প্রতিশ্রুত ট্যাঙ্কের মাত্র এক চতুর্থাংশ ইউক্রেনকে দিচ্ছে পশ্চিমারা
ব্রিটেনের সানডে টাইমস রোববার জানিয়েছে, এপ্রিলের শুরুর মধ্যে ইউক্রেন পশ্চিম-প্রতিশ্রুত ট্যাঙ্কগুলোর এক চতুর্থাংশের কম পাবে। এতে
আইয়ুব আলী : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম দেশ বাংলাদেশ। পাহাড়, নদী ও প্রকৃতির ছায়া সুনিবিড় এ জনপদের পুরোটাই যেনো পর্যটনের বিশাল ক্ষেত্র। বিশ্ববিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা থেকে শুরু করে বহু বিদেশি পর্যটককে আকৃষ্ট করেছে বাংলাদেশের পর্যটন। দেশের পর্যটন শিল্পের অফুরন্ত সম্ভারের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রাণী চট্টগ্রাম।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়স লেক, ওয়ার সেমিট্রি, লালদীঘি পার্কের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে এখন আকর্ষণীয় স্থান সিআরবির শিরীষ তলা ও কর্ণফুলী সেতু এলাকা। সাম্প্রতিককালে এ দু’টি স্পটে অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটছে। নগরীর সিআরবি সাত রাস্তার মাথায় রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপনা আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সদর দপ্তর। এর পাশেই রয়েছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রেল ইঞ্জিন। শতবর্ষী অসংখ্য বৃক্ষে ঘেরা এ এলাকায় সকাল-বিকাল ঘুরতে যান নানা বয়সের মানুষ। এর অদূরে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকাও এখন দর্শনার্থীদের কাছে খুব আকর্ষণীয়। ঐতিহাসিক জিয়া যাদুঘরের পাশে গড়ে উঠা পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু এবং এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের পাশে গড়ে উঠা অসংখ্য রেস্টুরেন্ট পুরো এলাকায় অন্যরকম এক সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। বিকেল গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অসংখ্য মানুষের সমাগম লেগেই থাকছে। বিশেষ করে তরুণরা সময় কাটানোর জন্য ওই এলাকাকে বেছে নিচ্ছে। এর পাশেই রয়েছে শিশু পার্ক। নেভাল এভিনিউতে আছে মেরিটাইম যাদুঘর। আগ্রাবাদের প্রতœতাত্ত্বিক যাদুঘর, বাদশাহ মিয়া সড়কে ওয়্যার সেমিট্রি, পাঁচলাইশের জাতিসংঘ পার্ক পর্যটক আকর্ষণ করছে সারা বছর।
চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি হালিশহর, কাট্টলী ও সীতাকু- এলাকার সৈকতেও পর্যটকের ঢল নামছে। চট্টগ্রাম শিশু পার্ক ও কর্ণফুলী শিশু পার্ক, ফয়স লেক, ষোলশহর ২নং গেইটের বিপ্লব উদ্যান, স্বাধীনতা কমপ্লেক্স, সীতাকু- ইকোপার্ক, ডিসি হিল ও লালদীঘির পার্কেও দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
শিশু পার্কে রয়েছে শিশুদের জন্য বিনোদনের বিভিন্ন আইটেম। প্রায় ৪টি আইটেমে সাজানো এ বিনোদন কেন্দ্রে রয়েছে চুকচুক গাড়ি, ভয়েজার বোট, মেরি গোডাউন, রেসি গোডাউন, রেসিংকার, দোলনা ছাড়াও অন্যান্য বিনোদন সুবিধা। আধুনিক প্রযুক্তির ক্যাবলক রেসিংকার, ভয়েজার বোট, ক্যাবল ট্রেন, দোলনা এবং অন্যান্য সামগ্রী, বৃহত্তম এ পার্কে রয়েছে মিনি চাইনিজ, কুলিং কর্নার ছাড়াও অনেক রকমারি সামগ্রীর দোকান। ডিজনী ল্যান্ডের আদলে গড়া এই কর্ণফুলী শিশু পার্কের গেইট সবাইকে আকর্ষণ করবে বেশি।
সীতাকু-ের চন্দ্রনাথ পাহাড়, মীরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝর্ণা, আনোয়ারার হিলটপ পার্ক এখন ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন পাহাড় ও বৃক্ষরাজিতে ভরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বিশেষ করে বনবিদ্যা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস পর্যটকদের কাছে টানছে। চট্টগ্রামে বেড়াতে আসা লোকজন এসব এলাকা দেখতে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের জিয়া যাদুঘরটি বৃটিশ শাসন আমলে কুঠিরবাড়ি হিসাবে পরিচিত ছিলো। এই যাদুঘরটিতে মোট ১২টি গ্যালারি উপস্থাপনের মাধ্যমে ৭৪৩টি নিদর্শন সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত নিদর্শনের মধ্যে বস্তুগত নিদর্শন রয়েছে। মোট দলিল রয়েছে ১২টি। যাদুঘরে গ্যালারি, পাঠাগার ছাড়াও একটি মিলনায়তন স্থাপন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী চেতনাকে সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই সকল গ্যালারি স্থাপন করা হয়েছে। মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সংগ্রামী জীবন এবং কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে যাদুঘরের প্রদর্শনীর মাধ্যমে।
চট্টগ্রামের আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হলো ডিসি হিল পার্ক। বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে এখানে মেলা বসে। এছাড়া ডিসি হিলে স্থায়ীভাবে একটি উন্মুক্ত মঞ্চও রয়েছে। মঞ্চের সামনে বিশাল দর্শক গ্যালারি। পাহাড়ের উঁচুনীচু ছায়া সুনিবিড় পরিবেশে ডিসি হিল পার্কে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী বেড়াতে আসেন। ফয়স লেকের সামনেই গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এ চিড়িয়াখানায় ইতোমধ্যে সাউথ আফ্রিকা থেকে এক জোড়া বাঘসহ বেশকিছু নতুন পশু-পাখি আনা হয়েছে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত সীতাকু- চন্দ্রনাথ মন্দির ও ইকোপার্ক। পাহাড় ও অরণ্য ঘেরা এ অঞ্চল পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অনেক উপরে অবস্থিত। সীতার পুণ্যভূমি খ্যাত এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠতে হলে একটু বেগ পেতে হয়। বেশ উঁচুতে সিঁড়ি ভেঙে এই পাহাড়ে উঠা বেশ কষ্টসাধ্য হলেও এর সৌন্দর্য দেখে সবাইকে মগ্ধ করতে পারে এর প্রকৃতি। অন্যদিকে চন্দ্রনাথ মন্দিরের একটু আগেই এ ইকোপার্ক।
বৃহত্তর চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটিতে রয়েছে দর্শনীয় অনেক স্থান। পাহাড় আর লেকের মিলন দেখতে বিশেষ করে ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষের ভিড় জমছে। রাঙ্গামাটি লেককে ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পর্যটন স্পট। লেক ঘুরে দেখতে পর্যটনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্পিডবোট এবং ইলিশ বোট। পাহাড়ঘেরা সুন্দর চাকমা বাড়িটি রাঙ্গামাটির হ্রদের সৌন্দর্যের একটি। প্রতিবছর রাঙ্গামাটি আদিবাসীদের ঐতিহ্য রাজ্যপুনাহ মেলা এই জনগোষ্ঠীর প্রধান মেলা। এসব মেলাকে ঘিরে সেখানে পর্যটকদের ভিড় জমে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।