Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভূমিকম্প : আল্লাহকে স্মরণ করুন, ঈমানী জিন্দেগী অবলম্বন করুন-২

মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

আল্লাহর পক্ষ হতে ছোট ছোট বিপদাপদরূপে কিছু শাস্তি যখন আসে তখন আল্লাহর কথা স্মরণ হওয়া, অন্তরে তাঁর ভয় জাগা এবং তাঁর দিকে ফিরে আসা কাম্য। তাহলে মৃত্যুর আগেই মানুষ তাঁর রবের পরিচয় পেয়ে যায় এবং আখিরাতের শাস্তি থেকে নাজাত পেয়ে যায়। পক্ষান্তরে ছোট ছোট বিপদে মানুষ যদি সাবধান না হয়, এমনকি অন্যের ওপর পতিত বড় বড় বিপদ বা প্রাণঘাতী বিপদেরও নানা সত্য-মিথ্যা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে আল্লাহকে ভুলে থাকার চেষ্টা করে, তো এটা সেই ‘কসওয়াতে কলব’ ‘অন্তরের কাঠিন্য’ যা মানুষের জন্য অতি বড় বিপদ এবং আরো ভয়াবহ বিপদের ভ‚মিকা।

এই অবস্থার আরেক নাম ‘আল আমনু মিন মাকরিল্লাহ’-আল্লাহর পাকড়াও সম্পর্কে নির্ভয় ও বেপরোয়া হওয়া। সূরা আরাফে ইরশাদ হয়েছে : ‘আল্লাহর পাকড়াও সম্পর্কে নির্ভয় তো হয় শুধু ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা’। (সূরা আরাফ : ৯৯)।

এর আগের আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা’আলা কত স্পষ্টভাবে তাঁর বান্দাদের সাবধান করেছেন : রাত্রিকালে যখন তারা ঘুমন্ত থাকে তখন আমার শাস্তি এসে তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে এটা হতে কি জনপদের অধিবাসীগণ নির্ভয় হয়ে পড়েছে? অথবা জনপদের লোকেরা কি এই ভয় রাখে না যে, আমার শাস্তি তাদের ওপর তখন আপতিত হবে, যখন তারা পূর্বাহ্নে আমোদ-প্রমোদে রত থাকবে? তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে? সর্বনাশগ্রস্ত স¤প্রদায় ছাড়া আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউই নিঃশঙ্ক (নিরাপদ) হতে পারে না। (সূরা আরাফ : ৯৭-৯৯)।

তো আল্লাহর পাকড়াও সম্পর্কে নিশ্চিন্ত ও বেপরোয়া হওয়া কাফির কওমের স্বভাব, ইসলামে তা সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহসমূহের একটি। বিখ্যাত মনীষী সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘সবচেয়ে বড় গোনাহ চারটি: আল্লাহর সাথে শরীক করা, আল্লাহর পাকড়াও সম্পর্কে বেপরোয়া হওয়া, তাঁর ক্ষমা ও করুণা সম্পর্কে নিরাশ হওয়া, তাঁর দয়া ও দান সম্পর্কে আশাহীন হওয়া। (আল মুসান্নাফ, আব্দুর রাযযাক : ১৯৭০১)।
পক্ষান্তরে আখিরাতমুখী জীবন ধারার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ঈমান ও আমলে সালেহ, আল্লাহর দিকে রুজু করা এবং আল্লাহর নিদর্শনসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা । ইরশাদ হয়েছে : তিনিই তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং আকাশ থেকে তোমাদের জন্য ‘রিজিক’ বর্ষণ করেন। উপদেশ তো শুধু সেই গ্রহণ করে, যে আল্লাহ অভিমুখী। (সূরা গাফির : ১৩)।

সূরাতুর রাদ-এ ইরশাদ হয়েছে : তোমার রবের নিকট থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা যে সত্য বলে জানে, আর যে অন্ধ তারা কি সমান? উপদেশ তো গ্রহণ করে শুধু বুদ্ধিমানরাই, যারা আল্লাহর সাথে কৃত-অঙ্গীকার রক্ষা করে এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে না। আর আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুণœ রাখার আদেশ করেছেন তা অক্ষুন্ন রাখে। আর ভয় করে আপন রবকে, ভয় করে কঠোর হিসাবকে। (সূরা রাদ : ১৯-২১)।

এ হচ্ছে আখিরাতমুখী জীবনধারার অনুসারীদের বৈশিষ্ট্য। এঁদের আল্লাহ সকল ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পরিচালিত করেন। এঁরা সকল ঘটনায়, সকল পরিস্থিতিতে আল্লাহকে স্মরণ করেন আর আল্লাহ বিস্মৃতির যত উপায় ও অনুষঙ্গ আছে সেগুলোকে গাফিলত ও বিস্মৃতি বলে চিহ্নিত করতে পারেন।

মুমিনের কর্তব্য, ঈমানী বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং তা অর্জনে সচেষ্ট হওয়া আর কুফরী স্বভাব সম্পর্কে সাবধান হওয়া এবং নিজের চিন্তা ও কর্মকে এর কলুষ থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন।



 

Show all comments
  • salman ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২:৪৯ এএম says : 0
    Ameen, Summa AMEEN
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন