সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ব্যাপক সাড়া ফেলছে ভুটানে। দেশটির ব্যবহারীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। খ্যাতি ছাড়াও তাদের আয়ের অন্যতম সুযোগ করে দিচ্ছে এ প্ল্যাটফর্মগুলো।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ভুটান লাইভের প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশিরভাগ প্রভাবশালীদের কাছে অর্থ উপার্জনের জন্য টিকটক ও ইউটিউব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এরকম কিছু ব্যবহারকারীর সঙ্গে কথা বলেছে ভুটান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন; যারা বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে সেখান থেকে বেশ ভালো উপার্জন করতে পারছে।
টিকটিক একটি শর্ট-ভিডিও তৈরি ও শেয়ারিং প্লাটফর্ম। যারা ভিডিও তৈরি করেন তারা অন্যান্য ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে গিফট পেতে পারেন, যেগুলো ডলারের রূপান্তরিত হতে পারে। কিন্তু ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা ব্যবহারকারীরা বলছেন, বড় ঝামেলা সেই অর্থ তুলে নেওয়া।
ফুন্টশো শোদেন নামের জনপ্রিয় টিকটকার ভুটান লাইভকে বলেন, “টিকটকে আমি অনেকের কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছি, যারা আমার পোস্টের প্রশংসা করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- আমার পেপাল অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে বিদেশে থাকা আমার এক বন্ধুর কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম। পরে সে আমাকে সাহায্য করে।”
থিনলে গাইল্টশেন নামের আরেক টিকটকার বলেন, ডলারকে আমাদের রুপিতে কনভার্ট করতে আমাদের কাছের এবং বিশ্বস্ত বন্ধুদের সাহায্য নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলো আমাদের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে দেয়, তবে আমাদের ভুটানি টিকটকারদের তাদের বন্ধুদের ওপর নির্ভর করতে হবে না। নিজেরাই তুলতে পারবে।
বর্তমানে পেপ্যালের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে দেশের ব্যাংকগুলোর সুযোগ নেই। ভুটানের রয়্যাল মনিটারি অথরিটি (আরএমএ) বলেছে, তারা আগে পেপ্যালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু ভুটানের স্বল্প জনসংখ্যার কারণে কোম্পানিটি নিছকই আরএমএর সঙ্গে কার্যক্রম বা সম্পর্ক তৈরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন অন্যান্য বিকল্পগুলো খুঁজছে।
এদিকে ইউটিউব হলো আরেকটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফর্ম, যেটি ব্যবহার করে ভুটানিরা অর্থ উপার্জন করছে। ভুটানের প্রভাবশালী ইউটিউবাররা অন্য যেকোন দেশের প্রভাবশালীদের ব্যবহারকারীদের মতোই ইউটিউবে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ কনটেন্টগুলো হলো মিউজিক ভিডিও এবং ভিডিও ব্লগ। এসব ভিডিওর ভিউয়ের ওপর নির্ভর করে অর্থ উপার্জন।
জনপ্রিয় একজন ইউটিউবার তানদিন ফুব বলেন, “ইউটিউবের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে করা হয়, যেগুলো স্থানীয় ব্যাংকগুলো সমর্থিত। অ্যাডসেন্স ইউটিউব কনটেন্ট মনিটাইজেশনের মাধ্যমে পরিচালনা করে গুগল…আমাদের স্থানীয় ঠিকানা যাচাই করতে হয় এবং অবস্থান যাচাইয়ের জন্য তারা আমাদের ভুটান পোস্টে তিনটি পিন পাঠায়।”
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম এর মতো অন্যান্য অ্যাপ থেকে অর্থ উপার্জন করছে ভুটানিরা।