Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নারী ও শিশুদের ওপরে লাঠিচার্জের অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি সীমান্তবর্তী গ্রামে নারী ও শিশুদের ওপরে বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অডিভযোগ উঠেছে। শনিবার অভিযোগের সরেজমিন তদন্তে এপিডিআর নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন সেখানে গিয়েছিল। এপিডিআর বলছে মলুয়াপাড়া নামের ওই গ্রামটির মানুষ বেশ কিছুদিন ধরেই নতুন করে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার বিরোধিতা করছিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএসএফ যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে বেড়ার কাজ শুরু করলে বিক্ষোভ দেখান ২০০ নারী ও শিশু। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই বিক্ষোভের ওপরেই লাঠিচার্জ করে বিএসএফের পুরুষ সদস্যরা। এতে ওই গ্রামের ১১ নারী আহত হয়েছেন। এদিকে বিএসএফ তাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, ওই দিন কোনো লাঠিচার্জই হয়নি। গ্রামবাসীরা সরকারি যন্ত্রপাতি ভাঙতে উদ্যত হলে তারা লাঠি উচিয়ে তাদের সরিয়ে দিয়েছেন। মলুয়াপাড়ার বাসিন্দা জরিনা বিশ্বাস টেলিফোনে বলেন, ‘গত ৮ তারিখ ছিল হাটবার। তাই পুরুষরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে বিকেল ৩টার দিকে রাস্তার রোলারসহ যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে তারকাটার বেড়া দেয়ার কাজ শুরু করে বিএসএফ। আমরা যখন বাধা দিতে যাই, আমাকেই প্রথমে লাঠি দিয়ে মারে তারা। বিএসএফের কোনো নারী কনস্টেবল ছিল না, সবাই পুরুষ মানুষ’। জরিনা বিশ্বাস বলেন, ‘আমার পিঠে লাঠি দিয়ে মারে আর সাথে হিন্দিতে অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল ওরা। একজন বিএসএফ আমার হাত ধরে রেখেছিল আর গালিগালাজ করে মারছিল। আবার পাথরও ছুঁড়ছিল। এমনকি বাচ্চা ছেলে মেয়েরা, যারা মোবাইলে ভিডিও করছিল, তাদের তাড়া করে মোবাইল কেড়ে নিয়েছে।’ গ্রামবাসীদের অভিযোগ আর এপিডিআরের সরেজমিন তদন্তের প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলা যোগাযোগ করেছিল বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত অঞ্চলের সদর দফতরে। বাহিনীর মুখপাত্র ও ডিআইজি এ কে আরিয়া জানিয়েছেন, ‘সেদিন ওখানে লাঠিচার্জের কোনো ঘটনা হয়নি। স্থানীয় পুলিশকেও আমরা খবর দিয়েছিলাম। গ্রামের মানুষ বিএসএফ প্রহরীদের দিকে পাথর ছুঁড়ছিলেন আর জেসিবি প্রভৃতি যেসব মাটি কাটার সরঞ্জাম সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেগুলির ক্ষতি করার চেষ্টা করছিলেন। বাহিনী গ্রামবাসীদের ওই প্রচেষ্টায় বাধা দিয়েছে মাত্র। ডিআইজি আরিয়া জানায়, ‘নারী কনস্টেবল ছিলেন না বলে যে অভিযোগ আপনার কাছে করেছেন গ্রামবাসীরা, সেই প্রসঙ্গে বলি, সব জায়গায় তো নারী কনস্টেবল থাকেন না। তাদের খবর দিলে আসতে কিছুটা সময় তো লাগেই।’ কাঁটাতারের বেড়া দেয়া নিয়ে গ্রামবাসীরা যে অভিযোগ তুলেছেন, সেই ব্যাপারে বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন যে ওখানে নতুন করে বেড়া দেয়া হচ্ছে না। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে যে বেড়া ওখানে দেয়া হয়েছিল, সেখানেই নতুন করে কাঁটাতার লাগানো হচ্ছে। ডিআইজি বলেন, ‘পুরেনো কাঁটাতারের বেড়া অনেক জায়গাতেই আবহাওয়া আর চোরাকারবারীরা কেটে দেয়ার ফলে নষ্ট হয়ে গেছে। সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে কোথাও ১৫০ মিটার কোথাও ১৮০ মিটার দূরে বেড়া দেয়া হচ্ছে। ওই জমি বিএসএফ অনেক আগেই অধিগ্রহণ করে রেখেছে।’ ওই গ্রামের বাসিন্দারা বেশকিছু দিন ধরেই আন্দোলন করছেন কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার বিরুদ্ধে। তারা বলছেন, যেখানে বেড়া দেয়ার কথা হচ্ছে, তাতে গ্রামের একটা বড় অংশই বেড়ার বাইরে চলে যাবে। তার ফলে মূল ভূখ-ে আসার জন্য তাদের বেড়ার মাঝে মাঝে থাকা গেট ব্যবহার করতে হবে। ওই গেটগুলো বিএসএফ সময় অনুযায়ী খোলে আর বন্ধ করে। বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ