গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
প্রথমবারের মতো একক সফরে আজ মঙ্গলবার ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা।
সফরকালে তিনি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গেও তার সৌজন্য সাক্ষাৎ ও আলাপ হতে পারে। এসব বৈঠকে ভারতের শিল্পপতি গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা নিরসনে আলোচনা হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
অবশ্য পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট অংশীজন আছে। তারাই মূলত এই প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো নিয়ে কাউন্টার পার্টের সঙ্গে আলোচনা করে থাকে। এটি সরাসরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি, জানানো হলে আমরা প্রসঙ্গটি তুলব।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অথবা সৌজন্য আলাপে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সংশোধন ও জটিলতা নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, সেটি ধোঁয়াশার মতো বিষয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টির দেখভাল না করলেও আলোচনা যে হবে না বা হচ্ছে না বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। তিনি (বিনয় মোহন কোয়াত্রা) পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ছাড়াও হাই-প্রোফাইল বৈঠক করবেন, সেখানে এটি আলোচনা হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গণমাধ্যমকে বলেছেন, চুক্তিটি এক সার্বভৌম সরকারের সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। ওই চুক্তির সঙ্গে ভারত সরকার জড়িত নয়। বাংলাদেশ বিদ্যুতের দাম কমাতে তৎপর এমন কোনো খবরও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জানা নেই। প্রতিবেশী ‘প্রথম নীতি’ অনুযায়ী ভারত তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী, যা উন্নয়নের জন্য সহায়ক। ভারত চায় তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল প্রতিবেশীদেরও সমৃদ্ধ করুক।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে পানি, বাণিজ্য, সীমান্ত পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা, লাইন অব ক্রেডিটসহ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয় আলোচনার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সহযোগিতার চলমান বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে। ভারতে আগামী সেপ্টেম্বরে ডি-২০ শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য সফর এবং এ বছরের মাঝামাঝি দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
আদানি পাওয়ারের চুক্তি সম্পর্কে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাতে ইউএনবি ও দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়লার দাম বলা হয়েছিল প্রতি টন ২৫০ ডলারের নিচে। কিন্তু সেখানে দাম ধরা হয়েছে ৪০০ ডলারের ওপরে। আমরা চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য ভারতীয় কোম্পানিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গত ৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় জায়ান্ট আদানি গ্রুপের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সংশোধনের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ। ওই চুক্তিতে গৌতম আদানির কোম্পানিটি কয়লার দাম অনেক বেশি চেয়েছিল। এ কারণে সেটি কমাতে তৎপর হয়েছে বিপিডিবি। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়ার কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি।
এ চুক্তি প্রথমে বাংলাদেশ ও ভারত ‘উভয়ের জন্য লাভজনক’ বলে মনে হলেও আসলে তা বাংলাদেশের জন্য ‘খুবই কম লাভজনক’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়। সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় বাংলাদেশ কবে বিদ্যুৎ পাবে, তা স্পষ্ট নয়।
ওয়াশিংটন পোস্টকে সিডনিভিত্তিক জ্বালানি বিশ্লেষক টিম বাকলি জানিয়েছেন, গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাওয়ার পর কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও আদানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে বছরে প্রায় ৪৫ কোটি ডলার দিতে হবে বাংলাদেশকে। বিদ্যুৎ খাতের বৈশ্বিক মান অনুসারে যা ‘উচ্চমূল্য’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।