Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভুতুড়ে পিচে আড়াই দিনেই কুপোকাত অজিরা

নাগপুর টেস্ট

স্পোর্টস ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ভারতে আসার আগে অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিত ছিল যে উইকেটের স্পিন বিষে নীল হতে যাচ্ছে তারা। তাইতো সিডনিতে রুক্ষ উইকেট বানিয়ে অনুশীলন করেছিল অজিরা, ভারতে এসে জোগাড় করেছিল রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো বোলিং অ্যাকশনের নেট বোলারও। প্রস্তুতিতে কোন ঘাটতি ছিল না তাদের। সে প্রস্তিতির ফল হচ্ছে আড়াই দিনের মধ্যে নাগপুর টেস্ট হেরে অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ শুরু করা। সফরকারীদের কপালের লিখন আগেই লেখা হয়ে গিয়েছিল। মন্থর গতির ও নিচু বাউন্সের পিচের সঙ্গে ভারতীয় স্পিনারদের জুজুই অস্ট্রেলিয়ার পতনের মূল কারণ। গতকাল ভারত প্রথম ইনিংসে ৪০০ রানে অলআউট হওয়ার পরই মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে গিয়েছিল দুই দল। ২২৩ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার সামনে ছিল কঠিন পরীক্ষা। তবে এক সেশনেই ৯১ রান যোগাড় করে ১০ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ফলে ইনিংস ও ১৩২ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।
ভারতীয় স্পিন ত্রয়ী জাদেজা-অশ্বিন-অক্ষরের বোলিং বিষে প্রথম ইনিংসে একের পর এক উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রানে অলআউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে অজিদের ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছিলেন জাদেজা। দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি তুলে নিয়েছেন জোড়া উইকেট। তবে গতকাল অজিদের নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছেন আরেক অভিজ্ঞ স্পিনার অশ্বিন। মাত্র ১২ ওভার হাত ঘুরিয়েই তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। প্রথম ও দ্বিতীয় মিলিয়ে মোট ৮ উইকেট তার ঝুলিতে।
কথায় আছে সকালের সূর্য দেখেই নাকি বুঝা যায় সারাদিন কেমন কাটবে। ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে ভারতীরা আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স করে যাচ্ছিল প্রথম দিন থেকেই। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের পরই বুঝা যাচ্ছিল নাগপুর টেস্ট জিততে যাচ্ছে রোহিতের দল । কিন্তু তা যে আড়াই দিনেই হবে, তার পক্ষে বাজি ধরার লোক বেশি ছিল না। তারপর ভারতের ঘরের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ৪০০ রানের পাহাড় বানানো। গতকাল দ্বিতীয় সেশনে সফরকারীরা যখন ফের ব্যাট করতে নামে ২২৩ রানে পিছিয়ে থেকে, তখন-ই বা কে ভেবেছিল মাত্র আড়াই ঘণ্টা ক্রিজে থাকবেন ১১ অজি ব্যাটার? অশ্বিন-জাদেজারা রীতিমতো তা-ব চালালেন প্রতিপক্ষের উপর। তাঁদের স্পেল বুঝতেই পারলেন না স্মিথ, ওয়ার্নাররা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন স্মিথ। জাদেজা ও অশ্বিনের জোড়া উইকেট নেন শামিও।
ব্যাট হাতে এই টেস্টের বিচারে দুরন্ত পারফর্মই করেছে ভারতীয় ব্যাটাররা। তবে তা দিয়ে পিচ নিয়ে যাবতীয় বিতর্কে পানি ঢালা যাবে না। এমনকি রোহিত শর্মার ১২০ রানের ইনিংসের পরও না। কারণ এই অস্ট্রেলিয়া দলে শেন ওয়ার্ন বা ম্যাকগিলের মত কোন স্পিনার নেই। তাই পালটা আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে না রোহিত-বিরাটদের। তাছারা এই অস্ট্রেলিয়া চেনা কন্ডিশন ছাড়া ব্যাটিংয়ে একদমই পারদর্শী নয়। স্টিভ ওয়াহ বা রিকি পন্টিংয়ের দলগুলোতো বহু দূরের ব্যাপার, এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের গভীরতা মাইকেল ক্লার্কের সময়টার মতও নয়। তাই উইকেট নিয়ে বিরাট প্রশ্ন থেকেই যাবে। মোহাম্মদ শামির মত একজন আনাড়ি ব্যাটার ৩৭ রানের ইনিংস খেলে ফেলতে পারে বলে এই ধরনের মন্থর পিচকে যথার্ত বলে দায় সারা যাবে না।
এই জয়ের সঙ্গেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের পথে আরও একধাপ এগোলো ভারত। চলতি চার টেস্টের সিরিজ ২-০ অথবা ৩-১-এ জিতলেই ফাইনালে পৌঁছে যাবেন রোহিতরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ