গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
প্রতিবারের মত এবারো বইমেলায় প্রচুর মানহীন বই প্রকাশিত হয়েছে। তবে চার-পাঁচ হাজার বইয়ের মধ্যে ৫০-৬০ বইও যদি মানসম্পন্ন হয় তাতেই আমরা খুশি। এবারের বইমেলায় জঙ্গি হামলার হুমকির পরও তা জনমনে কোন বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং মেলায় জনসমাবেশ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। একুশের চেতনার কাছে জঙ্গি হুমকি পরাজিত হয়েছে। একুশের চেতনার মূল সূর হলো, পৃথিবীর প্রত্যেকটি ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। তাই বাংলা ভাষার পাশাপশি সকল ভাষাকে জীবিত রাখতে হবে। বাংলা একাডেমির নীতি বর্হিভূত তিনটি বই প্রকাশের কারণে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীর স্টল নিতে পারেনি। এ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। বই তিনটি প্রত্যাহারে পরেও তারা স্টল পেয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই। আজ শনিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ভাষা দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। নৃ-গোষ্ঠীর শির্ক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে এ প্রতিযোগিতায় ঢাকা কলেজকে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয় হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ভাষা আন্দোলনের চেতনা শুধুমাত্র বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলনা। বর্তমানে এই চেতনা আমরা লালন করতে পারছি কিনা, এর উত্তরে হ্যাঁ এবং না দুটোই বলা যায়। আমরা যখন দেখি দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা বাড়ছে, গণতন্ত্র, সুশাসন শক্তিশালী করার কথা সরকারি-বিরোধীসহ সকল রাজনৈতিক দল বলছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, জিডিপির গ্রোথ বাড়ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। তখন মনে হয় আমরা ভাষা আন্দোলনের চেতনা যথাযথ ভাবে লালন করছি। কিন্তু যখন সুশাসন, সামাজিক ন্যায় বিচার, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সামাজিক সুরক্ষা, দুর্নীতি, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা সহ নানা সূচকে আমরা পিছিয়ে আছি। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে, টিসিবির ট্রাকের পিছনে মানুষের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে, গুম হওয়া মানুষদের স্বজনের কান্না থামছে না তখন মনে হয় আমরা ভাষা আন্দোলনের চেতনা লালন করতে পারছি না। তিনি আরো বলেন, আজকের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের নৃ-গোষ্ঠীর ১০ জন বিতার্কিক অংশগ্রহণ করেছে। তারা কিন্তু তাদের বক্তব্য বাংলা ভাষায় উপস্থাপন করছে। বাংলা ভাষার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা এবং আবেগের কথা জানিয়েছে। কিন্তু বাংলা ছাড়াও বাংলাদেশে ৭৫টি জাতির ৪০টি ভাষার প্রায় ৩০ লক্ষ আদিবাসী মানুষ রয়েছে। এই ৪০টি ভাষার মধ্যে বাংলাসহ ৮টি ভাষার বর্ণমালা আছে। দেশে ৪৯টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থাকলেও কয়েকটি নৃ-গোষ্ঠী বিলিন হয়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। ছোট হয়ে যাওয়া কয়েকটি নৃ-গোষ্ঠী চাকমা মারমাসহ অন্যান্যদের সাথে মিশে যাচ্ছে। আদিবাসীদের ১৪টি ভাষা আজ বিপন্ন হতে যাচ্ছে। আরো ১১টি ভাষা বিপন্ন হওয়ার পথে। চা বাগানে অবস্থানরত কতজন কন্দ ভাষায় কথা বলে আমরা জানিনা। সৌরা ভাষায় কথা বলে মাত্র ১ জন। খাড়িয়া ভাষাটি পুরোপুরি জানে মাত্র ২ জন। ৮ জন প্রবীণ ব্যক্তি জানেন রেং মিটচা ভাষা। এদের মৃত্যু হলে এসব ভাষাগুলোর মৃত্যু হবে। তাই বাংলা ভাষার পাশাপাশি আদীবাসি ভাষার প্রতি আরো বেশি যতœ নিতে হবে।
প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, উপসচিব মো. আবদুল হাই, সাংবাদিক জাহানারা পারভীন, সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয়। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। চ্যাম্পিয় দলের বিতার্কিরা হচ্ছে জিনিয়া চিসিম, নিমা রানী ত্রিপুরা ও টিটিকা ত্রিপুরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।