মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধে উস্কানি দিতে শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্রসহ সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে কিয়েভের পশ্চিমা মিত্ররা। এর মধ্যে পশ্চিম ইউরোপের শক্তিশালী দেশ জার্মানিও রয়েছে। আর জার্মানির এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটির রাজধানী বার্লিনে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে এই বিক্ষোভের সমালোচনা করা হয়েছে। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে শনিবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ১০ হাজারও বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। আহন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য বিক্ষোভস্থলে বিশাল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে রুশপন্থি এই বিক্ষোভের সমালোচনা করেছেন জার্মান সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। রয়টার্স বলছে, রুশ অভিযান মোকাবিলায় ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে বার্লিনে এই বিক্ষোভের ডাক দেন বিশিষ্ট বামপন্থি জার্মান একজন রাজনীতিবিদ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক বছর পূর্তি হওয়ার একদিন পরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। জার্মানির কর্তৃপক্ষ সামরিক ইউনিফর্ম পরা, রাশিয়ান এবং সোভিয়েত পতাকা এবং জেড অক্ষর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল যা ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের সমর্থনের প্রতীক হিসাবে এসেছে। কিন্তু শনিবার ইউক্রেনকে অস্ত্র দেয়ার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে রাজধানী বার্লিনে হাজার হাজার জনতা ইউক্রেনের শান্তি প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে এবং রাশিয়ার পতাকা এবং চিহ্নগুলোর প্রদর্শন করে। তারা রুশ বিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আয়োজকরা তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, ‘ ইউক্রেনকে ক্রমবর্ধমানভাবে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার জন্য আমরা জার্মান চ্যান্সেলরের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এখনই!...কারণ প্রতিদিন এই যুদ্ধে ১০০০ জন প্রাণ হারাচ্ছেন এবং এটি আমাদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে।’ ‘শান্তির জন্য অভ্যুত্থান’ নামক এই বিক্ষোভ জার্মানির বামপন্থি দল ডাই লিংক পার্টির রাজনীতিক সাহরা ওয়াগেনকনেখ্ট আয়োজন করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি জার্মানির পার্লামেন্টর সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
শনিবারের বিক্ষোভে একজন বিক্ষোভকারীর হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘(সঙ্কট সমাধানে) আলোচনা করুন, (উত্তেজনা) বাড়বেন না।’ এছাড়া ভিড়ের মধ্যে অন্য একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘এটা আমাদের যুদ্ধ নয়’। জার্মান পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, মধ্য বার্লিনের জার্মানির প্রতীকী ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটের চারপাশে শনিবার ১০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। বিক্ষোভস্থলে শান্তি বজায় রাখতে এবং সামরিক ইউনিফর্ম, রাশিয়ান ও সোভিয়েত পতাকা, রাশিয়ান সামরিক গান ও ডানপন্থি যেকোনও প্রতীকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ১৪০০ জন কর্মকর্তাকে মোতায়েন করেছিল পুলিশ।
এদিকে, গত দুই সপ্তাহের মধ্যে ৬ লাখেরও বেশি জার্মান নাগরিক একটি আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে ইউক্রেনের কাছে ভারী অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে এবং চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজকে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। বাম পক্ষের আইনজীবি সাহরা ওয়াগেনকেনচট এবং নারীবাদী লেখক অ্যালিস শোয়ার্জার সহ-ওই আবেদনে চেঞ্জডটঅর্গ ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬ লাখ ৭ হাজার নাগরিকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট গুন্টার ভার্জিউগেন, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এরিচ ভিএডি, সাংবাদিক ফ্রাঞ্জ আল্ট এবং গিসেলা মার্কস, রাজনীতিবিদ ওসকার লাফোনটেইন এবং জুরগেন টোডেনহোফার এবং রাজনৈতিক গবেষক হজো ফানকে এবং আলরিক গেরোট সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরাও সেখানে সাক্ষর করেছেন।
এ আবেদনে সাক্ষরকারীরা বলেছিলেন যে, ‘পশ্চিমা সমর্থিত, ইউক্রেন পৃথক যুদ্ধ জিততে পারে। তবে তারা বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিততে পারে না,’ এবং জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, ‘উভয় পক্ষই সামরিকভাবে জিততে পারে না,’ এবং যুদ্ধটি কেবল আলোচনার মাধ্যমেই শেষ হতে পারে’। তারা জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, ‘আলোচনার অর্থ আত্মসমর্পণ নয়’, এবং উভয় পক্ষকেই আরও কয়েক হাজার মৃত্যু এবং আরও খারাপ রোধে আপস করা দরকার। এ আবেদনে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজকে ইউক্রেনের কাছে অস্ত্র সরবরাহের বৃদ্ধি বন্ধ করতে এবং যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করার এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এ আবেদনের লেখকরা উল্লেখ করেছেন যে, ‘প্রতিটি হারিয়ে যাওয়া দিনে আরও এক হাজার মানুষের জীবন ব্যয় হয় - এবং আমাদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরও কাছে নিয়ে আসে।’ সূত্র : হেলসিঙ্কি টাইমস, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।