Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিউজিল্যান্ডে সাত দিন পরও নিখোঁজ ৬ সহস্রাধিক মানুষ

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০২ এএম

নিউজিল্যান্ডে গত ১২ ফেব্রুয়ারি আঘাত হানে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল। এতে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ৭ দিন পরও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৪৩১ জন মানুষ। এ কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স। খবর রয়টার্সের। প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলকে নিউজিল্যান্ডের এ শতকের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে অভিহিত করেছেন। খবরে বলা হয়েছে, ঝড়টি মূলত আঘাত হানে নিউজিল্যান্ডের উত্তর দিকের (নর্থ আইল্যান্ড) অঞ্চলগুলোতে। এরপর এটি যায় পূর্ব উপকূলে। যেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এটি। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হক বে এলাকায় আরও দু’জন মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে আহত হয়ে মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে রাজধানী ওয়েলিংটনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হিপকিন্স। তিনি জানান, অনেক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সুপেয় পানীয় অভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়া রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক এলাকায় সহায়তা পাঠানো যাচ্ছে না। ১২ ফেব্রুয়ারি ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির নর্থ আইল্যান্ডের সর্বউত্তরাঞ্চলে আঘাত হানার পর পূর্ব উপকূল ধরে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে গিয়েছিল, এর তা-বে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা জারি করে নিউ জিল্যান্ড সরকার। খবরে বলা হয়, দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স গ্যাবরিয়েলকে নিউ জিল্যান্ডের জন্য চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করেছেন। রোববার পুলিশ জানিয়েছে, হকস্ বে এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত পরিস্থিতিতে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানী ওয়েলিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী হিপকিন্স বলেছেন, আরও প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ রোববার পর্যন্ত ৬৪৩১ জন মানুষ নিখোঁজ আছেন, আগে নিখোঁজ থাকা আরও ৩২১৬ জন নিরাপদ আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই দুর্যোগে জীবন ‘ওলটপালট’ হয়ে গেছে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেতে ‘খাড়া পর্বতে উঠার’ মতো কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে বলে হিপকিন্স মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে, সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে আর রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কিছু এলাকায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে গেছে। সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পণ্য সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে, বহু ফসল ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ২৮ হাজার বাড়ি এখনও বিদ্যুৎবিহীন। “প্রত্যেকটি দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞের প্রকৃত বিস্তৃতি ও ক্ষতি আরও পরিষ্কার হচ্ছে,” বলেছেন তিনি। হিপকিন্স জানান, এ পর্যন্ত ১২টি আন্তর্জাতিক ত্রাণ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে নিউ জিল্যান্ড, এদের মধ্যে ফিজির একটি দল পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় অংশ নিতে শিগগিরই আসবে। অস্ট্রেলিয়া থেকে জরুরি পরিষেবার ২৭ জন কর্মী এসেছেন এবং তারা ত্রাণ উদ্যোগে সহায়তা করছেন। দেশটির বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে উপকূলীয় এলাকা মুরিওয়াই ও পিহাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো দ্রুত পুনর্র্নিমাণ করতে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা শুরু করেছে অকল্যান্ড থেকে যাওয়া কাউন্সিল। ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে যেসব এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে সেখানে দেশটির জরুরি পরিষেবা ও সামরিক বাহিনী হেলিপ্টারের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় সরবারহ নিয়ে গিয়ে ফেলছে। এসব এলাকার খামার, সেতু, গবাদিপশু পানির তোড়ে ভেসে গেছে এবং ঘরবাড়ি তলিয়ে আছে। লুটপাটের খবর আসায় পুলিশ হকস বে ও নিকটবর্তী তাইরাউহিটিতে অতিরিক্ত ১০০ কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন। “আইন শৃংখলা বজায় রাখতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে,” বলেছেন হিপকিন্স। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ