Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বামীর চাপে নারীরা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে -মনিরুল ইসলাম

স্বেচ্ছায় কেউ আসেনি

| প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, নারীরা স্বামীর চাপে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। স্বেচ্ছায় কোনো নারী জঙ্গিবাদে আসেননি। গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় ‘সূর্য ভিলা’ নামে জঙ্গি আস্তানায় অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অর্থ কোথায় থেকে এসেছে সে বিষয়ে আত্মসমর্পণকারীরা কিছু ভাসা ভাসা তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মনিরুল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং আত্মসমর্পণকারীদের এখানো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানালেন সিটিটিসি’র প্রধান এ কর্মকর্তা।
নারী জঙ্গিরা নিজের ইচ্ছায় এ জঙ্গিবাদে এসেছে কী না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, নিজেদের ইচ্ছায় নারীরা এ পথে এসেছে, এমন তথ্য আমরা এখনো পাইনি। তবে কেউ কেউ স্বামীর প্ররোচনায় এ পথে এসেছে। এর মধ্যে তানভীর কাদেরের স্ত্রী স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছেন। তাকে এ পথে আসতে স্বামী বাধ্য করেছিল। তবে জঙ্গিবাদ পছন্দ করতেন না, কিন্তু মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের কথা চিন্তা করে এ পথে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
এছাড়াও জঙ্গি মারজানের স্ত্রী তার স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছেন। মারজানের স্ত্রী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মারজান ছিলো ডমিনেটিং স্বভাবের। তিনি তাকে জঙ্গিবাদে আসতে বাধ্য করেছিলেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নারীরা স্বামীর চাপে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। স্বেচ্ছায় এখনো কোনো নারী জঙ্গিবাদে এসেছেন বলে আমরা তথ্য পাইনি। তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। নারীদের পারিবারিক খোঁজ নিয়েও তেমন কোনো তথ্য আসেনি। তবে আশকোনার সূর্য ভিলায় আত্মসমর্পণকারী দুই নারী পরিষ্কার কোনো তথ্য দিচ্ছেন না বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, কয়েকজন জঙ্গির সাংগঠনিক নাম তারা বলেছেন। নারীদের দেওয়া তথ্যে অভিযান অব্যাহত।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, আশকোনার বাসায় চারটি পরিবারের সদস্য থাকত। মুসা বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। সাংগঠনিক কাজও এখান থেকে হতো। আর আস্তানার ভেতর থেকে ১২ লাখ টাকাসহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
মনিরুল বলেন, জঙ্গি মাঈনুল ইসলাম মুসাকে গ্রেফতার করা হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। সূর্যভিলা নামে ওই বাসাটি মূলত জঙ্গি মুসাই ভাড়া নিয়েছিল। সেখানে তার স্ত্রী ও মেয়ে থাকতো। তিনি আরও বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে এখানে কারা কারা আসতো তাদের কিছু সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেছে। মূলত এ আস্তানাটি অফিস কাম বাসা হিসেবে ব্যবহার হতো। আর মুসা সাংগঠনিক কাজে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতো। মাঝে মধ্যে এ বাসায় আসতো।
সূর্যভিলা জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতী ওই নারী ছিলো হতাশাগ্রস্ত। তার আগের স্বামী মারা যাওয়ার পর কথিত স্বামী সুমনের সঙ্গে বিয়ে হয়। পরে তিনিও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। আর মূলত হতাশার কারণেই ওই নারী আত্মঘাতী হামলার জন্য রাজি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে- জানালেন মনিরুল। তিনি বলেন, নিজেদের ইচ্ছায় নয়, স্বামীর প্ররোচনায় এবং আশ্রয় পেতেই নারীরা জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছেন। আর জঙ্গিরা নারীদের রাখছেন, তাদের নিজেদের প্রয়োজনে। তারা যাতে বাচ্চাদের জঙ্গিবাদের দীক্ষা দিতে পারে। সে কাজটিও নারীদের দিয়ে জঙ্গিরা করাচ্ছে।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:১১ পিএম says : 0
    আমি এদের সাথে একমত এরা স্বামীদের কথায় এই ভয়াবহ জীবনের সাথে জড়িত হয়েছে। আমি চাই এদেরকে এধরনের পরিস্থিতিতে আনার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হউক এবং সাজা দেয়া হউক। আর এটা যতদিন না করতে পারবে তত দিন তথা কথিত জেহদী সন্ত্রাস বন্ধ হবে না এটা আমি নিশ্চিত। তাই জননেত্রী হাসিনাকে বলতে চাই এসব মহিলারা হচ্ছে হাতের পুতুল এদেরকে যেদিকে ঘুরাবে সেদিকে ঘুরবে তাই দরকার কারিগরের। আমি জানি এসব কারিগর আবার ভীষন ক্ষমতা শালী বিদেশী শক্তিতে শক্তিমান।
    Total Reply(0) Reply
  • sabbir ahmod ১৩ মার্চ, ২০১৭, ৫:৩৪ পিএম says : 0
    এক হাতে তালি বাজে না। প্রাইভেট ধনী পরিবারের ছেলেরা যেভাবে জঙ্গিবাদে দীক্ষিত হচ্ছে তাতে মেয়েরাও হবে না এমনটা বলা যায় না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গিবাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ