মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরানে মেয়েদের স্কুলে নতুন করে বিষাক্ত গ্যাসের হামলা হচ্ছে – এমন খবরে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। ২৬টি স্কুলের শত শত ছাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নভেম্বর মাস থেকে এক হাজারেরও বেশি ছাত্রী বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে গেছে। তাদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে ক্লান্তি, ঝিমুনির উপসর্গ দেখা গেছে।
ইরানে অনেক মানুষ সন্দেহ করছে মেয়েদের স্কুলগুলো যাতে বন্ধ করে দেয়া হয় সে লক্ষ্যে ইচ্ছা করে গ্যাস ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার এখনও এ ধরণের ষড়যন্ত্র তত্বকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। ইরানের ফারস সংবাদ সংস্থা খবর দিয়েছে স্কুলে গ্যাস হামলার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ভাহিদি, প্রেসিডেন্ট রাইসি যাকে এ ধরণের বিষক্রিয়ার কারণ খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছেন – বলেছেন এমন গ্রেপ্তারের খবর সঠিক নয়।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, এবং ‘ভাড়াটে বিভিন্ন গ্রুপ’ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে, মানুষজনের মধ্যে আতংক ছড়াচ্ছে। কিছু ছাত্রী এবং অভিভাবক সন্দেহ করছে পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা কেন্দ্র করে সম্প্রতি সরকার বিরোধী যে ব্যাপক আন্দোলন হয় তাতে অংশ নেয়ার শাস্তি হিসাবে মেয়েদের স্কুলগুলোকে টার্গেট করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিভিন্ন মিডিয়ার খবর অনুযায়ী পাঁচটি শহরের ২৬টি মেয়েদের স্কুলে নতুন দফা এই বিষাক্ত গ্যাসের হামলা হয়েছে। বিবিসি ফার্সি ভাষা বিভাগের যাচাই করা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে রাজধানী তেহরান, উত্তর-পশ্চিমের আরদাবিল এবং পশ্চিমের কেরমানমাহ শহরে মেয়েদের স্কুলের সামনে অ্যাম্বুলেন্স জড় হয়েছে, এবং হাসপাতালে হাসপাতালে ঐসব স্কুলের ছাত্রীদের চিকিৎসা চলছে।
তেহরানের একটি স্কুলের ছাত্রীদের হাসপাতালের বেডে অক্সিজেন মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে তেহরানের পূর্বাংশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে ফুটপাতে ছাত্রীরা বসে রয়েছে। সেসময় একজন মা স্কুলের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছেন ‘আমার মেয়ে কই?’ এক পুরুষ তাকে বলছেন, ‘তারা ছাত্রীদের গ্যাস দিয়ে বিষাক্রান্ত করেছে।’
স্কুলে গ্যাসে বিষাক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রথম তেহরানের উত্তরে শিয়াদের পবিত্র শহরে কোমে। বিবিসি ফার্সি বিভাগের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে রোববার পর্যন্ত ৮৩০ জন শিক্ষার্থী, যাদের অধিকাংশই মেয়ে, এমন বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়েছে। তবে ইরানি সংসদের একজন সদস্য বলেছেন দুটো শহরেই - কোম এবং বোরুয়ার্ড - ১২০০ জন আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তরা প্রায় সবাই বলেছেন অসুস্থ হয়ে পড়ার আগে তারা নাকে পচা মাছের গন্ধ পেয়েছেন।
পার্লামেন্টের শিক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আলি রেজা মোনাডি-সেফিডানকে উদ্ধৃত করে মঙ্গলবার ফার্স সংবাদ সংস্থা বলছে এক তদন্তে বিষাক্ত গ্যাসে নাইট্রোজেনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার এমন খবর নাকচ করে দেন। একজন অভিভাবক বিবিসিকে বলেন তেহরানের পারদিস শহরতলীতে তার মেয়ের স্কুলে মঙ্গলবার অনেক ছাত্রী আক্রান্ত হয়েছে।
রোববার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ইউনুস পানাহি বলেন, এটা ‘প্রমাণিত যে কিছু মানুষ চাইছে সব স্কুল, বিশেষ করে মেয়েদের স্কুল, বন্ধ হয়ে যাক’। তবে পরে তিনি বলেন, তার কথা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
বুধবার অনলাইনে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এক নারীকে বলতে শোনা যায় কেরমানশাহ শহরের একটি প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রীরা তাকে বলেছে স্কুলে এক বিস্ফোরণের মত শব্দের পর প্রধান শিক্ষক জানান কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরপরই স্কুলে অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। ঐ নারী বলেন একজন ছাত্রী তাকে বলে যে তার আশংকা বিক্ষোভে অংশ নেয়ার জন্য তাদেরকে টার্গেট করা হচ্ছে।
স্কুলে বিষাক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় জনমনে নতুন করে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। বুধবার প্রকাশিত আরেকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় তেহরানের একটি স্কুলের বাইরে একদল মেয়ে স্লোগান দিচ্ছে –‘নারী, জীবন, মুক্তি।’ এ স্লোগানই সাম্প্রতিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিয়মিত শোনা গেছে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।