নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রস্তুতি ম্যাচ শুরু হবে দুপুর ১২টায়। কিন্তু সকাল থেকেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের মধ্যে একটা ব্যস্ততা। নতুন মেয়াদে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হয়ে এসেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সকাল ১০টায় প্রথমবারের মতো তিনি বসেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে। সেটা নিয়েই সবার মধ্যে ছিল রোমাঞ্চ। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সাকিব আল হাসান ছাড়া জাতীয় দলের আশপাশে থাকা বাকি ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাথুরুসিংহের বৈঠকটা হয় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনকক্ষে। সেখানে ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিচিত হন শ্রীলঙ্কান কোচ, পরে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন নিজের পরিকল্পনা।
জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার আগের মেয়াদেও হাথুরুসিংহেকে পেয়েছেন। আবার অনেকের জন্য এই প্রথম তাঁকে দেখা। বাংলাদেশের ক্রিকেটে হাথুরুসিংহের আগের পর্ব নিয়ে যে রকম গল্পগাথা ছড়িয়ে আছে, তাতে তাঁকে দেখা এবং তার কথা শোনার বাড়তি আগ্রহ থাকারই কথা ক্রিকেটারদের। গতকাল সে আগ্রহ তো মিটলই, ক্রিকেটাররা জানলেন, হাথুরুসিংহে তাঁদের সম্পর্কে জেনেই বাংলাদেশে এসেছেন। হাথুরুসিংহের এমন ‘হোম ওয়ার্ক’ দেখে একটু অবাকই হয়েছেন তারা। সভা থেকে বেরিয়ে এক ক্রিকেটার বলেছিলেন, ‘মনে হয়েছে, তিনি আমাদের সম্পর্কে জেনে-বুঝেই এসেছেন।’
প্রথমবারের মতো হাথুরুসিংহের সাক্ষাৎ পাওয়া আরেক তরুণ ক্রিকেটার জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা, ‘কোচ আমাদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। কী করতে চান, কী প্রত্যাশা...এসব। আমাদের মানসিকভাবে আরও শক্ত হতে বলেছেন। অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।’ ক্রিকেটারদের সঙ্গে বৈঠক থেকে বেরিয়ে হাথুরুসিংহের দেখা মুমিনুল হকের সঙ্গে। মিরপুর স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমের সামনে মিনিট পাঁচেক কথা হয় দুজনের। বিদায়ের আগে ফোন নম্বর আদান-প্রদান করতে দেখা গেছে দুজনকে। আগেরবার অবশ্য এই হাথুরুসিংহেই মুমিনুলকে শুধু টেস্ট ক্রিকেটার বানিয়ে দিয়েছিলেন। আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া বিসিএলের শেষ রাউন্ডে খেলবেন মুমিনুল।
ক্রিকেটারদের বাইরেও জাতীয় দলের কম্পিউটার বিশ্লেষক শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরনের সঙ্গেও লম্বা সময় আলাপ করেছেন কোচ।
পুরনো হলেও নতুন হাথুরুর কাছে বিসিবির বার্তা পরিষ্কার- ২০২৩ বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই সব গোছাতে হবে। সেটি মাঠে এবং ড্রেসিংরুমেও। বিসিবি কর্মকর্তাদের ভাষায়, ‘স্বাস্থ্যকর’ একটা ড্রেসিংরুমই প্রথম চাওয়া হাথুরুর কাছে। এমনিতে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশে খুব একটা অশান্তি নেই। হাথুরুসিংহে যেহেতু সিনিয়রদের ভোট নিয়েই ফের এসেছেন, বিসিবি মনে করে, সে রকম কোনো বিভেদের ফাটল থাকলে তিনিই পারবেন সেটি দূর করতে। আলোচনায় এই প্রসঙ্গ ওঠার পর হাথুরুসিংহেও নাকি আশ্বস্ত করেছেন, তিনি সব ঠিক করে ফেলবেন।
বয়সের কারণেই হোক কিংবা মাঝের উত্থান-পতনে জীবনকে নতুন করে দেখার অভিজ্ঞতায় হোক, হাথুরুসিংহেকে আগের মতো একরোখা মনে হচ্ছে না বিসিবির। বরং অনেকটাই যেন মানিয়ে নেওয়ার মনোভাব দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে। সঙ্গে যোগ হয়েছে কোচিং–দর্শন নিয়ে চিন্তাভাবনার বদল, যেটাকে বিসিবিও স্বাগত জানাচ্ছে। বিশেষ করে হাথুরুসিংহে যখন আশ্বস্ত করতে পেরেছেন, সাড়ে পাঁচ বছর বাংলাদেশের ক্রিকেটে না থাকলেও এই সময়ে ঘটে যাওয়া এ দেশের ক্রিকেটের সবই তার নখদর্পণে। নতুন ক্রিকেটার যাঁরা এসেছেন, তাঁদের কার কোন সংস্করণে ভালো করার সম্ভাবনা বেশি বা কম, পুরোনোদের কাছ থেকেই–বা আর কতটা পাওয়ার আছে- এসব বিষয়ে বিসিবি ও নির্বাচকদের হিসাবের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে হাথুরুসিংহের হিসাব। তাঁকে তাই সত্যিকার অর্থেই নতুন করে কিছু বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন দেখছে না বিসিবি। উল্টো মনে হচ্ছে, তিনি সব বুঝেই রিলে রেসটা দৌড়াতে এসেছেন। বিসিবি শুধু নতুন করে তার হাতে ব্যাটনটাই তুলে দিল। সেই ব্যাটন নিয়ে তিনি গতকাল থেকেই দৌড়াতে শুরু করলেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।