Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

১লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস ঘিরে ফুলের বাজার সরগরম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৭:৩০ পিএম

 ‘বসন্ত আজ আসল ধরায়/ফুল ফুটেছে বনে বনে/শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায় ফাল্গুনী মোর মন-বনে/ফুলগুলি হায় ঝরেছিল হিমেল হাওয়ার পরশনে/দখিন হাওয়ার হিল্লোলে আজ প্রিয়তমের স্পর্শ নে...।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার কবিতায় বসন্তের পদধ্বনি, ভালোবাসা আর ফুল গেঁথেছিলেন এক সুতোয়।

আবার আসছে বসন্ত, আসছে ভালোবাসার দিন। ঋতুরাজ বসন্ত শুরু আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)। ঋতুরাজ বসন্ত বরণে আনন্দে মাতবে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ। বাসন্তী রঙের শাড়িতে সাজবে তরুণীরা। মাথায় গুঁজবে বাহারি ফুল। একইসঙ্গে কাল বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানোর অন্যতম উপকরণ ফুল। প্রেমিক তার প্রেমিকাকে উপহার দেবে লাল গোলাপ।

আর এই দুইটি দিবস ঘিরে দেশের হাটবাজারে ফুলের পসরা নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠেছে শাহবাগের ফুলের বাজার। ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় এখানকার ফুল ব্যবসায়ীদের। এতে করে ফুল বেচাকেনার জন্য নির্ধারিত স্থানের সীমানা পেরিয়ে ফুটপাতেও নানা রঙের ফুল বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতেও ফুলের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন ভ্রাম্যমাণ ফুল বিক্রেতারা। বছরব্যাপী ফুল ব্যবসার প্রায় ৪০ শতাংশই বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে বিক্রি হয়ে থাকে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা আরও জানান, এ বছর গোলাপ একশ পিস একসঙ্গে বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায়। তবে এক পিস লাল গোলাপ কিনতে গেলেই গুনতে হবে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। কয়েকদিন আগে ছিল ১৫-৩০ টাকা। তবে গোলাপ ছাড়া বাকি ফুলগুলোর দাম আছে আগের মতোই। গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

শাহবাগের নাঈম ফ্লাওয়ার ওয়ার্ল্ড নামের ফুল দোকানের মালিক নাঈমুর রহমান বলেন, আগামীকাল বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের চাহিদা বেশি। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আজ থেকেই ফুল বিক্রি ভালো হচ্ছে। গোলাপের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, এরপর আছে গাঁদা। বিভিন্ন জাতের গোলাপ ও গাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৫০-১০০ টাকায়। আলাউদ্দিন পুষ্পালয় নামে আরেক ফুল দোকানের মালিক খলিলুর রহমান বলেন, আমরা এই দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। আজ মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে, তবে আগামীকালের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি ভালো বিক্রি হবে। গোলাপ ফুলের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। প্রতি পিস আমাদের কিনতে হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায় আর বিক্রি করছি ৫০-১০০ টাকায়।

আদর্শ ফ্লাওয়ার শপের মালিক ইমন বলেন, গোলাপ ছাড়া বাকি ফুলগুলোর দাম আগের মতোই। গোলাপের চাহিদা বেশি হওয়ায় দামটা একটু বাড়তি। সবাই গোলাপ কিনছে বেশি। টিএসসির ভ্রাম্যমাণ ফুলের দোকান বসিয়েছে নাজমুল নামের এক তরুণ। তার দোকানে ভিড় লেগে থাকতে দেখা গেছে। কেমন বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিক্রি ভালোই হচ্ছে। আগামীকাল আরও বেশি বিক্রি হবে। তবে হঠাৎ করে গোলাপের দাম বেড়ে গেছে। প্রতি পিস গোলাপ আমরা ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি করছি আর মালা ১০০ টাকা।

ফার্মগেট থেকে ফুল কিনতে এসেছেন শারমিন নাহার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০০ টাকার কমে কোনো ফুল নেই। অথচ আগে এটার দাম ছিল ১৫-৩০ টাকা। এই দিবসগুলোতে এত দাম রাখা উচিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার বলেন, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল কিনতে এসেছি। এবার ফুলের দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় ১৬শ’ কোটি টাকার ফুলের বাজার রয়েছে। এর মধ্যে উৎসবকেন্দ্রিক বেচাকেনা হয় এক-তৃতীয়াংশ। ভালোবাসা দিবস অথবা বর্ষবরণের মতো উৎসবে একদিনেই দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে।

বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বেশি ফুলের চাষ হচ্ছে যশোরে। অন্যান্য এলাকায়ও ফুলের চাষ বেড়েছে। সবমিলিয়ে সারাদেশে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে। রজনীগন্ধা, গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রডস্টিক, কেলেনডোলা ও চন্দ্র মল্লিকাসহ দেশের চাষিদের উৎপাদিত ১১ ধরনের ফুল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। এছাড়া রপ্তানিও হচ্ছে। অন্যদিকে, দেশে চীন এবং থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ থেকে গোলাপ, লিলি, অর্কিড, কার্নিশন, নীলকণ্ঠ ও জিপসিসহ বেশ কিছু ফুল আমদানি করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ