের মধ্যকার সরকারবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধিতে পাকিস্তানের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে। দেশের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, পুরাতন স্থাপত্যসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা হতে পারে। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদের সাথে বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদের আমদানি ও অপপ্রয়োগ মাত্রা অতীতের সীমা ছাড়িয়ে যাবে। জীবন রক্ষাকারী ঔষধের মাধ্যমে বিষক্রিয়া, মাদকদ্রব্য ও জাল নোটের রমরমা বাণিজ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুধীজনেরা স্তম্ভিত ও হতভম্ব হয়ে পড়বে। বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত জঙ্গিগোষ্ঠীরা জিম্মি করে নাশকতা চালাতে পারে। এর ফলে শিশুসহ লোক হতাহত হবে এমনকি বেশ কয়েকটি অঞ্চল জঙ্গি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে। অবশ্য দেশের সরকার আমেরিকা, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশের সহযোগিতা নিয়ে ওই সকল স্থান মুক্ত করার চেষ্টা চালাবে। যার ফলে পাকিস্তানকেও সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানের ন্যায় ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে। সরকার উৎখাতের চেষ্টা চালাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন বরেণ্য রাজনীতিবিদের প্রাণহানি ঘটাতে পারে। তারা খোদ পার্লামেন্টেও আঘাত হানতে পারে। অবশ্য বৃহস্পতির সহায়ক থাকায় সরকার পতনের সম্ভাবনা কম। বাস, ট্রেন, নৌযান আকাশযান দুর্ঘটনায় বহু লোক হতাহত হবে, সেই সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠীর আক্রমণে বিমান ভূপাতিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়, সুনামি ভূমিকম্পন প্রভৃতিতে প্রচুর জানমালের ক্ষতি যেমন ঘটবে তেমনি কৃষিজাত দ্রব্য নষ্ট হওয়ায় খাদ্যাভাব চরমে পৌঁছবে।  মন্ত্রী পরিষদের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর একযোগে পদত্যাগের ফলে মন্ত্রী পরিষদ দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তবে সরকার পতনের সম্ভাবনা কম।

চীন
বর্তমান বর্ষটি চীনের জন্য অপেক্ষাকৃত অশুভ। দেশের সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রতিহিংসাপরায়ণতা বৃদ্ধি পাবে। ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের সীমান্তে সৈন্য-সামন্ত, অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবরুদ, কামান, ট্যাংক বিমান নিয়ে ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারে। দেশটি এমনকি আমেরিকার ন্যায় বেশ কয়েকটি দেশকে উস্কানি দিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ বাধিয়ে দেবার চেষ্টা ও অস্ত্রশস্ত্র বিক্রয়ের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে আনতে পারে। এ বছরের নির্বাচনে দেশের সরকার বদল শুধু নয়, শাসক দলের পরাজিত হবার সম্ভাবনা প্রবল। অবশ্য বৃহস্পতির শুভ প্রভাবে কোন দেশের সাথে যুদ্ধ বাধার কোন রূপ সম্ভাবনা নেই, এটা কূটনৈতিকভাবেই সমাধান হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমনÑ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্পন, সীমাহীন বজ্রপাতে লোকক্ষয় ও ফসল নষ্ট হতে পারে। অপরদিকে দেশের বহু শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে পড়তে পারে। এতে সরকারকে নাজুক অবস্থায় পড়তে হবে। এর ফলে অগ্রগতির সূচক স্থিমিত হয়ে পড়তে পারে। এ বছর রাহু-মঙ্গলের কু-প্রভাবে নিত্যনতুন রোগব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধি, বাস, ট্রেন, আকাশযান দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অমূলক নয়। দেশের বৃহত্তম শেয়ারবাজারের সূচক কমে আসবে। সেই সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্যেও আঘাত হানতে পারে। বেশ কয়েক বছর ধরে বেড়ে ওঠা আর্থিক অগ্রগতিতে বিরুপ প্রভাব দেখা দিতে পারে। মঙ্গল ও শুক্রাচার্যের শুভ প্রভাবে প্রতিরক্ষা খাতের বিনিয়োগ মহাকাশ গবেষণা, ঔষধ আবিষ্কার, ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধজাহাজ, ট্যাংক ও বিমান নির্মাণে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবে। এমনকি মহাকাশে বিমান পাঠানোর বিশ্ব মোড়ল আমেরিকাকেও টপকে যেতে পারে। এ বছর ধর্মীয় উন্মাদনা, জঙ্গিগোষ্ঠী ও উগ্রবাদীদের দাপটে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় লোকক্ষয়ের মাত্রা বাড়বে। এ বছর একাধিক বরেণ্য শিল্পী, গবেষক, লেখক, খেলোয়াড় ও রাজনীতিবিদের জীবন হানি ঘটায় একাধিকবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা আসতে পারে। জনপ্রতিনিধির জীবন হানি ঘটায় একাধিকবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা আসতে পারে। জনপ্রবৃদ্ধি তো নয়ই বরং কমার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে সুনিশ্চিত।

রাশিয়া
বছরে শুরুতে রাশিয়ার সরকার বিভিন্নমুখী চাপে থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে দেশটির ভূমিকা প্রশংসিত হবে। অর্থনৈতিক উন্নতি, খেলাধুলা, শিক্ষা, মহাকাশ গবেষণা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দেশটির ঈর্ষণীয় উন্নতি হবে। তবে আগস্ট/সেপ্টেম্বরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। তথাপি পুতিন সরকারের কূটনৈতিক পদক্ষেপে আমেরিকার সাথে সম্পর্কের উন্নতি ও বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
জুম্ভ রাশির অন্তর্গত রাশিয়ার জন্য বছরটি ক্রমশ সংকীর্ণ তথা জীর্ণতার দিকে ধাবিত হবে। ১লা জানুয়ারি থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাশিতে রাহুর দৃষ্টিপাত ও শনির কুপ্রভাবে রাজনৈতিক অসন্তোষ, ষড়যন্ত্র, গুপ্ত হামলা, জঙ্গিগোষ্ঠী তথা চেচেন বিদ্রোহীদের দৌরাত্ম্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা ও দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা জলোচ্ছ্বাস, ঝড়ঝঞ্ঝা, তুষারপাত, বিভিন্ন অজ্ঞাত রোগ ব্যাধির মহামারী আকার ধারণ করায় ব্যাপক জানমালের ক্ষতি সাধিত হবে। দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেবে। কৃষিজাত দ্রব্য নষ্ট হওয়ায় অগণিত কৃষক আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে। তবে দেশের সরকারের একরোখা মনোভাব বিদেশনীতি, ও প্রতিরক্ষায় লাগামহীন ব্যয় ও জনবল বৃদ্ধি সমগ্র বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবে। দেশের শিল্প-কলকারখানার প্রসার ঘটবে। ইউক্রেন সংক্রান্ত সমস্যার সাথে সাথে রাশিয়ার মধ্যকার আরও দু-একটি দেশ স্বাধীনতা লাভের আশায় কঠোর আন্দোলন চালাবে। অবশ্য ওই সকল রাজ্য নিজেরা নিজেদের পায়ে কুড়াল মারবে। লোকক্ষয় হবে তথাপিও ঘরের ছেলে ঘরে থাকবে। নতুন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না। এ বছর বেশ কয়েকজন বরেণ্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিজ্ঞানী গবেষক ও শিল্পীর জীবনাবসান ঘটতে পারে। দেশের দুর্যোগ-দুরবস্থার ভিতর দিয়ে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন স্বগর্বে মাথা তুলে দাঁড়াবেন। সেই সঙ্গে চেচেন বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠী ও আইএস দমনে বিশ্বনেতাদের সাথে মিলিত হয়ে কঠোর ভূমিকা রাখায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মন জয় করা সহজ হবে। তবে চীন ও আমেরিকার সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র
বছরের শুরুতে বিশ্বের পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নমুখী চাপে থাকবে। দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা এবং বেকার যুবক-যুবতীর সংখ্যা বাড়বে। তবে নতুন সরকারের উন্নয়নমুখী পদক্ষেপে মহাকাশ গবেষণা, খেলাধুলা, শিক্ষা সংস্কৃতি এবং সামরিক ক্ষেত্রে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাধান্য বজায় থাকবে। সিরিয়া, জার্মান এবং ক্রোয়েশিয়া বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা বেকায়দায় থাকবে। রাশিয়া, ইংল্যান্ড, জাপান ও ভারতের সাথে সম্পর্কের উন্নতি ও বাণিজ্য বাড়বে। ৯ নভেম্বর থেকে দেশটিতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বাড়তে পারে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এ বছরটি আমেরিকার জন্য স্মরণীয় তথা রেকর্ড সৃষ্টিকারী বছর হিসাবে গণ্য হবে। দেশের অর্ধাহারে, অনাহারে থাকা মানুষের মুখে অন্ন জুটবে। সেই সঙ্গে বেকারত্বের হার অনেকাংশে কমে আসবে। দেশে নিত্যনতুন শিল্প-কলকারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখবে। কৃষিজাত দ্রব্যের বাম্পার ফলনে খাদ্যে স্বনির্ভরতা ফিরে আসবে। রপ্তানি বাণিজ্যে তেজি ভাব থাকবে। সামরিক শক্তি ও পরমাণু শক্তির ভা-ার চতুর্গুণ বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে মহাকাশ গবেষণা, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও জীবন রক্ষাকারী ঔষধ আবিষ্কারে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবে। গোটা আফ্রিকা মহাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সিংহভাগ দেশে অস্ত্রশস্ত্র বিক্রি ও জীবন রক্ষাকারী ঔষধ রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে দেশটি। শেয়ারবাজার ফুলেফেঁপে উঠবে। নিজ দেশের নাগরিকদের জীবন মানের ক্রমোন্নতি, সার্বভৌম রক্ষা ও বিদেশনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী দমনে বেশ কয়েকটি দেশ মিলিত হয়ে চার-পাঁচটি বা তারও বেশি দেশে সামরিক তৎপরতা চালাতে পারে। রাহু-মঙ্গল ও শনির কু-প্রভাবে আমেরিকার ওপর জঙ্গিগোষ্ঠীর আচমকা আক্রমণ এমনকি বেশ কয়েকটি দেশে অবস্থিত কূটনৈতিক, সাংবাদিক, রাষ্ট্রদূত, সেনা ও মার্কিন নাগরিকদের ওপর আচমকা আক্রমণ হতে পারে। ২ মার্চ মঙ্গলের মেষ রাশিতে সঞ্চার দেশের সামরিক শক্তিকে চাঙ্গা করতে নিত্যনতুন অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবরুদ, যুদ্ধবিমান, ট্যাংক, জাহাজ বরাদ্দ দেবে যা স্মরণকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় প্লাবন, মরুঝড়, আগ্নেয়গিরি, অগ্ন্যুৎপাত, শৈত্যপ্রবাহ ও ভূমিকম্পে জানমালের ক্ষতিসহ ধ্বংস সাধিত হলেও দেশের সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে তা কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে। চীন, রাশিয়া, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, তুরস্ক, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, মঙ্গোলিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্র নিয়ে আমেরিকার মাথাব্যথার কারণ হবে। বিদেশ নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না। সব মিলিয়ে এ বছরের সার্বিক গ্রহাবস্থান আমেরিকাকে বহু ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

ব্রিটেন
ব্রিটেনের ২০১৭ সাল শুভ হবে। অর্থনৈতিক মন্দা অনেকাংশে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে দেশটি। বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়বে। দেশটির সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হবে। জুন-জুলাইতে কোনো রকম সন্ত্রাসী কর্মকা-ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তবে অর্থনৈতিক উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকবে। মহাকাশ গবেষণা, বিজ্ঞান, আইটি সেক্টর, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে, শিল্প-কলকারখানা চাঙ্গা হয়ে উঠবে, যার ফলে বেকারত্বের হার অনেকাংশ কমে যাবে। আর্থিক ভিত মজবুত, রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় সয়ম্ভরতা ফিরে আসবে। জীবন রক্ষাকারী ঔষধ আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্রিটেনে অভাবনীয় সাফল্য লাভ হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি দেশের সাথে আমদানি-রপ্তানির রমরমা বাণিজ্য চলতে থাকবে, এমনকি রপ্তানি বাণিজ্যে আরও বেশ কয়েকটি দেশের সাথে নতুন চুক্তি হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্পন, তুষারঝড় প্রভৃতির প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও বিশেষ ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। দেশের মন্ত্রী পরিষদ রদবদল করে ঢেলে সাজাতে সক্ষম হবে দেশটি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রের জঙ্গি গোষ্ঠী ও আইএস দমনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করায় দেশে অবস্থানরত কূটনৈতিক, রাষ্ট্রদূত ও নাগরিকদের ওপর আচমকা আক্রমণ তথা ধরে নিয়ে শিরñেদ ঘটাতে পারে। এতদসত্ত্বেও দেশের সরকার যথারীতি আমেরিকায় তাঁবেদারি করে যাবে। এ বছর দেশের সম্পদ আহরণ তথা খনিজ সম্পদ উত্তোলনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষণীয়। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক গোলযোগ অসন্তোষ কাটিয়ে সগর্বে দ-ায়মান থাকবে দেশটি।

ফ্রান্স
কুম্ভ রাশির অন্তর্গত ফ্রান্সের জন্য ২০১৭ সালটি শুভ ও সম্ভাবনাময়। নিত্যনতুন জীবন রক্ষাকারী ঔষধ আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অভাবনীয় সাফল্য লাভ হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অসন্তোষ, অজ্ঞাত রোগব্যাধির আক্রমণ ও জঙ্গি গোষ্ঠী দমনে দেশের জনগণের ভূয়সী প্রশংসা কুড়াবে সরকার। প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ স্মরণকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। সারা বিশ্বে চলা মহাসংকটকালে ফ্রান্সের বীরদর্পে ঝাঁপিয়ে পড়ায় নেতৃত্বগুণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত হবে। মিত্র দেশগুলোর সাথে মতানৈক্য হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। সব মিলিয়ে ২০১৭ সাল ফ্রান্সের জন্য স্বর্ণোজ্জ্বল বছর।

শ্রীলঙ্কা
সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ও কল্যাণমুখী কার্যক্রমের জন্য এ বছরটিতে শ্রীলঙ্কায় উন্নতি ও অগ্রগতি হবে। তবে মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মাথাচাড়া দিতে পারে। ১৫ মার্চের পর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। সার্কভুক্ত বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। খেলাধুলা, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দেশটি প্রভূত উন্নতি করবে। বিভিন্ন দেশে মানবসম্পদ রপ্তানি, মৎস্যজাত পণ্য, খনিজ সম্পদে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে। বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
এ বছরটি শ্রীলঙ্কার জন্য শুভাশুভ মিশ্রফলদায়ক। বন্যা, সুনামি, ভূমিকম্পন, ঘূর্ণিঝড়, পাহাড়ি ঢল, পাহাড় ধ্বংসে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে নাজুক হতে পারে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও তামিল টাইগারদের আক্রমণ সব মিলিয়ে দেশের পরিস্থিতি। এ বছর শনির কু-প্রভাবে জঙ্গি গোষ্ঠী তামিল টাইগারদের সাথে মিলিত হয়ে স্কুল, কলেজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে পারে। সরকার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। ভারতের সাথে বন্ধুত্ব ও বাণিজ্যিক চুক্তির ভিত মজবুত হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতির তুলা রাশিতে সঞ্চার ও মঙ্গলের শুভ প্রভাবে সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আর্থিক ভিত মজবুত রাখতে সক্ষম হবে। দেশের সরকার প্রশাসনের মধ্যকার সরকারবিরোধীদের মনোভাব পাল্টাতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে জনবল বৃদ্ধি ও সামরিক খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করায় শ্রীলঙ্কার সরকার ভূয়সী প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হবে।

আফগানিস্তান
আফগানিস্তানের জন্য ২০১৭ সাল তেমন শুভ নয়। এ বছর এদেশে জাতিগত সংঘাত ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বাড়তে পারে। ৭ এপ্রিল থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশটির গুরুত্ব বাড়বে। খেলাধুলায়, শিল্প ও সংস্কৃতি এবং গবেষণামূলক কাজের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। ১২ জুলাই থেকে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বাড়বে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ও ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তথাপি সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মকা-ে দেশের অগ্রগতি সাধিত হবে। নারী জাগরণ এবং মুক্ত চিন্তার বিকাশ ঘটবে।

মিয়ানমার
মিয়ানমারের অবস্থা বিগত বেশ কয়েক বছরের তুলনায় ২০১৭ সাল যথেষ্ট শুভ। অবশ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা, খুন, জখম, লুটপাট, অগ্নিকা- রাজনৈতিক অসন্তোষ, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অতর্কিত হামলা হবে প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। সেই সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয় জিম্মি করে ধ্বংসকা- চালাবে, যার ফলে প্রাণহানির মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে গেলেও দেশের সরকার ও  যুবসমাজের স্বদেশপ্রেমকে কাজে লাগিয়ে সকল প্রতিকূলতা সহজে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। আমদানি-রপ্তানির সাথে সাথে বৈদেশিক সাহায্য-সহানুভূতি প্রাপ্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, শিল্প-কলকারখানা নির্মাণ, চিকিৎসা খাতের উন্নয়ন ও বেকরত্ব দূরীকরণে ভূয়সী প্রশংসা কুড়াবে দেশটি। রাহু-মঙ্গলের কু-প্রভাবে অজ্ঞাত রোগ ব্যাধির আক্রমণ মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। সেই সঙ্গে মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার সীমাহীন রূপে বৃদ্ধি পাবে। এতদ সত্ত্বেও শুভগ্রহ প্রভাবে সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে দেশটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দেশটির নেত্রী অং সান সুচির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

জাপান
২০১৭ সালটি জাপানের জন্য শুভ ও সম্ভাবনার বছর। দেশের শিল্প-কলকাখানার প্রসার ঘটবে। সেই সঙ্গে নিত্য নতুন কলকারখানার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। এর ফলে বেকারত্বের হার অনেকাংশে কমে আসবে। দেশের প্রতিরক্ষা খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। সেই সঙ্গে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি, যুদ্ধাস্ত্র, ট্যাংক, বিমান, জাহাজ নির্মাণ, প্রাণদায়ী ঔষধ আবিষ্কার ও মহাকাশ গবেষণায় জাপানের প্রভূত উন্নতি পরিলক্ষিত হবে। এককালের বিশ্ব খ্যাত গাড়ি নির্মাণকারী জাপান নিত্য নতুন গাড়ি, ট্রেন, বিমান নির্মাণ করে সমগ্র ব



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন