মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : একুশে ডিসেম্বর সকালের হাঁটাহাঁটি, বিকালে গলফ খেলা এবং রাতে বন্ধুদের সঙ্গে পারিবারিক নৈশভোজÑ এর মধ্যেই ওয়াশিংটনে শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা দলের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে আলোচনায় হাওয়াইয়ে অবকাশ যাপনে কিছুটা ছেদ ঘটালেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণকে অবৈধ আখ্যায়িত করে মিসরের তোলা নিন্দা প্রস্তাবের ওপর পরদিন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কয়েক মাস ধরেই নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি নিয়ে কথা চলছিল। টেলিফোনে ওবামা ভোটদানে বিরত থাকার কথাই বলছিলেন। সন্ত্রাসবাদ ও ফিলিস্তিনি সহিংসতার সমালোচনা থাকায় প্রস্তাবটি ভারসাম্যপূর্ণ ঠেকে তার কাছে। আর ওই প্রস্তাবের ভাষায় শেষ মুহূর্তের কোনো পরিবর্তনও হয়নি। ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানে কংগ্রেসে তীব্র প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি ইসরাইলের বিষয়ে সতর্ক করেন। তবে একটা অবস্থান নেওয়ার সময় এসেছে বলে অধিকাংশই একমত হন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত সমালোচনার মধ্যেও পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের দ্রুত বসতি সম্প্রসারণ ইসরাইল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য সমঝোতার আশা ক্ষীণ হয়ে আসছিল। এদিকে পাসের অপেক্ষায় থাকা ইসরাইলি বিলে এরই মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূমিতে নির্মিত বসতির আইনি বৈধতার কথা বলা হয়েছে। মিসর ছাড়াও জাতিসংঘে তোলা এই প্রস্তাব সমর্থনকারী চারটি দেশ চাইছিল, প্রেসিডেন্ট ওবামা দায়িত্ব ছাড়ার আগেই বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হোক। কেননা এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো শুধু ইসরাইলি কর্মকা-কে বৈধতাই দিত না, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরে ইসরাইলকে নিজেদের মর্জিমাফিক চলার সুযোগ করে দিত। ওবামা প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এই ভোটের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা নিয়ে লোকজন বিতর্ক করেছে। তারা বলছিল, আমরা ভোটদানে বিরত থাকলে ভালোর বদলে মন্দই বেশি হতে পারে। এটা আমাদের রাজনীতি, ইসরাইলি রাজনীতিতে বার বার উঠে আসবে এবং এ প্রবণতা বাড়তেই থাকবে। কিন্তু এ নিয়ে যত খারাপ আলোচনা হওয়ার, তা এরই মধ্যে হয়ে গেছে। কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত বিষয়গুলোর অন্যতম ইসরাইল। তবে ওবামাকে আর কখনও প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে হবে না এবং তার আর কিছু হারানোর নেই। শেষ পর্যন্ত যখন ভোট হলো, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে তা অনুমোদন পেল। হোয়াইট হাউস থেকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইসের ফোন কলের মাধ্যমে ওবামার বার্তা পৌঁছেছিল জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ারের কাছে। তিনি হাত উঁচু করে ভোটদানে বিরত থাকার কথা জানান। প্রস্তাবটিও অনুমোদন পায়। যেমন ভাবা হয়েছিল, প্রতিক্রিয়া এলো সে রকমই। কংগ্রেস সদস্যরা ওবামার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্রকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুললেন। এই পদক্ষেপকে অযৌক্তিক বললেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার সরকার অভিযোগ তুললÑ ওই প্রস্তাব নিয়ে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে গোপনে ‘ষড়যন্ত্র’ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওবামার সহকারীরা। ওই প্রস্তাবে ভেটোর আহ্বান জানানো ট্রাম্প এক টুইটে তার শপথ পর্যন্ত ইসরাইলকে শক্ত থাকতে বলেছেন। ট্রাম্প স্পষ্টত যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিতে বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা করেছেন। তার প্রধান স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিফেন কে ব্যানন এবং অন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে ওবামা প্রশাসনের সাম্প্রতিক বক্তব্য, বিশেষ করে ইসরাইল প্রসঙ্গ অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ব্যানন ও ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারই ইসরাইল বিতর্কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা ইসরাইলি কর্মকর্তা ও তাদের মিত্রদের ফোন করে আলোচনা এবং বৈঠকের ব্যবস্থা করছেন বলে ট্রাম্প শিবিরের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ ত্যাগ করা উচিত বলে মনে করছেন কি নাÑ বুধবার সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ট্রাম্পের বক্তব্য, যতক্ষণ পর্যন্ত এই আন্তর্জাতিক সংস্থা সমস্যা তৈরির বদলে তার সমাধান করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এর আবেদন ফুরোচ্ছে না। এটা যদি তার সামর্থ্য নিয়ে এগোয়, তাহলে এটা এক বড় জিনিস। যদি তা না করে তাহলে এটা সময়ের অপচয়। এদিকে ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণের বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘ প্রস্তাব পাসে প্রশাসন কিছু মাত্রায় স্বস্তিতে আছে এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি আবারও আন্তর্জাতিক আলোচ্য সূচিতে ফিরবে বলে তারা মনে করছেন। এ বিষয়ে প্রথম ইঙ্গিত মেলে গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের উত্তাপের মধ্যে, দুই প্রার্থী ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটনের নিউ ইয়র্কে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই। ওয়াশিংটন পোস্ট, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।