নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
পৃথিবীর সকল নিয়মগুলোই হয়, কখনো তা ভেঙে নতুন রূপ নেবে বলে। তবে গত পরশুরাতের আগে একটি ছিল বড়ই ব্যতিক্রম। তা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার আইসিসির টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল থেকে অবধারিত বিদায়। তারা যে সেমি ফাইনালের চৌকাঠ পার হয়ে ফাইনালে উঠতে পারে সে বিশ্বাসটাই হারিয়ে ফেলেছিল প্রোটিয়ার কিংবদন্তীরাও। হ্যান্সি ক্রনিয়ে, শন পোলক, গ্রায়েম স্মিথ, এবি ডি ভিলিয়ার্স আর সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলা ফাফ ডু প্লেসি- সব মহারথিরাই ব্যর্থ ছিলেন দলকে ফাইনালে তুলতে। তবে পরশু কেপটাউনে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্বাসরুদ্ধকর সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৬ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিকদের করা ১৬৪ রানের জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানের বেশি করতে পারেনি ইংলিশরা।
চোকার্স শব্দটি শুধু মাত্র দক্ষিণ আফ্রিকান পুরুষ ক্রিকেট দলের জন্যই নয় প্রেটিয়া নারীদের ক্ষেতেও সমানভাবে উপযোগী। দেশটির ক্রিকেটে তাই দিনে দিনে ফাইনাল হয়ে উঠেছে দূর আকাশের নক্ষত্র, দেখা যায়, কিন্তু ছোঁয়া যায় না। ছেলেদের ক্রিকেট কি মেয়েদের ক্রিকেট, পঞ্চাশ ওভার প্রতিযোগিতা কি কুড়ি ওভার ক্রিকেট, সেমিফাইনাল মানেই যেন দক্ষিণ আফ্রিকার অবধারিত হার। আইসিসি টুর্নামেন্টে ফাইনাল না খেলার অতৃপ্তি নিয়েই ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছে অন্তত দুটি প্রজন্ম। ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেট মিলিয়ে টানা ১১টি সেমিফাইনালে হৃদয়ভঙ্গের পর অবশেষে কেটেছে সেমিফাইনাল গেরো। এদিন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ১২তম চেষ্টায় প্রথম ফাইনালে প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের ইতিহাসগড়া মুহূর্তটি সারা দুনিয়ার ক্রিকেট মহলেই তাই অবিশ্বাস্য এক ঘটনা বটে। ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেট মিলিয়ে এই প্রথম আইসিসি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে ছেলেদের বিশ্বকাপ ১৯৯২ সালের সেমিতে ১৩ বলে ২২ রানের সমীকরণ বৃষ্টির কারণে দাঁড়ায় ১ বলে ২২ রান। ইংল্যান্ডের কাছে ১৯ রানে হারে ক্ষত লাগে তাদের বুকে। ক্রনিয়া তখন তরুণ তবে ৭ বছর পর ১৯৯৯ সালে তিনি পরিণত আর দলের দায়িত্বও ছিল তার কাঁধে। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২১৪ রানের লক্ষ্যে ২১৩ রানে পৌঁছে যায় প্রোটিয়ারা। তবে ওভারের চতুর্থ বলে চরম ঝুঁকি নিয়ে সিঙ্গেল নিতে গেলে রান আউট হন ডোনাল্ড। ম্যাচ টাই হলে আসরের নিয়ম অনুযায়ী বাদ ক্লুজনার-ক্যালিসরা। ২০০৭ সালে গ্রায়েম স্মিথের আফ্রিকা অবশ্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। হারে ৭ উইকেটে।
ট্রেন্ট ব্রিজের ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য ছিল ১৫০ রানের। মন্থ্র গতিতে খেলে ৭ রানে হারে তারা। কুড়ি ওভারের ২০১৪ সালের আসরে ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেটের অসহায় আত্মসমর্পন। ২০১৫ সালের পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে শেষ দুই বলে যখন ৫ রান দরকার, তখন ডেল স্টেইনকে ছয় মেরে প্রোটিয়াদের হৃদয় ভাঙেন দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া গ্রান্ট ইলিয়ট।
দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলও পঞ্চাশ ও বিশ ওভারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল থেকে ঝড়ে পড়েছিল পাঁচ বার। অবশেষে সেই মেয়েদের হাত ধরেই ফাইনালের মুখ দেখল দেশটির ক্রিকেট। আজ রাতে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের যদি তারা হারাতে পারে তবে প্রথমবারের মত কোন বিশ্বকাপে চুমু খাবে প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।