Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাপানের শ্রমবাজারে প্রকট লিঙ্গভিত্তিক বেতনবৈষম্য

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

উন্নত দেশগুলোর মধ্যে জাপানে লিঙ্গভিত্তিক বেতনবৈষম্য পরিস্থিতি অন্যতম উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। এশিয়ার দেশটির সামনে প্রশ্ন হলো কীভাবে আজও ক্রমাগতভাবে টিকে থাকা সমস্যাটিকে সামনে আনা যায়, পাশাপাশি নারীদের দক্ষতা ও পেশার বিকাশ ঘটিয়ে বৈচিত্র্য যোগ করা সম্ভব হয়। খবর নিপ্পন ডটকম। ১৯৮৬ সালে নারী-পুরুষ সবার জন্য সমান কর্মসংস্থানের সুযোগবিষয়ক আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশকে উৎসাহিত করার জন্য নেয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ। এর মধ্যে রয়েছে পেশাজীবন ও পারিবারিক জীবনে ভারসাম্য আনতে সংশ্লিষ্ট আরো কয়েকটি আইন প্রণয়ন ও তার ব্যবহার। এরপর মূলত জাপানের নারীদের কর্মপরিবেশে খানিকটা বদল ঘটে। জাপানের স্কুল বেসিক সার্ভে অনুসারে, ১৯৮৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ-ি পেরিয়ে চার বছরের স্নাতকে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ছিল ১৩ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালে তা বেড়ে যায় ৫১ শতাংশে। একইভাবে ২০২০ সালে ১৫-৬৪ বছর বয়সী নারীর মধ্যে প্রায় ৭১ শতাংশ কোনো না কোনো পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে হারটি ছিল ৫৩ শতাংশ। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে সময়ের ব্যবধানে বড় ধরনের অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। জাপানের লেবার ফোর্স সমীক্ষা অনুসারে খ-কালীন, নিবন্ধিত এবং স্থায়ী কর্মী নয়, এমন পেশাজীবী নারীদের সংখ্যা গণনায় দেখা যায় ১৯৮৬ সালে তাদের উপস্থিতির হার ছিল ৩২ শতাংশ, যা ২০২০ সালে বেড়ে ৫৬ শতাংশে পৌঁছে। জাপানের ন্যাশনাল ফার্টিলিটি সার্ভে অনুসারে, ২০১০-এর দশকের শেষের দিকে প্রথম সন্তানের জন্মের পর ৭০ শতাংশ নারী কর্মী পুনরায় চাকরিতে ফিরে আসেন। যদিও আগের কয়েকটি দশক ধরে হারটি প্রায় ৪০ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করে। তবে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কর্মীদের মধ্যে বড় ধরনের বৈষম্য বিদ্যমান। ২০২২ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের লিঙ্গ বৈষম্যবিষয়ক প্রতিবেদনে জাপানের অবস্থান ১৪৬টি দেশের মধ্যে ছিল ১১৬তম। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে দেশটির অবস্থান মূলত নিচের দিকে। শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ, পূর্ণকালীন কর্মীদের বেতন ও কর্মস্থলে নারী ব্যবস্থাপকদের উপস্থিতির অনুপাতের ক্ষেত্রে জাপান ও কোরিয়ায় লিঙ্গ বৈষম্য ওইসিডি (অরগানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) তালিকাভুক্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় দৃশ্যমান। এ তথ্যগুলো ইঙ্গিত দেয়, জাপানে নারীদের জন্য সন্তান ধারণ করাটা চ্যালেঞ্জিং, যা নারীর কর্মসংস্থান বা পেশাজীবনের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতাও। তবে জরিপে যে বিষয়টি দেখানো হয়নি, তা হচ্ছে জাপানে পূর্ণকালীন পদে বা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে যে নারীরা কর্মরত, তারা নিজেদের দক্ষতার পরিপূর্ণ ব্যবহার করতে সমর্থ। তাছাড়া পূর্ণকালীন পদে কর্মরত নারীর মধ্যে যারা তাদের দক্ষতার কার্যকরী ব্যবহার করতে সমর্থ, পুরুষের তুলনায় তাদের বেতনবৈষম্যও কম। তবে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, লিঙ্গভিত্তিক বেতনের ব্যবধান কমাতে শুধু নারীদের শ্রম অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করাই যথেষ্ট নয়, বরং তাদের কাজের সুযোগ বাড়ানো বা পূর্ণকালীন পদে নিয়োগ প্রদান প্রয়োজন। এভাবে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের দক্ষতার পরিপূর্ণ ব্যবহার করা সম্ভব হবে। নিপ্পন ডটকম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ