গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বড় ভাই যুবদল নেতা গোলাম মাওলা শাহীনকে পুলিশ আটক করেছে সংবাদ পেয়ে শ্যামপুর থানায় ছুটে যান ছোট ভাই একেএম আমিনুল ইসলাম। আমিনুল ইসলাম কোন রাজনীতি করেন না। তবে তাকে পুলিশ আটক করে এবং পরদিন এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ছোট ভাইকে আটকের সংবাদ পেয়ে খালাতো ভাই থানায় গেলে তাকেও আটক করে এক রাত হাজতে রাখা হয়। গোলাম মাওলা শাহীন ছাড়া তাদের পরিবারের কেউই রাজনীতির সঙ্গে নহ্যৃনতম সম্পৃক্ত না থাকলেও ভাইয়ের সঙ্গে তাকেও আজ রিমান্ডে যেতে হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগি পরিবারের। তবে পুলিশের করা মামলায় রয়েছে এর সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৪৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলার বাবার জানাজা নামাজ শেষে ফেরার পথে শ্যামপুর পুলিশ তাকে আটক করে।
এদিকে পুলিশের মামলার বিবরণ অনুযায়ি বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে শ্যামপুর থানাধীন নতুন রাস্তা গেন্ডারিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের দুস্কৃতিকারীরা সরকার বিরোধী নাশকতা সৃষ্টি করতে একতাবদ্ধ হয়। পুলিশ তাদের অবস্থান টের পেয়ে বাধা দিতে গলে ইট-পাটকেল, ককটেল বিস্ফোরণ করে পালানোর সময়ে তাদের মধ্য থেকে চারজনকে আটক করা হয়। ওইদিন রাতেই তাদের বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় মামলা করে পুলিশ। শুক্রবার তাদেরকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে ৭দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে গোলাম মাওলা শাহীনকে ২ দিনের এবং অন্যান্যদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
৪৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলার জানান, তার বাবা আব্দুস সামাদ বৃহস্পতিবার মারা যান। এশার নামাজ পর স্থানীয় দলকানগর ছাপড়া মসজিদে জানাজা নামাজ শেষে জুরাইন কবরস্থানে তাকে কবর দেওয়ার সময়ে গোলাম মাওলা শাহীন উপস্থিত হন। তিনি কবরে মাটি দিয়ে এবং তাকে শাšøনা দিয়ে ফেরার সময়ে কবরস্থানের সামনে থেকেই পুলিশ আটক করে। ইটপাটকেল ও ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে একটা শোকাহত পরিবেশে তিনি এসেছেন। কবরস্থানের মতো জায়গায় এসেছেন। সেখানে কিভাবে ককটেল কিংবা ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে ?
ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী সিরাজুল ইসলাম নামের একজন জানান, ওইদিন রাতে গোলাম মাওলা শাহীনকে ধরার জন্য থানা পুলিশের একটি বড় বহর জুরাইন কবরস্থানে আসেন। তখন তিনি ভিতরে ছিলেন। বাইরে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহীনকে আটক করে পুলিশ। তবে সেখানে আগে-পরে কোন ইটপাটকেল-ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা তিনি দেখেননি, শব্দও শুনেননি।
গোলাম মাওলা শাহীনের স্ত্রী মাসুদা বেগম সমকালকে বলেন, গোলাম মাওলা শাহীন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু তাদের পরিবারের আর কেউই কখনো কোন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন না। শাহীনও চাননি- তার পরিবারের কেউ রাজনীতি করুক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার সঙ্গে কথা হয়। তখন তিনি বলেন- একটি জানাজা নামাজ শেষে তিনি বাসায় ফিরবেন। তবে রাত নয়টার দিকে যখন সংবাদ পাই তাকে পুলিশ আটক করেছে। তখন তার দেবর একেএম আমিনুল ইসলাম ঝিগাতলার বাসায় ভাত খাচ্ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি উঠে থানায় যান বড় ভাইকে দেখতে। আমিনুল ইসলাম একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকরি করেন। কিন্তু থানায় পৌছার পর পুলিশ তাকে আটক করে। যেটা তারা অনেক পরে জানতে পেরেছেন। ওইদিন রাতেই পুলিশের করা মামলায় তাকে ৩ নাম্বার আসামী করা হয়েছে। রাতে তাদের খালাতো ভাই রাজুকেও আটক করে পুলিশ। তবে সকালে বিভিন্ন কায়দা-কানুন করে বের হতে হয়েছে তাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।