Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভোটে টাকার ভূমিকা অস্বীকারের উপায় নেই : ওবায়দুল কাদের

| প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে টাকা ছড়ানোর যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
তিনি বলেন, এখানে টাকার যে একটা ভূমিকা আছে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। নির্বাচন কমিশন যেখানে টাকার অংক নির্ধারণ করে দিয়েছে সে অংকটা কোনো ইলেকশনেই (নির্ধারিত) থাকছে না, সীমাটা অনেক জায়গাতেই লঙ্ঘিত হচ্ছে। টাকা কালো কী সাদা, আমি জানি না। আমাদের দেশে নির্বাচনে মানি ফ্যাক্টর এখনও। ‘মানি হ্যাজ এ রোল টু প্লে’- এটা অস্বীকার করার উপায়  নেই। সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয়সীমা মেনে চলা উচিত। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেতুমন্ত্রী এ কথা বলেন।
দলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো অবস্থায়ই নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তারা এলাকায় অবস্থান করতে পারবেন না। নির্বাচনী কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারবেন না।
দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচনে তারা দলীয় মনোনয়ন দেননি। তবে অনেককেই সমর্থন দিয়েছেন। এই সমর্থনের বাইরে কেউ যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে তারা নিষেধ করতে পারেন না। কারণ, নির্বাচন করার অধিকার সবার আছে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে  ভোটের আগের দিন সচিবালয়ে অনির্ধারিত ব্রিফিংয়ে এ নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আওয়ামী লীগের  যেসব প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন তাদের প্রতি কোনো বার্তা আছে কি নাÑ এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, এই ইলেকশনে অপজিশন অংশ  নেয়নি। অপজিশন বলতে বিএনপি-জাতীয় পার্টি, তাদের কোনো অংশগ্রহণ এই নির্বাচনে নেই। এখানে আমরা কাউকে মনোনয়ন  দেইনি, সমর্থন করেছি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাকি যারা আছেন, আমরা একটা পর্যায়ে বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করলাম যে, অপজিশন নেই ইলেকশনটায়, একেবারেই আনঅপোজড সবাই হয়ে যাবে, এটা কেমন যেন একটা রং  মেসেজ যায়। সেজন্য আমাদের পলিসি যেটা সেটা হচ্ছে, আমাদের পার্টি সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নির্দেশনা আছে। কিন্তু যারা প্রতিপক্ষ হিসেবে নির্বাচন করছে, দলীয় লোক হলেও তাদের প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ বা কনভিন্স করাÑ সে বিষয়টা আছে, কিন্তু চাপাচাপিটা করা থেকে আমরা বিরত  থেকেছি।
‘কৌশল’ হিসেবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়েই তারা নির্বাচিত হোক সেটা আমরা  চেয়েছি। এখানে অপজিশন থাকলে তো বিষয়টা ভিন্ন কিছু হতো।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো মন্ত্রী-এমপি যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন সে বিষয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নির্দেশনা আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠিন।
কেউ কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে তাদের আবারও সতর্কবার্তা পাঠাতে চাই- আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তারা এলাকায় অবস্থান করতে পারবেন না, কোনো প্রকার নির্বাচনী কর্মকান্ডেও অংশ নিতে পারবেন না। যারা এলাকায় আছেন স্ব-স্ব এলাকা ত্যাগ করুন।
 জেলা পরিষদ ভোটে টাকার খেলার কথা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েই ওবায়দুল কাদের বলছেন, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে আদর্শ বলে মনে করেন তিনি। আমার মনে হয় নারায়ণগঞ্জে যে নির্বাচন হলো, ওখানে কিন্তু টাকা ছড়াছড়ির বিষয়টা আসেনি। এই ইলেকশনকে মডেল ইলেকশন হিসেবে গণ্য করতে পারি। ইলেকশন হয়েছে ফ্রি, ফেয়ার,  ক্রেডিবল, পার্টিসিপেটরিÑ যেখানে কালো টাকার ছড়াছড়ি নিয়ে কেউ প্রশ্ন করেননি।
নারায়ণগঞ্জ আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে আমরা চাইলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে, ইউ ক্যান নট গো বিয়ন্ড কনস্টিটিউশন।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বেশ কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এতগুলো সিটি করপোরেশনে জেতার পরও নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তুলে লাভ নেই। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন দেখিয়ে দিলো নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন হওয়া দরকার মন্তব্য করে কাদের বলেন, দেরি হয়ে গেছে, বেটার লেট দেন নেভার। প্রেসিডেন্ট নিজেও বলেছেন বিষয়টি তিনি ভাবছেন এবং সক্রিয়ভাবে ভাবছেন। ইউ হ্যাভ টু ওয়েট সাম টাইম।
নতুন নির্বাচন কমিশন যখন গঠন হবে তারা নিশ্চয়ই জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে। আমাদের সাথে যখন সংলাপ হবে তখন আমরা এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ