Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি পুনরুদ্ধারের আহ্বান

টেলিফোনে নেতানিয়াহু এবং আব্বাসের সাথে ব্লিঙ্কেন, চীনকে হুয়শিয়ারি

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শান্তি পুনরুদ্ধারে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শনিবার পৃথকভাবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এ সময়ে তিনি উভয়ের প্রতি শান্তি পুনরুদ্ধারের আহ্বান এবং ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধানে’ যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নিড প্রাইস এ কথা জানিয়ে বলেছেন, ব্লিঙ্কেন শান্তি পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহণে জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ এবং একতরফা পদক্ষেপ যা উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলবে তার বিরোধিতা করেন । পশ্চিম তীরে ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী সরকারের বসতি নির্মাণ অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন উভয় নেতার সাথে কথা বলেছেন। এদিকে হোয়াইট হাউস বৃহস্পতিবার বলেছে, তারা ইসরাইলের সিদ্ধান্তে হতাশ। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র দখলকৃত পশ্চিমতীরে ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধের দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। অপরদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার বিষয়ে চীনের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শনিবার শীর্ষ চীনা কূটনীতিক ওয়াং ইকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন যদি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে বস্তুগত সহায়তা প্রদান করে তাহলে দেশটিকে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কন শনিবার শীর্ষ চীনা কূটনীতিক ওয়াং ইকে সতর্ক করে দিয়েছেন। ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠকের পর দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কন একথা জানান। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন যে বেইজিং মস্কোকে অস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। রয়টার্স বলছে, বৈশ্বিক এই দুই পরাশক্তি দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা মিউনিখে গ্লোবাল সিকিউরিটি কনফারেন্সের ফাঁকে একটি অজ্ঞাত স্থানে বৈঠকে মিলিত হন। সন্দেহভাজন চীনা গুফতচর বেলুন ভূপাতিত করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার কয়েক ঘণ্টা পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে সম্প্রতি চীনের একটি গুফতচর বেলুন গুলি করে ভূপাতিত করে মার্কিন যুদ্ধবিমান। এ নিয়ে পরাশক্তি এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়েছে। এছাড়া গুফতচর বেলুন নিয়ে এই বিরোধটি এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধে বেইজিংয়ের প্রতিক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস উইথ চাক টড’-এ রোববার সকালে প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কন বলেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনে সহায়তা করতে চীন রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আর তাই তিনি ওয়াংকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন- এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে ‘তা আমাদের সম্পর্কে গুরুতর পরিণতি ডেকে আনবে’। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন শিগগিরই আরও বিশদ তথ্য প্রকাশ করবে জানিয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন ধরনের প্রাণঘাতী সহায়তা রয়েছে যার মধ্যে তারা অন্তত অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবছে।’ এদিকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, চীন একইসঙ্গে ‘দুই রাস্তায়’ চলার চেষ্টা করছে। ইউক্রেনে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় চীন অবদান রাখতে চায় দাবি করে তিনি বলেন, কিন্তু একইসঙ্গে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে সহায়তা করার জন্য ‘উদ্বেগজনক’ পদক্ষেপ নিচ্ছে বেইজিং। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্যেষ্ঠ এই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশিয়াকে বস্তুগত সহায়তা প্রদান বা রাশিয়াকে সহায়তায় পদ্ধতিগতভাবে নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি দেওয়ার বিষয়ে সম্ভাব্য প্রভাব ও পরিণতি সম্পর্কে (পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন) চীনকে সতর্ক করে দিয়েছেন।’ উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল। উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনও সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন। রয়টার্স, বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ