Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২৩, ৮:২১ পিএম

আইসিডিডিআর,বি এবং ইউনিসেফ যৌথভাবে "জরুরি স্বাস্থ্যসেবা (তীব্র পানির মত ডায়রিয়ার জন্য প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদান) ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের ক্যাম্পে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে কলেরা নজরদারি’ শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রম ও ফলাফল তুলে ধরতে একটি সেমিনারের আয়োজন করে। কক্সবাজারের লং বিচ হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী এবং এনজিওসহ প্রকল্পের বিভিন্ন সহযোগীরা অংশগ্রহণ করেন। রোববার (৫ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের কো-প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর এবং আইসিডিডিআর,বি-র হাসপাতাল প্রধান ডাঃ বাহারুল আলম প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং ২০১৭ সালে নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার সাথে সাথে দ্রুত আইসিডিডিআর,বি ও ইউনিসেফের যৌথ পরিচালনায় একটি মাঠ পর্যায়ের মূল্যায়ন সম্পর্কে অবহিত করেন।

প্রকল্পটির আওতায়, রোগের নজরদারি, চিকিৎসা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং টিকাদানের মাধ্যমে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে আইসিডিডিআর,বি, ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় ২০১৮ সাল থেকে ২,০০০ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। টেকনাফে পাঁচটি ডায়রিয়া চিকিৎসা কেন্দ্র (ডিটিসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা সেপ্টেম্বর ২০১৯-এর ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করে। লেদা ডায়রিয়া চিকিৎসা কেন্দ্রের কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে এবং এখানে প্রতিবছর প্রায় ৩,৫০০ রোগীর চিকিৎসা করা হয়। এছাড়াও, কেন্দ্রটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে চলমান যৌথ মূল্যায়ন দলেও অংশ নিচ্ছে।

আইসিডিডিআর,বি-র নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সায়েন্স বিভাগের ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. এএসজি ফারুক ডায়রিয়া চিকিৎসা কেন্দ্র-ভিত্তিক নজরদারির ফলাফল উপস্থাপন করেন এবং জানান যে রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে (বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা) ও কৃশকায় (উচ্চতার তুলনায় কম ওজন) এবং ওজন স্বল্পতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গিয়েছে। সেইসাথে এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্লোরিনযুক্ত ট্যাপের পানির ব্যবহার, টয়লেট ব্যবহার, খাবার স্যালাইন এবং টিকা গ্রহণের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আইসিডিডিআর,বি-র ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর, ড. ফেরদৌসী কাদরী কক্সবাজারে মুখে খাওয়ার কলেরা টিকাদান কার্যক্রমের সাফল্য উপস্থাপন করতে গিয়ে বলেন সাত দফা টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে, কোন কোন ক্যাম্পে মানুষকে শতভাগ টিকাদান করা হয়েছে। প্রায় নয় লাখ রোহিঙ্গা জনগণ ৩৭,৬৫,৪৯৯ ডোজ টিকা পেয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের কাছাকাছি বসবাসকারী ৫,২৮,২৯৭ স্থানীয় জনগণ ৮৯৫,৬৮৮ ডোজ মুখে খাওয়ার কলেরা টিকা পেয়েছে। এরকম জটিল পরিবেশেও টিকাটি ভালভাবে গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, এই এলাকায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে কলেরা প্রাদুর্ভাব ও মহামারী প্রতিরোধে মুখে খাওয়ার কলেরা টিকাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে যা বড় রকমের কোন প্রাদুর্ভাবের অনুপস্থিতি থেকে প্রমাণিত হয়। এটি সম্ভব হয়েছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়, সিডিসি-ডিজিএইচএস, আইইডিসিআর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ সহ আমাদের অন্যান্য অংশীদারদের অসামান্য নেতৃত্ব এবং সমর্থনের মাধ্যমে।

প্রেজেন্টেশনের পর ইউনিসেফের হেলথ স্পেশালিষ্ট ডা. মাইনুল হাসান এবং ডা. হোর্হে মার্টিনেজ, ডব্লিউএইচও-কক্সবাজারের বক্তব্যের পাশাপাশি কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মাহবুবুর রহমান, এবং বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ড. মোহাম্মদ মিজনুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ।

ডা. হাসান আইসিডিডিআর,বি-এর প্রশংসা করে বলেন, রোহিঙ্গা পরিবেশে তীব্র পানির মত ডায়রিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণের এই সফল কার্যক্রমের অংশীদার হতে পেরে ইউনিসেফ গর্বিত। আমাদের কার্জক্রমগুলি চালিয়ে যাওয়া দরকার, এবং আমরা বিশ্বাস করি আমরা একসাথে এসকল রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব।

ডা. মার্টিনেজ তার বক্তৃতায় রোগের নজরদারি, টিকাদান এবং অন্যান্য ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য কক্সবাজারের সক্ষমতা কিভাবে আরো বৃদ্ধি করা যায়, তা খুঁজে দেখার জন্য আইসিডিডিআর,বি-কে অনুরোধ করেন।

ড. তাহমিদ আহমেদ বাংলাদেশের সরকার এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, সহযোগীতামূলক প্রচেষ্টা শুধুমাত্র ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে এবং জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেনি বরং আমাদের এমন কিছু প্রমাণ এনে দিয়েছে যা পৃথিবীর অন্যান্য যেকোন যায়গায় মানবিক সঙ্কট মোকাবেলায় কাজে দিবে।

এখন পর্যন্ত সাফল্য পেলেও, এটা স্পষ্ট যে শরণার্থী শিবিরে ভবিষ্যতে প্রাদুর্ভাব রোধ করার জন্য টেকসই প্রচেষ্টা প্রয়োজন। টিকা দেওয়ার পাশাপাশি, একটি শক্তিশালী এবং টেকসই পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি হস্তক্ষেপ, একটি বিস্তৃত নজরদারি ব্যবস্থা এবং সঠিক কেস ব্যবস্থাপনা এরকম মানবিক সংকটাপূর্ন স্থানে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয়।

সেমিনারটি কক্সবাজারের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। অব্যাহত সহযোগিতা এবং টেকসই প্রচেষ্টার মাধ্যমে, আশা করা যায় যে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অনুরূপ সাফল্য অর্জন করা যেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->