Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাইডেনের ইউক্রেন সফরে যুক্তরাষ্ট্রে সমালোচনা

নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কিউভকে হত্যায় ঠেলে দেয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওয়াশিংটন কিইভকে যে শত শত কোটি ডলারের সহায়তা প্রদান করেছে, তার ক্রমবর্ধমান অংশ হিসেবে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন সফরের সময় দেশটির জন্য অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলারের সাহায্য ঘোষণা করেছেন। তবে, মার্কিন আইন প্রণেতারা বাইডেনের কিইভ সফরের সমালোচনা করে বলেছেন যে, তার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। কিছু ডানপন্থী আইনপ্রণেতা ঘরোয়া সংকটকে উপেক্ষা করে কিইভকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কারণে বাইডেনের প্রতি অভিযোগ করেছেন। এ মাসের শুরুর দিকে ওহাইওতে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে এন্ডি ওগলস টুইটারে সোমবার লিখেছেন, ‘আমেরিকা-পরে, বাইডেন পূর্ব ফিলিস্তিন ওহাইওতে পরিবেশগত সংকটের মধ্যে বসবাসকারী লোকদের সাথে দেখা করার আগে ইউক্রেন সফর করলেন’।

অনেক রিপাবলিকান সমালোচক উল্লেখ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত সংকটে, যেখানে সুরক্ষার সন্ধানে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে রেকর্ড সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী এসেছে, সেটিকে উপেক্ষা করে বাইডেন প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনকে সম্মান জানানো ‘প্রেসিডেন্ট দিবসে’ দেশ ত্যাগ করেছেন। মার্কিন কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেলর গ্রিন একটি সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে বলেছেন, ‹আজ আমাদের দেশের প্রেসিডেন্ট দিবসে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমেরিকার বদলে ইউক্রেনকে বেছে নিয়েছেন, যখন মার্কিন জনগণকে ইউক্রেনের সরকার ও যুদ্ধের জন্য অর্থ দিতে বাধ্য করেছেন।› গ্রিনের সাথে সুর মিলিয়ে আইনপ্রণেতা ম্যাট গেটজ বলেছেন যে, ইউক্রেনীয়রা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রেখে দিক। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‹যখন আমাদের সীমান্তে সংকট, জো বাইডেন বাড়ি গেছেন দেলাওয়ারে ঘুমানোর জন্য। ওহাইও যখন বিষাক্ত রাসায়নিকে পুড়ে যাচ্ছে, তখন বাইডেনের প্রশাসন বলে সবকিছু ঠিক আছে। তাই প্রেসিডেন্ট দিবসে, আমি বিস্মিত নই যে বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আমেরিকাকে উপেক্ষা করেছেন।› মার্কিন কংগ্রেসম্যান স্কট পেরি সোমবার এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‹প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেনে তাদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার জন্য উপস্থিত হতে পারেন, কিন্তু আমেরিকার জন্য একই কাজ করতে পারেন না।›
এদিকে, সোমবার রাশিয়ান ফেডারেশন কাউন্সিলের ডেপুটি স্পিকার কনস্ট্যান্টিন কোসাচেভ বলেছেন যে, বাইডেনের ইউক্রেন সফরের ফলাফল দেখিয়েছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের পুনর্র্নিবাচনের প্রচারণার অংশ হিসাবে মানুষকে নির্বোধ হত্যাকাণ্ডে ঠেলে দেয়া ছাড়া কিইভ কর্মকর্তাদের আর কোন বিকল্প নেই। তিনি দ্য টেলিগ্রামকে বলেন, ‘ভ্রমণের মূল লক্ষ্য: বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসাবে মানুষকে নির্বোধভাবে হত্যা এবং তাড়াহুড়োর চেষ্টা করা ছাড়া কিইভের কাছে কোনো বিকল্প নেই; ইউরোপ পক্ষাঘাতগ্রস্ত এবং উদ্যোগ নেয়া থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত; এবং নায়কের ভূমিকায় বাইডেন পোল্যান্ডে যাচ্ছেন দেখাতে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেই কেন্দ্রটি কোথায়, যা ওয়াশিংটনের বেশি কাক্সিক্ষত।’ কোসাচভের মতে, ‘কিইভে বাইডেন’ নাটক কোনো ঘটনা ছাড়াই এবং বিস্ময় ছাড়াই শেষ হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ওয়াশিংটন থেকে আসা ইউক্রেনীয় যুদ্ধ সাফল্যের পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, অর্ধেকেরও কম আমেরিকান (৪৮শতাংশ) ইউক্রেনে আমেরিকান অস্ত্র সরবরাহ অনুমোদন করে, ২৯শতাংশ মার্কিনী এর বিরুদ্ধে, এবং ২২শতাংশ এপ্রসঙ্গে অনিশ্চিত।
কোসাচভ বলেন, ‹আমেরিকাতে পররাষ্ট্রনীতি ঐতিহ্যগতভাবে অভ্যন্তরীণ নীতির অধীনস্থ এবং কিইভে বাইডেন সবচেয়ে বীরত্বপূর্ণ পরিবেশে তার নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেছেন, যাতে তিনি সকলের কাছে প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আগের দিনগুলির মতোই এখনও এটি করতে পারেন।› রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সোমবার তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন, ‹বাইডেনের সঙ্গে ও তার পোষ্য কিইভের জেলেনস্কির আজকের চিত্র দেখে, আগের সমস্ত মার্কিন প্রকল্পগুলির ভাগ্যের কথা ভুলে যাবেন না।’ তিনি জর্জিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখাইল সাকাশভিলির কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি পশ্চিমের মন রাখার জন্য একটি চড়া মূল্য পরিশোধ করছেন। জাখারোভা বলেছেন, ‹সাকাশভিলির ভাগ্য, (ভেনিজুয়েলার বিরোধী) হুয়ান গুয়াইদোর ভাগ্য, এটাই তাদের জন্য অপেক্ষা করছে, যারা আমেরিকানদের কাছে তাদের আত্মা বিক্রি করেছে: তাদের নিজের লোকদের দ্বারা শাপিত, পরিত্যক্ত, মার্কিন আইনপ্রণেতাদের জন্য নিজের দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে আমেরিকায় অর্থ উপার্জন করে বিলাসবহুলভাবে খরচ করতে বাধ্য হয়েছে।› সূত্র:আল জাজিরা, তাস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ